ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম, সুবিধা ও অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম, সুবিধা ও অসুবিধা

বিগত কয়েক বছরে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে, পরিবর্তন এসেছে লেনদেনের প্রক্রিয়াতেও। নগদ ক্যাশ দিয়ে লেনদেনের পরিবর্তে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রবণতা বেড়েছে। বর্তমানে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লাস্টিক মানি বা কার্ডের ব্যবহার। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক প্রায় ২২ লাখ ছাড়িয়েছে এবং প্রতি মাসে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে লেনদেন হচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

এই আর্টিকেলে ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম এবং এর বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ক্রেডিট কার্ড কি

ক্রেডিট কার্ড হলো ব্যাংক থেকে ইস্যুকৃত এক ধরনের প্লাস্টিক কার্ড। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি যাবতীয় পেমেন্ট করতে পারবেন। আপনি এই কার্ডের মাধ্যমে যে পেমেন্টগুলো করবেন, সেই পেমেন্টের টাকা ব্যাংক থেকে লোন হিসেবে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে অবশ্যই আপনাকে সেই লোন শোধ করে দিতে হবে। এটিই ক্রেডিট কার্ডের কাজ করার মূল প্রক্রিয়া।

অন্যান্য কার্ডের ক্ষেত্রে আপনাকে আপনাকে প্রথমে কার্ডে টাকা লোড করতে হয় এবং তারপরে আপনি যত টাকা লোড করেছেন সেই পরিমান ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে লোড করা টাকা না থাকলেও আপনি মন মতো খরচ করতে পারবেন। তবে এই পেছনে অবশ্যই অনেক শর্ত থাকে যেগুলো আর্টিকেলে আগে আলোচনা করা হবে।

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার

ক্রেডিট কার্ড কত প্রকার

আসলে ক্রেডিট কার্ড অনেক ধরণের হয়ে থাকে। আলাদা আলাদা ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাও আলাদা হয়। আপনি যখন ক্রেডিট কার্ড করতে যাবেন তখন আপনার সুবিধা মতো কার্ড নিতে পারবেন। চলুন বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেইঃ-

লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড কিঃ- যাদের মাসিক ইনকামের পরিমান ৩০ হাজার টাকার নিচে তারা লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন। লো ইনকাম ক্রেডিট কার্ডের অনেক ধরনের নিয়ম ও লিমিটেশন থাকে। এই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি ইচ্ছা মতো পেমেন্ট করতে পারবেন না। আপনাকে কি কি শর্ত দিবে এটা ক্রেডিট কার্ড বিতরনকারী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।

রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড কিঃ বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ডের মধ্যে রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড একটি। এই কার্ড ব্যবহার করে আপনি যদি প্রতি মাসে অনেক টাকা খরচ করেন তবে আপনি বিভিন্ন ধরনের রিওয়ার্ড পাবেন। রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড গুলোতে আপনার মাসিক ব্যয় এর উপরে কার্ডের সুবিধা নির্ভর করে। রিওয়ার্ডস ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিভিন্ন পরিমান পেমেন্টের জন্য আপনি অফার, ক্যাশব্যাক ও রিওয়ার্ডস পাবেন।

ক্যাশব্যাক ক্রেডিট কার্ড কিঃ- এই কার্ড দিয়ে আপনি যদি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান পেমেন্ট করেন তাহলে বিভিন্ন ক্যাশব্যাক অফার পাবেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ক্যাশব্যাক অফার গুলোর শর্ত থাকে, যেমন- ২০০০ টাকা দিয়ে Lotto ব্র্যান্ডের কোন প্রোডাক্ট কিনলে ১০% ক্যাশব্যাক। আমরা বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে যে ধরণের ক্যাশব্যাক অফার দেখে থাকি ক্রেডিট কার্ডের বেলায়ও বিষয়টা একই রকম।

ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড কিঃ- এই কার্ডের মাধ্যমে আপনি বিশ্বের মোটামুটি সব দেশে ইন্সট্যান্ট পেমেন্টের সুবিধা পেয়ে যাবেন। আপনি যদি ভ্রমণ ভালবাসেন এবং বিভিন্ন দেশে ভ্রমন করেন তাহলে ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য সুবিধাজনক কার্ড হবে।

সিকিউরড ক্রেডিট কার্ড কিঃ- এই ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে আপনার একটি স্থায়ী আমানত বা FD থাকতে হবে। সিকিওর্ড কার্ড মূলত তাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যাদের জিরো ক্রেডিট হিস্টরি বা কম ক্রেডিট স্কোরের কারণে ঋণ পেতে অসুবিধা হয়। সিকিওর্ড ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডিট লিমিট হল FD তে রাখা আমানতের সম্পূর্ণ পরিমাণ, অর্থাৎ আপনার FD অ্যাকাউন্টে যদি ৩ লক্ষ টাকা থাকে, আপনার কার্ডের লিমিট হবে ৩ লক্ষ টাকা।

শপিং ক্রেডিট কার্ড কিঃ- আপনি অনলাইন বা অফলাইনে শপিং করেন তাহলে শপিং ক্রেডিট কার্ড আপনাকে বাড়তি সুবিধা দিবে। আপনি বিভিন্ন শপিং মলে নির্দিষ্ট পরিমান ছাড়/অফার পেয়ে যাবেন।

এ ছাড়াও অনেক ধরণের ক্রেডিট কার্ড আছে, যেমন- ছাত্র ক্রেডিট কার্ড, ব্যবসায়িক ক্রেডিট কার্ড, প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি। আপনি যখন ক্রেডিট কার্ড নিবেন তখন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন।

ক্রেডিট কার্ড কি কি কাজে লাগে

ক্রেডিট কার্ড কি কি কাজে লাগে

আর্টিকেলের উপরের অংশে আমরা আলাদা আলাদা ধরনের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে জেনেছি। আসলে ক্রেডিট কার্ডের ধরন ও সুবিধা আলাদা হলেও সবগুলো ক্রেডিট কার্ড দিয়েই আপনি মূলত কিছু সাধারণ কাজ করতে পারবেন। সাধারণত যেসব কাজে ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়:-

পেমেন্ট করতেঃ- অনলাইনে হোক বা অফলাইনে, ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় পেমেন্ট করার জন্য। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খুব সহজেই পেমেন্ট করা যায়।

লোন নেয়ার কাজেঃ- ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি ইন্সট্যান্ট লোন নিতে পারবেন। যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে লোন নিতে গেলে অনেক পেপার ওয়ার্ক করে আবেদন করতে হয়। তারপরে আবেদন গ্রহণ হলে লোন পাওয়া যায়। তবে ক্রেডিট কার্ডের স্কোর ভালো থাকলে আপনি ১ সেকেন্ড এর মধ্যে লোন নিতে পারবেন।

অফার/ক্যাশব্যাক পেতেঃ- আপনি যদি শপিং প্রিয় মানুষ হন, প্রচুর পরিমানে যদি পেমেন্ট করতে হয় তাহলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করলে আপনি নির্দিষ্ট পরিমান ক্রেডিট স্কোরের উপরে ক্যাশব্যাক/রিওয়ার্ড পেয়ে যাবেন।

ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতেঃ- ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি খুব কম সময়ের মধ্যে যেকোনো স্থানে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করতে পারবেন। যদি আপনার একাউন্টে ব্যালেন্স না থাকে তাহলে লোন নিয়ে পাঠাতে পারবেন।

এ ছাড়াও ক্রেডিট কার্ড আরও অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়। আপনি যে কাজে ব্যবহার করবেন সেটার জন্য নির্দিষ্ট ধরনের ক্রেডিট কার্ড নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো

ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো

আপনি ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন কি পারবেন না সেটা নির্ভর করে ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র, মাসিক আয়/বেতন এবং অন্যান্য বিষয়ের উপরে। ব্যাংকভেদে ক্রেডিট কার্ডের জন্য ভিন্ন হলেও সাধারণ কিছু শর্ত থাকে, ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে আপনাকে সেই শর্ত গুলো মানতে হবে।

