রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ গাইড । রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান ও সংক্ষিপ্ত পরিচয়

রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ গাইড । রাঙ্গামাটি সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আঁকাবাঁকা রাস্তা, পাহাড় ও লেকের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা রাঙ্গামাটি জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ পুর্বাঞ্চলে অবস্থিত। পাহাড়ের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা সবুজ রূপ বৈচিত্রের শ্যামলভূমি রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান গুলো দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মনে দোলা দেয় প্রতিটি মুহূর্তে। যার টানে পর্যটকরা আবারও ফিরে আসে প্রাকৃতিক নৈসর্গের লীলাভূমি এ রাঙামাটি জেলায়।

রাঙ্গামাটি জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

রাঙ্গামাটি জেলার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা গুলোর মধ্যে একটি, এবং আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা। দশটি ভাষাভাষীর ও এগারোটি জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক কৃষ্টি এবং প্রকৃতির অপার সৃষ্টি এই জেলা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

প্রাচীনকালে এ জেলায় প্রচুর পরিমাণ কার্পাস তুলা পাওয়া যেতো, যার নামানুসারে কার্পাসমহলই ছিল এ জেলার প্রাচীন নাম। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে, ১৯৮৫ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথাগত রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রয়েছে চাকমা সার্কেল চীফ।

বর্তমানে এই জেলা প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র খ্যাতি পেয়েছে রুপের রানী হিসেবে। লেক বিশিষ্ট্য এ জেলায় বাঙালি সহ প্রায় ১৪ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

আয়তন, অবস্থান ও জনসংখ্যা

রাঙ্গামাটি দেশের সবচেয়ে বড় একটি জেলা। এর আয়তন ৬১১৬.১১ বর্গ কিলোমিটার। রাঙ্গামাটি জেলার অবস্থান, ২২°২৭´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং সীমানা উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে বান্দরবান জেলা, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য ও মায়ানমারের চিন প্রদেশ, পশ্চিমে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা।

এ জেলার মোট জনসংখ্যা ৫৯৫৯৭৯ জন। এর মধ্য পুরুষ ৩১৩০৭৬, মহিলা ২৮২৯০৩ জন। মুসলিম ২০৯৪৬৫, হিন্দু ৩০২৪৪, বৌদ্ধ ৩৪৭০৩৮, খ্রিস্টান ৮৬৬৩ এবং অন্যান্য ৫৬৯ জন। চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, চাক, খুমি, খিয়াং, লুসাই, ম্রো, মুরং, পাংখোয়া, সাঁওতাল, মণিপুরী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে বৃহত্তর এই জেলায়।

রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান

ঋতুর পালা বদলে হেমন্তের পরেই আসে শীতকাল। শীতকালকে বলা হয় পাহাড় ভ্রমণের আদর্শ সময়। এ সময়ে রাঙ্গামাটি জেলায় হাজার হাজার পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। ১০টি ভাষাভাষীর ১১টি জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক কৃষ্টির সংস্পর্শে আসতে হলে আপনাকে শীত মৌসুমেই আসতে হবে এখানে।

রাঙ্গামাটি জেলায় বেড়াতে আসলে হাতে অন্ততঃ দুই দিন সময় নিয়ে আসবেন। তা না হলে ভ্রমন অপূর্ণ রাখার যন্ত্রণা নিয়েই কিন্তু ফিরতে হবে। চলুন জেনে নেই রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান কি কি ও তাদের বিস্তারিত বর্ণনা।

রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান

 ঝুলন্ত ব্রিজ

রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে পর্যটকদের প্রধান ও মূল আকর্ষণ হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ। অপরূপ নয়নাভিরাম বহুরঙা এই ঝুলন্ত সেতুটি দুইটি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে হৃদ্দিক সম্পর্ক। ঝুলন্ত ব্রিজ পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি আপনাকে এনে দেবে ভিন্ন দ্যোতনা। এখানে দাঁড়িয়েই কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন। কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য। ওপারেই রয়েছে আদিবাসী গ্রাম। ইচ্ছে হলেই দেখতে পাবেন আদিবাসী জীবনযাপনের ক্ষয়িষ্ণু চালচিত্র।

