রোগ প্রতিরোধে বেশি বেশি শীতকালীন সবজির উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধে বেশি বেশি শীতকালীন সবজির উপকারিতা

শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, মটরশুঁটি, ব্রকলি, শালগম, মুলা, পালংশাক, পেঁয়াজকলি, লাউ ইত্যাদি আমাদের শরীরের জন্য অধিক উপকারি। অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় শীতকালীন শাকসবজি অধিক পুষ্টিকর ও গুনাগুনে ভরপুর।

শীতে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন বাড়াতে সবুজ শাকসবজি আমাদের দেহে গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। এবং আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আজ আমরা শীতকালীন সবজির বিষয় নিয়ে কিছু গুরুপ্তপূর্ণ কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

শীতকালীন সবজির উপকারিতা

শীতকালীন সবজির মান অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় পুষ্টিকর ও গুনাগুনের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকে। কেননা আমাদের দেশে শীতকালীন ঋতুর আগমন ঘটলেই মানুষের শাকসবজির চাহিদার মান বৃদ্ধি পায়। এবং শীতকালীন সময়ে আমাদের দেশে নানা ধরণের শীতকালীন ফসল চাষ করা হয়। তার মধ্য অন্যতম হলো এই সবুজ শাকসবজি। শাকসবজি আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারি একটি খাদ্য। শাকসবজিতে নানা ধরনের ভিটামিন থাকে।

যা আমাদের দেহের ঘাটতি পুরনে সহয়তা করে। এছাড়াও শাক-সবজির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক এবং মানুষকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখে। শাক-সবজির আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান খাদ্যনালির ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করতে সক্ষম। অনেকেই হৃদ রোগ রক্তের কোলেস্টেরোল, ডায়াবেটিস, বা উচ্চ রক্তচাপের মতো প্রাণঘাতী সব রোগের ক্ষেত্রে শাকসবজি গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।

শীতকালীন সবজির উপকারিতা

শীতকালীন সবজির বৈশিষ্ট্য

শীতকালীন সবজি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব দূর করা সম্ভব। নিয়মিত শাকসবজি গ্রহণের ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি–এর উৎকৃষ্ট উৎস এই শাকসবজি। শাকসবজির নানা ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ঘাটতি পুরন করতে সাহায্য করে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ-

  • ফুলকপি।
  • বাধাকপি।
  • গাজর।
  • মটরশুঁটি।
  • টমেটো।
  • শিম
  • পালনশাক।

ফুলকপি আমাদের দেহে প্রোটিনের দিক থেকে সমৃদ্ধ। এছাড়া ফুলকপিতে রয়েছে আয়রন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, খনিজ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিনএ, বি ১, বি ২ ও ভিটামিন সি। এবং ফুলকপি আমাদের দেহের রক্ত তৈরিতে গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।

এবং বাধাকপিতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন। এছাড়াও গাজর অন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।মটরশুঁটিতে ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম থাকায় রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এবং টমেটো, শিম, পালনশাক আমাদের দেহের জন্য অধিক কার্যকরী উপাদান।

শাকসবজি শরীরের জন্য কতটা উপযোগী?

শাকসবজি আমাদের দেহের ভিটামিন ও নানা ধরনের পুষ্টির ঘাটতি পুরনে সাহায্য করে। বিশ্বের অনেক ব্যক্তিরা সবুজ শাকসবজিকে বেশি প্রাধান্য দেয়। যদি সেটা হয় শীতকালীন ফসল তাহলে তো কোন কথায় নেই। কারণ শীতকালীন সব্জির চাহিদা সর্বদা বেশি থাকে। কেননা শীতকালীন সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন। শীতকালীন সবজির দিক দিয়ে অন্যতম ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, মুলা, টমেটো, শিম, সহ আর নানা ধরনের ফসল।