ব্যাংকভেদে শর্ত আলাদা হলেও কিছু সাধারণ যোগ্যতার মাপকাঠিতে যদি আপনি উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন, তাহলে যেকোনো ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনি যে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করবেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় থাকতে হবে। যদি আয় কম হয় তাহলে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে যেমনটা আগেই বলেছি প্রতিটি ব্যাংকের জন্য লিমিট নিয়ে আলাদা আলাদা নিয়ম রয়েছে।

তো আপনি একজন নতুন ব্যক্তি হিসেবে যখন ক্রেডিট কার্ড তৈরি করতে যাবেন, তখন আপনার কি কি ডকুমেন্টস লাগবে চলুন জেনে নেইঃ-

  • আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র
  • টিন সার্টিফিকেট
  • আপনি যদি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার এপয়েন্টমেন্ট লেটার (এপয়েন্টমেন্ট লেটার না থাকলে চাকরির স্যালারির ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে পারবেন)
  • আপনি যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স এবং আপনার তিন মাসের ব্যাংক ট্রানজেকশনের স্টেটমেন্ট।

এই ডকুমেন্ট গুলো ছাড়াও ব্যাংক ভেদে আলাদা আলাদা কাগজপত্র চাইতে পারে। ব্যাংকের চাহিদা মতো ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার পরে আপনি যদি ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্য হন তাহলে ক্রেডিট কার্ড পেয়ে যাবেন।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আপনাকে মেনে চলতে হবে। না হলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম না মানলে আপনার ক্রেডিট স্কোর কমে যাবে, ফি এবং সুদের পরিমান বাড়তে থাকবে। চলুন তাহলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম গুলো জেনে নেইঃ-

  • সবসময় নির্ধারিত সময়ের পূর্বে আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিল দিয়ে দিন। নির্ধারিত সময়ের পরে বিল দিলে অতিরিক্ত ফি দিতে হবে।
  • আপনার আয় অনুযায়ী পরিকল্পনা করে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা খরচ করবেন। যদি অতিরিক্ত খরচ করে ফেলেন তবে ঋণ বাড়তে থাকবে।
  • ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোথায় কত টাকা ব্যয় করছেন, সেটার কত ফি হচ্ছে এগুলো সবসময় লক্ষ্য রাখেন।
  • ক্রেডিট কার্ডের ধরণ অনুযায়ী আপনাকে যে শর্তগুলো দেয়া হয়েছিল সেগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে নয়ত জরিমানা দিতে হতে পারে, তাই শর্তগুলো ভালভাবে দেখে নিবেন।
  • ক্রেডিট কার্ডের বিভিন্ন ইনফরমেশন খুব সেনসিটিভ। প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন স্ক্যামিং ওয়েবসাইট আছে যেগুলো বিভিন্ন কারণে আপনার কার্ডের তথ্য চেয়ে বসতে পারে। এসকল ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে আপনার পিনকোডের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন।

এই সাধারণ বিষয়গুলো মাথায় রেখে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম গুলো মেনে চললে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে তেমন কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের যেমন সুবিধা আছে তেমনি অসুবিধাও আছে। ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানা উচিত। চলুন ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো জেনে নেইঃ-