কিভাবে যাবেন

রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ি হয়ে সড়ক পথে সরাসরি ‘পর্যটন কমপ্লেক্সে’ যাওয়া যায়। এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। যারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সার্ভিস বাসে করে আসবেন তাদের তবলছড়িতে নেমে অটোরিক্সা বা সিএনজি রিজার্ভ করে যেতে হবে। এক্ষেত্রে জন প্রতি ভাড়া পড়বে ১০০-১২০ টাকা।

শুভলং ঝর্ণা

শুভলং ঝর্ণা

শুভলং ঝর্ণা রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলায় অবস্থিত। এই ঝর্ণার নির্মল জলধারা পর্যটকদের হৃদয়ে ভিন্ন এক অনুভূতির কাপন তোলে। বর্ষা মৌসুমে শুভলং ঝর্ণার জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ে এবং অপূর্ব সুরের মূর্ছনায় পর্যটকদের মুগ্ধ করে। জলপথে পাহাড়ের বুক চিরে আঁকা-বাঁকা চলার পথে যাওয়ার সময় রাঙ্গামাটির অপার সৌন্দর্য চোখে পড়বে।

পাহাড় প্রেমি পর্যটকরা পাহাড় দেখার জন্য যেতে পারেন শুভলং স্পটে। পাহাড় ও হ্রদের নিবিড় নৈকট্যে আপনার মনেও সৃষ্টি করতে পারে ভিন্ন এক প্রশান্তির অনুভূতি। কিন্তু একটাই র্দূভাগ্য শীত মৌসুমে ঘুমিয়ে থাকে এখানকার পাহাড়ি ঝর্ণাগুলো।  শুভলং এর পাহাড়ের উপরে উঠে রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পারেন।

কিভাবে যাবেন

রাঙ্গামাটি শহর থেকে শুভলং যেতে হলে নৌ পথে যেতে হয়। ট্রলার বা নৌকা রিজার্ভ করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার এলাকা থেকে ট্রলারবা নৌকা রিজার্ভ করা যায়। এগুলোর ভাড়া আকার অনুযায়ী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ভাড়া ১২০০-৩০০০ টাকার মধ্যে। মূল শহর থেকে শুভলং যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মত। শুভলং যেতে হয় কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে। আপনি চাইলে সারা দিনের জন্য নৌকা বা ট্রলার রিজার্ভ করে নিতে পারেন।

মুন্সি আব্দুল রউফের সমাধি

মুন্সি আব্দুল রউফের সমাধি

রাঙ্গামাটি শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে নৌ পথে ১৫ কিলোমিটার দূরে স্বচ্ছ জ্বলরাশি দ্বারা বেশিষ্ট ছোট দ্বীপ বুড়িঘাট এলাকার চিংড়িখালে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি। এর চারদিকের প্রকৃতিক পরিবেশ পর্যটকদের বিমোহিত করে। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে দূর দূরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী মুক্তিযুদ্ধের মহান এই নায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এছাড়াও সমাধি স্থলে যাওয়ার পথে নানিয়ারচরের আনারস বাগান, কাপ্তাই লেকে দল বেঁধে চলা ইঞ্জিন চালিত নৌকা এবং চার পাশের অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য সকলকে মুগ্ধ করবে। (wiki)

কিভাবে যাবেন

রাঙ্গামাটি শহর থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে জেটিঘাট এসে ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ট্রলারে করে সমাধিস্থলে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ১০০-১৫০ টাকা। তাছাড়া খাগড়াছড়ি হয়েও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধিস্থলে যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি পৌছে নানিয়ারচর হয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকা রিজার্ভ নিয়ে সমাধিস্থলে যাওয়া যায়। নানিয়ারচরের ঘাট থেকে সমাধিস্থল যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টার মত সময় লাগে।

কাপ্তাই লেক

কাপ্তাই লেক

কাপ্তাই লেক বাংলাদেশে, এমনকি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মনুষ্য সৃষ্ট স্বাদুপানির হ্রদ। প্রধানত জলবিদ্যুৎ  উৎপাদনের জন্য এর সৃষ্টি হলেও, এ জলাধারে প্রচুর পরিমাণে মিঠাপানির মাছ চাষ হয়। নৌবিহার, বন্যা  নিয়ন্ত্রণ ও কৃষি আবাদ ইত্যাদিতেও এর অবদান উল্লেখযোগ্য।