আমাদের দেহের আমিষ, শর্করা, সুষম, ও ভিটামিনের ঘাটতি পুরনে শাকসবজি গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগের মোকাবিলা করতে শাকসবজি অন্যতম বাহক হিসেবে কাজ করে থাকে। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ও ক্যান্সার সহ নানা বড় বড় রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি শাকসবজি গ্রহণের মাধ্যমে। মাংস ছারাও আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিন পেতে পারি এই শাকসবজির মাধ্যমে।

শাক-সবজিতে ভিটামিনের উৎস

শাক-সবজিতে ভিটামিনের উৎস

বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিতে রয়েছে নানা ধরনের উপাদান। যদি সেটা হয় শীতকালীন ফসল তাহলে এটি আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে অনেক উপকারি। সাধারণত শীতকালীন সময়ে আমরা নানা রকমের সবজি দেখতে পারি। যা আমাদের শরীরে নানা উপাদানের উৎস হিসেবে কাজ করে। অন্যান্য ঋতুর তুলনায় শীতকালীন ফসল পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে।

শীতকালে এসব মৌসুমি শাক-সবজি বা ফল গ্রহণের মাধ্যমে সহজেই শরীরের চাহিদা মোতাবেক পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে ভিটামিন ও মিনারেলসের চাহিদা পূরণ সম্ভব। এছাড়াও নানা রকমের উপাদান রয়েছে যেমনঃ-

  • ভিটামিন এ।
  • ভিটামিন বি।
  • ভিটামিন সি।
  • ভিটামিন ডি।
  • ভিটামিন ই।
  • ভিটামিন কে।

ভিটামিন এ আমাদের চোখ, চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী। দুধ, গাজর, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আম, লালশাক, সব রকমের সবুজ শাকসবজি, কড লিভার অয়েল, যকৃত, পালংশাক, রঙিন শাকসবজি, পনির, ডিম, পেঁপে, মটরশুঁটি ইত্যাদিতে ভিটামিন এ উপস্থিত পাওয়া যায়।

ভিটামিন-বি হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে যেমন মাছ, যে কোনো রকমের সি ফুড, মাংস, শস্যদানা, ডিম, ডেইরি প্রডাক্ট এবং সবুজ শাকসবজি ইত্যাদিতে রয়েছে।ভিটামিন সি যেমন কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, কাঁচামরিচ, ফুলকপি, গাজর, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি। এবং ভিটামিন ডি, ই, ও কে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

শীতকালীন ফলমূল

শীতকালীন ফলমূল

শীতের মৌসুমে আমরা বিভিন্ন জাতের ফলমূল দেখতে পারি। আমরা সকলেই জানি সবজির সাথে ফলমূল আমাদের শরীরে গুরুপ্তপূর্ণ উপকারি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। শীতকালীন সময়ে উল্লেখযোগ্য ফলের মধ্যে রয়েছে বরই, কমলালেবু, জলপাই, আমলকি, আপেল, সফেদা, ডালিম ইত্যাদি। এছাড়াও কমলা, আপেল, আনার, বেদানা, আমলকি ইত্যাদি আমাদের শরীরে নানা উপকারি মাধ্যম। আমলকিকে ভিটামিন সির রাজা জিসেবে খ্যাত।

আপেল ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে। বেদানা বা আনারে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-সি। এছাড়াও অন্যান্য ফলে আমরা নানা ধরণের উপকারি মাধ্যম পেয়ে থাকি। বিভিন্ন রকমের ফল আমাদের শরীরে বিভন্ন উপায়ে কাজ করে থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণের ভিটামিনের ঘাটতি পুরনে সাহায্য করে। শীতকালীন সবজির সাথে ফলমূলের উপকারিতা অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

শীতকালীন সবজি আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারি। এটিতে আমরা নানা ধরনের ভিটামিনের উৎস পেয়ে থাকি। শাকসবজি আমাদের দেহের নানা রকমের রোগব্যাধি মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। আমাদের সকলের উচিত অন্যান্য খাবারের তুলনায় বেশি বেশি করে শাকসবজিকে প্রাধান্য দেওয়া। কেননা শাক সবজি আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে শীতকালীন সবজির ভূমিকা ও উপকারিতা