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা

  • নগদ টাকা শেষ হয়ে গেলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি যেকোনো বিল পে করতে পারবেন।
  • ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কম সুদে বেশি টাকা পাওয়া যায়, আর আপনি ইচ্ছেমতো সেই টাকা খরচ করতে পারবেন। তবে পরে অবশ্যই শোধ করে দিতে হবে।
  • ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে বিভিন্ন সময় বিভিন্নরকমের অফার পাওয়া যায়। সেই অফার অনুযায়ী লেনদেন করলে অনেক টাকা বাঁচানো যায়।
  • ক্রেডিট কার্ডের দিয়ে লেনদেন করলে বিভিন্ন রিওয়ার্ড/ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়।
  • নগদ টাকা চুরি/ডাকাতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে গেলে মুহুর্তেই কার্ডটিকে ব্লক করে দেয়া যায়।
  • ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করা যায়।
  • জরুরী প্রয়োজনে নিজের কাছে নগদ টাকা না থাকলে ক্রেডিট কার্ডের লিমিটকে কাজে লাগিয়ে সে প্রয়োজন মেটানো যায়।
  • ক্রেডিট কার্ড দিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে, নিজের আসাবধানতা ব্যতীত অন্য কোনো কারণে জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটলে ক্রেডিট কার্ড কোম্পানী সে জালিয়াতির দায় বহন করে। গ্রাহককে কোন রকমের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না।
  • নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্রেডিট কার্ডের লিমিটকে একেবারেই বিনাসুদে ব্যবহার করা যায়।
  • ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে এবং সময়মতো কার্ডের বিল পেমেন্ট করলে ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারের ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়।

ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা

  • মানুষের খরচ করার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
  • সঠিক সময়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে পরবর্তীতে মোটা অংকের সুদ প্রদান করতে হয়।
  • একজন ক্রেডিট কার্ডের মালিককে বাৎসরিক একটি চার্জ প্রদান করতে হয়, এমনকি কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন না করলেও।
  • ক্রেডিট কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে সরাসরি অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকা চার্জ করে।
  • সাধারণ লোনের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের ইন্টারেস্ট রেট অনেক বেশি। যদি কোনো ইউজার সময় মতো অর্থ পরিশোধ করতে না পারে তবে তাকে তুলনামূলক অনেক বেশি ইন্টারেস্ট দিতে হয়।
  • বেশিরভাগ সময় ক্রেডিট কার্ডের কিছু হিডেন ফি এবং কন্ডিশন থাকে যা ব্যাংক কাস্টমারকে পরিষ্কার ভাবে জানাতে চায় না। যেমন: প্রসেসিং ফি, ইন্সুরেন্স ফি, জিএসটি চার্জ, এনুয়াল ফি, ফরেইন ট্রান্জেকশন চার্জ, লেইট পেমেন্ট ফি, ক্যাশ উইথড্রয়াল ফি, ব্যালেন্স ট্রান্সফার ফি, এসএমএস ফি, পেপার স্টেটম্যান্ট ফি, ভ্যাট ইত্যাদি।
  • সঠিক সময়ে লোন পরিশোধ না করলে ক্রেডিট স্কোর কমে যায়। ভবিষ্যতে অন্য লোন নিতে গেলে ইউজার কে ডিফল্টার হিসেবে দেখিয়ে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা করতে পারে।

কমন প্রশ্ন ও উত্তর

ক্রেডিট কার্ড থেকে কি টাকা উত্তোলন করা যায়?

ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে যেমন এটিএম থেকে টাকা তোলা যায়,  একইভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেও এটিএম থেকে টাকা তোলা যায়।

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বন্ধ করা যায়?

ব্যাংক বা কাস্টমার কেয়ারে কল করে কথা বলে বন্ধ করতে পারেন। তবে কিছু কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড তাদের অ্যাপ থেকেও বন্ধ করা যায়।

কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো?

এই বিষয় পুরোপুরি আপনার ব্যবহারবিধির উপর নির্ভর করবে। যে ব্যাংকের শর্ত আপনার পছন্দ হবে সেই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য ভালো হবে।

ব্যাংক কিসের উপর ভিত্তি করে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে?

আপনার আয় ও পেশার উপরে ভিত্তি করে। বাংলাদেশে সাধারণত ৩০ হাজার টাকা বেতন হলেই ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন।

ক্রেডিট কার্ডের লিমিট কত টাকা?

সাধারণত মাসিক বেতনের ৪গুণ পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের লিমিট দেওয়া হয়। তবে ক্রেডিট লিমিটের ৩০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।

শেষকথা

আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনি ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে যাবতীয় বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে অবশ্যই আমাদের সাথে থাকবেন। আর আপনার মনে যদি ক্রেডিট কার্ড কি? বা এই সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকে তা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *