online-money-earning

ঘরে বসে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সেরা ৫টি উপায় (পর্ব ১)

ইন্টারনেট হল অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সোনার খনি। বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে অনলাইনে টাকা ইনকাম করা বেশ সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ কোনো দক্ষতা না থাকলেও অনেকে বাড়িতে বসে অনলাইনে মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছেন।

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার নানা সুযোগ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার মুখে পড়তে হয়। তাই এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজের ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সবসময় সরিয়ে রাখতে হবে। অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে যেগুলোকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে বেশ ভালো টাকা ইনকাম করা যায়।

আমি কি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারব?

অবশ্যই, আপনি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন। অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার অনেক প্ল্যাটফর্ম বা ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি খুব সহজেই টাকা উপার্জন করতে পারবেন। আপনার যদি কোনো ডিগ্রি বা দক্ষতা কিছুই না থাকে তারপরেও আপনি অনলাইন থেকে ভালো একটা অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম _ wirebd.com

প্রকৃতপক্ষে, অনলাইনে অর্থ উপার্জন কিছু অতিরিক্ত আয়। এমনকি বর্তমান সময়ে এটি জীবিকা অর্জনের একটি জনপ্রিয় উপায়। একটি রিপোর্ট অনুসারে, আনুমানিক ৬ জন আমেরিকানের মধ্যে ১ জন আমেরিকান অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করেন।

অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার শীর্ষ ৫টি উপায়

বর্তমান যুগ হলো তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তির এই প্রসারের দিনে, মানুষ ধীরে ধীরে অফলাইনে চাকুরির বদলে অনলাইনে কাজের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। বর্তমানে পুরো পৃথিবীতেই অনলাইনে কাজ বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে! সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ অনলাইনে কাজ করে নিজেদের জীবিকা উপার্জন করছেন।

অনলাইন জগতে ক্যারিয়ার বানানো, অফলাইনের চেয়ে কিছুটা সহজ হওয়ায় তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের এই সেক্টরের প্রতি আগ্রহ বেশি। যারা নতুন নতুন অনলাইনে কাজ করতে আসে তারা প্রায়ই কনফিউশনে পড়ে যায় যে, কোন কোন কাজ শেখা দরকার অথবা তার কোন কোন স্কিল ডেভেলপ করা প্রয়োজন। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, নতুন যারা নবীন-তরুণ আছেন অনলাইনের মাধ্যেমে টাকা ইনকাম করার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। চলুন আজকে আমরা আলোচনা করবো, অনলাইন থেকে আয় করার শীর্ষ ৫টি উপায় সম্পর্কে-

ফ্রিল্যান্সিং

বর্তমানে অনলাইনে ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থই হচ্ছে মুক্ত পেশা। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির আদেশ অনুযায়ী কারো কাজ না করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। মূলত যারা এ ধরনের কাজ করে থাকে তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।

ফ্রিল্যান্সিং _ wirebd.com

ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে এখন সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ, এমনকি আমাদের বাংলাদেশের মানুষেরাও প্রতিমাসে ঘরে বসেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন। আপনিও যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করতে চান তাহলে, সর্বপ্রথম আপনাকে যেকোনো একটি সেক্টর বা ক্যাটাগরির কাজকে খুবই ভালো করে শিখতে হবে। ধরুন, আপনার কাজ শেখা শেষ এবং আপনি ওই কাজে মোটামোটি এক্সপার্ট হয়ে গেছেন। এখন আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্টদেরকে ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

বর্তমানে মার্কেটের জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং স্কিল হলো- এসইও, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি। এখন এগুলোর মধ্যে থেকে আপনি যদি যেকোনো একটাতে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে মার্কেটপ্লেসে আপনার কাজের অভাব হবে না।

কতগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো ফ্রিল্যান্সারদের কাজের সুযোগ দেয়। সেই ওয়েবসাইটগুলোতে নিজের একটি অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে নিজের কাজের দক্ষতার বিবরণ জানাতে হয়, যাতে ক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এসব সাইটের মধ্যে ফাইবার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকমওয়ার্কএনহায়ার ডটকমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়। ঘণ্টায় ৫-১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায় এসব ওয়েবসাইট থেকে। এসব অর্থ বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট ব্যবহার করে আনা যায়।

ব্লগিং

আপনাদের যাদের লেখালেখি করার অভ্যাস রয়েছে, যারা আর্টিকেল রাইটিং করতে পারেন, তারা চাইলে অনলাইনে ব্লগিং সেক্টরে নিজের ক্যারিয়ার দাঁড় করানোর পাশাপাশি এখান থেকে ভালো একটা আয়ও করতে পারবেন। দুই উপায়ে ব্লগ থকে আয় করা যায়। একটি হচ্ছে নিজের ব্লগ সাইট তৈরি করে।