কাপ্তাই হ্রদ মূলত কর্ণফুলী হ্রদের আঞ্চলিক নাম। ২৫৬ বর্গমাইল আয়তনের দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই কৃত্রিম হ্রদ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। উঁচু-নিচু পাহাড়-পর্বত, পাহাড়ি ঝরনাধারা, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা, অথৈ পানি আর সবুজের সমারোহ, গাঢ়-সবুজ বন, গাছ-গাছালি ফুল-ফল আর উপজাতিদের জীবনধারা কাপ্তাই লেকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

শীতল পানি আর অসাধারন চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে হাউজবোটে করে ঘুরতে পারেন কাপ্তাই লেক। উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাইয়ের নীলাভ পানি আর সবুজে ঘেরা পাহাড়। এছাড়াও কায়াকিং করার সুযোগ পাবেন হাউজবোট গুলোতে। কাপ্তাই লেকে ঘুরতে গেলে শুভলং জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ব্রিজ, পলয়েল পার্ক দেখার সুযোগ পাবেন।

কিভাবে যাবেন

রাঙ্গামাটি জেলায় আপনি বিভিন্ন ভাবে পৌঁছাতে পারেন। রাঙ্গামাটির দিকে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে হানিফ, ইউনিক, সাউদিয়া, এস আলম, শ্যামলী ইত্যাদি। প্রায় ৬০০ টাকা ভাড়ায় ৭ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টায় আপনি ঢাকা থেকে রাঙ্গামাটিতে পৌঁছে যাবেন।

রাঙ্গামাটি শহর থেকে কাপ্তাই লেক এর দূরত্ব প্রায় ৮.২ কিলোমিটার। জেলা সদর থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি যোগে কাপ্তাই লেক এ যেতে সময় লাগে ২৫ মিনিট। এক্ষেত্রে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৫০-৬০ টাকা।

আরণ্যক রিসোর্ট

আরণ্যক রিসোর্ট

সেনাবাহিনী কতৃক নির্মিত হলেও এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। লেক আর পাহাড়ের অপরূপ সন্ময়ে গড়ে ওঠা এই রিসোর্ট পর্যটকদের ভিন্ন বিনোদন মাধ্যম। কাপ্তাই হ্রদে ঘেরা শান্ত ও ছিমছাম পরিবেশের আরণ্যক রিসোর্টটি সুনিপন ভাবে ছবির মতো সাজানো গোছানো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কতৃক পরিচালিত এই রিসোর্টে রয়েছে ছোটদের জন্য বিভিন্ন রাইড, হ্যাপি আইল্যান্ড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, পেডেল বোট, সুইমিং পুল, রেস্টুরেন্ট এবং খেলাধুলার ব্যবস্থা।

কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে সবুজ ঘাসে মোড়ানো আরণ্যক রিসোর্টে প্রথম অংশে রয়েছে ফুলের বাগান ও নানান ভাস্কর্য। রিসোর্ট রুম বুকিং ছাড়াও আপনি চাইলে আরণ্যক রিসোর্ট এর সবকিছু ঘুরে দেখতে পারবেন। এজন্যে আপনাকে টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে। টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। এছাড়াও আরণ্যক রিসোর্টে ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, হ্যাপি আইল্যান্ড, লেকভিউ সুইমিং পুল রয়েছে।

কিভাবে যাবেন

আপনি দেশের যেকোন প্রান্ত থেকেই আরণ্যক রিসোর্টে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথমে আপনাকে রাঙ্গামাটী জেলায় আসতে হবে। রাঙ্গামাটি মেইন শহরে গিয়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই আরণ্যক রিসোর্ট দেখিয়ে দিবে। মেইন রোড থেকে পায়ে হেটে রিসোর্টে যেতে সময় লাগে ১০-১৫ মিনিট। এছাড়া রিসোর্টে যেতে সিএনজি বা রিকশা ভাড়া করতে পারেন।

পলওয়েল পার্ক

পলওয়েল পার্ক

রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পলওয়েল পার্ক। বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী নির্মিত পলওয়েল পার্ক ইদানীং ব্যাপক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে ও চিত্তবিনোদনের জন্য প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীর পদচারণায় পলওয়েল পার্ক মুখোরিত হয়ে উঠে।

পলওয়েল পার্কের প্রবেশ পথ তৈরি করা হয়েছে মুখোশের আদলে। প্রবেশ পথের পাশেই ভিন্ন আরেকটি মুখোশ আকৃতির টিকেট কাউন্টার রয়েছে। পলওয়েল পার্কে রয়েছে হানি সুইং, মিনি ট্রেন, প্যাডেল বোট, সহ আকর্ষণীয় ভুতুড়ে পাহাড়ের গুহা, পাহাড়ী কৃত্রিম ঝর্ণা ও কলসি ঝর্ণা, ক্রোকোডাইল ব্রিজ, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি শিল্প, লেকভিউ পয়েন্ট, হিলভিউ পয়েন্ট, লাভ লক পয়েন্ট, মিনি চিড়িয়াখানা ও পলওয়েল কটেজ। এই পার্কে পিকনিক সহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ রয়েছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ড থেকে রাঙ্গামাটিগামী অসংখ্য বাস কাউন্টার রয়েছে। ঢাকা টু রাঙ্গামাটি শ্যামলীর এসি বাসের প্রতি সীটের ভাড়া ৯০০ টাকা, বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া ৭০০ টাকা। আর অন্যান্য নন-এসি বাসের ভাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। রাঙ্গামাটি রিজার্ভ বাজার থেকে মাত্র ১.৫ কিলোমিটার দূরে ডিসি বাংলা রোডে অবস্থিত পলওয়েল পার্কে যেতে ৫০ টাকা সিএনজি ভাড়া লাগে।

সাজেক ভ্যালি

সাজেক ভ্যালি

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমন গন্তব্য হচ্ছে সাজেক ভ্যালি। ভ্রমন পিপাসু মানুষেরা সাজেক ভ্যালিকে ভূস্বর্গ নামে অভিহিত করেন। চারপাশে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো বিস্তৃন পাহাড়ের সাড়ি, আর তুলর মতো মেঘ, এর মধ্যই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সাজেক ভ্যালি। এখানে প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় প্রকৃতি তার রুপ পালটায়।

সাজেক ভ্যালির নাম শুনলেই যেন চোখের সামনে ভেসে আসে সকালের মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়ানো, সবুজ পাহাড়ের হাতছানি দিয়ে ডাকা। সাজেক মানে  সবুজ আর অক্সিজেনের রাজ্য। পাহাড়ের রানী খ্যাত সাজেককে বিভিন্ন উপাদির রঙ্গে সজ্জিত করালেও বোধ সাজানো শেষ হবে না।

কিভাবে যাবেন

সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা হয়ে সাজেকে যাতায়াত অনেক সহজ। তাই সর্বপ্রথমে আপনাকে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্তর থেকে জীপ বা চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসতে পারেন। যাওয়া আসা সহ দুই দিনের জন্য ভাড়া নিবে ৯০০০-১২০০০ টাকা। একটি জীপ গাড়িতে এক সাথে ১০-১৫ জন যেতে পারবেন।

রাঙ্গামাটির কোথায় কিভাবে থাকবেন

রাঙ্গামাটির কোথায় কিভাবে থাকবেন

থাকার জন্য রাঙ্গামাটি জেলায় রয়েছে বিভিন্ন ছোট বড় হোটেল ও কটেজ। বনরূপা, দোয়েল চত্বর, তবলছড়ি ও রিজার্ভ বাজারে এসব হোটেল পেয়ে যাবেন। যাওয়ার আগে বুকিং বা যাওয়ার পরে সরাসরিও এসব হোটেলে উঠতে পারেন। সাপ্তাহিক বা সরকারি ছুটির দিনে ভ্রমণের আগে নিজের পছন্দ অনুযায়ী অবশ্যই বুকিং নিশ্চিত করুন। কারণ বাড়তি পর্যটকের চাপে পছন্দের রুম না পেলে আনন্দ ভ্রমণে বিষাদের ছাপ নেমে আসতে পারে।

শেষ কথা

তো বন্ধুরা আপনারা জানতে চেয়েছিলেন রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় সম্পর্কে। আমরা এই আর্টিকেলে যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি আপনাদের বিস্তারিত জানানো। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্টে মতামত জানাতে পারেন। রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে তথ্য বহুল মনে হয়, তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আরও পড়ুনঃ- সেন্টমার্টিন দ্বীপ । সেন্টমার্টিন দ্বীপের দর্শনীয় স্থান ও হোটেল ভাড়া

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ গাইড ২০২৪