ব্লগিং _ wirebd.com

ব্লগিংয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে, আপনাকে ওয়ার্ড প্রেস কিংবা কোনো সিএমএসের মাধ্যমে ব্লগ সাইট ডিজাইন ও ডেভেলপ করা শিখতে হবে, এরপর ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত শিখতে হবে, সর্বশেষ এসইও সম্পর্কেও মোটামোটি শিখতে হবে। আপনি যদি এগুলো খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়াই আপনি নিজেই আপনার একটি ব্লগ সাইট দাঁড় ক্রাতে পারবেন।

আপনার যদি সফল কোনো ব্লগসাইট হয় তাহলে আপনি সেখান থেকেই বিভিন্ন মেথডে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। ব্লগ সাইট থেকে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো, অ্যাড মনিটাইজেশন। ব্লগিং করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- ব্লগিংয়ে আপনাকে কারও অধীনস্ত কর্মচারী হয়ে কোনো প্রকার কাজ করতে হবে না। আপনার যখন ইচ্ছা হবে আপনি তখন এই কাজটা করতে পারবেন।

ইউটিউবিং

আপনি যদি নিজের বস নিজেই হতে চান, তাহলে ইউটিউবিং করা এটাও আপনার জন্য একটা বেস্ট অপশন হতে পারে। আপনি যদি ব্লগ লিখে আয় করতে স্বচ্ছন্দ নন, তাহলে ক্যামেরার সাহায্য নিয়ে ভিডিও বানিয়ে সেখান থেকে আয় করতে পারেন।

ইউটিউবিং _ wirebd.com

ইউটিউবের ক্ষেত্রেও আপনি নিজের মনমতো ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে, নিজের ইচ্ছেমতো পাব্লিশ করতে পারবেন, এখানে আপনাকে কারোও কোনো আদেশের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে না। এর জন্য আপনাকে সৃজনশীল ও ভালো সম্পাদনা জানতে হবে।

ইউটিউব ভিডিয়োর জন্য এই ধরনের কন্টেন্ট ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন কিছু ক্যাটাগরি রয়েছে। আপনি যখন ইউটিউবিং করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, তখন আপনি মন চাইলে ফেসবুকেও ভিডিয়ো কন্টেন্ট বানিয়ে সেখান থেকেও আয় করতে পারবেন। ফেসবুকের ভিডিয়োকেও মনিটাইজেশনের মাধ্যমে ইউটিউবের মতো আয় করা যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অর্থ হচ্ছে, অন্য কোনো কোম্পানি কিংবা ব্যবসাকে বা ব্র্যান্ডকে আপনার নিজের অডিয়েন্সের কাছে প্রোমোট করে, তাদের সেলস বা লিড জেনারেট করে দিয়ে, এর বদলে কোম্পানি বা ব্যবসা কিংবা ব্র্যান্ড থেকে নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ কমিশন নেওয়া।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং _ wirebd.com

আপনার যদি নিজস্ব কোনো পপুলার ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করাটা আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যায়। কারণ, অন্য মেথডের চেয়ে যেমন ব্লগে ও ইউটিউবে মনিটাইজেশন হতে যা ইনকাম আসে, এর চেয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে অনেক বেশি রেভেনিউ পাওয়া যায়।

এছাড়াও আপনি আপনার অ্যাক্টিভ ফেসবুক প্রোফাইল, ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সহ অন্যান্য স্যোশাল মিডিয়ার মতো বড়ো অডিয়েন্স তৈরির মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টর থেকে ভালো টাকা আয় করতে সক্ষম হবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ডিজাইনও হতে পারে ভালো একটি উপায়।এই গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আপনি খুব সহজেই ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে নিজের আয়ের আরেকটা উৎস তৈরি করতে পারবেন। তবে আপনি যদি একজন দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে চান তাহলে আপনাকে অনেক টুলস সম্পর্কে জানতে হবে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন _ wirebd.com

Adobe Photoshop: গ্রাফিক্স ডিজাইনের জগতে Adobe Photoshop একটি পরিচিত সফটওয়্যার। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রতিটি ধাপেই আপনাকে এই ফটোশপ ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ ধরুন আপনার পুরনো একটি ছবির রং পরিবর্তন করতে হবে, এক্ষেত্রে আপনি photoshop এর মাধ্যমে খুব সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন।

Adobe Illustrator: Adobe সফটওয়্যারের আরেকটি জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার হল এই- Adobe Illustrator. Adobe Illustrator এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের কার্ড যেমন- ভিজিটিং কার্ড, ইনভাইটেশন কার্ড, বিজনেস কার্ড, ব্যানার সহ ইত্যাদি ডিজাইন করতে পারবেন।

 

যদি আপনি মনে করেন অনলাইনে অর্থ উপার্জন করা শুধুই স্বপ্ন, তা নয়। আপনি অনলাইন থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার জন্য আপনাকে একটি অনলাইনে উপস্থিত করতে হবে এবং নিজেকে বাজারজাত করতে হবে।

 

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? কেন, এবং কিভাবে করবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন এবং কিভাবে করবেন

সিপিএ মার্কেটিং কি? কীভাবে সিপিএ মার্কেটিং শুরু করবেন?