মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি? মুখের ক্যান্সারের প্রকারভেদ ও চিকিৎসা।

মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি? মুখের ক্যান্সারের প্রকারভেদ

মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ নানা অবস্থাতে বোঝা যায়। শরীরে যে কয়টি ক্যান্সার হয় তার মধ্যে মুখের ক্যান্সার অন্যতম। বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সারের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। মুখের ক্যান্সার সাধারানত ঠোঁট, মাড়ি, জিহ্বা, গালের ভিতরের আবরন, মুখের ছাদ ও মেঝে, এবং লালা গ্রন্থিতে হয়ে থাকে। ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।

ক্যান্সার একটি মারাক্তক রোগ। এই রোগটি যেকোনো সময়ে আমাদের জীবনে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে আমরা কিভাবে ক্যান্সারের লক্ষণ বুঝবো? তাহলে আসুন আজ সেটি সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ

মুখের ক্যান্সার একটি জটিল রোগ। বর্তমান সময়ে এসে এই রোগটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সতর্কতা অবলম্বনে রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। মুখের ক্যান্সার ঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব। মুখের ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা আমাদের দেশেই রয়েছে। চিকিৎসকের মতে মুখের ক্যান্সারের লক্ষন বোঝার জন্য কিছু উপায় রয়েছে।

মুখে যদি কোন ঘা হয় সেটি যদি দীর্ঘদিন স্থায়ি থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। কেননা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহনে আমরা ক্যান্সার হতে রক্ষা পেতে পারি। তবে মুখের ক্যান্সার বোঝার ক্ষেত্রে অনেক উপায় রয়েছে তার মধ্য উল্লেখযোগ্য হলো:-

  • কোন ক্ষত হয়েছে যা শুকাতে চাচ্ছে না।
  • মুখের ভিততে কথাও লাল বা সাদা দাগ দেখা দিচ্ছে।
  • মুখ ফুলে উঠছে।
  • ব্যাথা করছে।
  • খাবার গিলতে সমস্যা হচ্ছে।

এই ধরনের যে কোনও লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফেলতে হবে। কারণ দ্রুত চিকিৎসা নিলে এ থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব।

মুখের ক্যান্সারের প্রকারগুলি

মুখের ক্যান্সারের প্রকারগুলি

মুখের ক্যান্সার আঁকারে অনেক ছোট হয়ে থাকে। যার ফলে আমরা সহজেই বুঝতে পারি না। বরং এটিকে বোঝার জন্য কিছু গুরুপ্তপূর্ণ টিপস রয়েছে। যা আমাদের মুখের ক্যান্সারের সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেয়। মুখের ক্যান্সার নানা প্রকার হয়ে থাকে। তবে আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে ক্যান্সার আসলে কি? কিভাবে এটি বোঝা সম্ভব। আসুন সেটির সম্পর্কে আমরা জানি…

স্কোয়ামাস সেল “কার্সিনোমা”

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা অর্থ গলা এবং মুখের মধ্যে রেখাযুক্ত কিছু স্কোয়ামাস কোষ অস্বাভাবিক। ফলে দেখা যায় আমাদের মুখের যেকোনো অঙ্গ অকেজ হয়ে যাচ্ছে। ফলে মুখের যেকোনো রোগ দীর্ঘদিন স্থায়ি থাকছে। এবং যার ফলে মুখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।

মারাত্মক কার্সিনোমা

মারাত্মক কার্সিনোমা এটি স্কোমাস সেলগুলির ক্যান্সারের ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। এবং এটি উত্সস্থলের আশেপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে যেতে পারে।

মাইনর লালা গ্রন্থি কার্সিনোমাস

মাইনর লালা গ্রন্থি কার্সিনোমাস এর মধ্যে মুখের ও গলার আস্তরণ জুড়ে পাওয়া যায়। এমন কিছু ধরণের লালা গ্রন্থিগুলিতে বিকাশ ঘটাতে পারে এমন বিভিন্ন ধরণের মুখের ক্যান্সার রয়েছে। তার মধ্যে মাইনর লালা গ্রন্থি কার্সিনোমাস অন্যতম।

লিম্ফোমাস টিস্যু

লিম্ফোমাস লিম্ফ টিস্যুতে সংঘটিত মুখের ক্যান্সারগুলি লিম্ফোমাস হিসাবে পরিচিত। এটি আমাদের দেহে রক্তের কোষকে লিম্ফোসাইট বলে প্রভাবিত করে। লিম্ফোসাইট হল এক ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা যা সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করে।

মুখের ক্যান্সারের কারণগুলি

মুখের ক্যান্সার নানা কারণে হয়ে থাকে। আমাদের জানা অজানা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে এটি হয়ে থাকে। যা আমাদের ভবিষ্যতে কাল হয়ে দ্বারায়। তবে আমরা যেকোনো রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি। সুধু মাত্র আমাদের সতর্কতা অবলম্বনে। যেকোনো অবস্থায় মুখের ঘা, মুখ ফোলা সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের মুখে যদি সেটি দীর্ঘদিন স্থায়ি থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারানত মুখের ক্যান্সারের কারণ সমূহ হলোঃ-

  • ধূমপান ও তামাক সমুহ চিবানো।
  • অ্যালকোহল অত্যধিক গ্রহণ।
  • সূর্যের দীর্ঘায়িত প্রকাশ।
  • দরিদ্র মৌখিক এবং দাঁতের স্বাস্থ্যবিধি।
  • শরীররে দুর্বল প্রতিরোধ বেবস্থা ইত্যাদি।

আমাদের অজান্তেই আমরা নিজেদের সমস্যার ঝুঁকি দেকে আনছি। যেকোনো রোগকে প্রতিরোধ করতে আগে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যার ফলে আমরা যেকোনো রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে পারি।

মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা

মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা

মুখের ক্যান্সার একটি মারাক্তক রোগ। এটি আমাদের জীবনে একটি কাল হয়ে দ্বারায়। সাধারণত মুখের ক্যান্সার আঁকারে অনেক ছোট হয়ে থাকে। ফলে এটিকে প্রথমে বোঝার সঠিক কোন উপায় থাকে না। আমাদের দেশে ক্যান্সারের মতো বড় বড় রোগের চিকিৎসা বর্তমান সময়ে করা সম্ভব হচ্ছে। তাই আমাদের উচিত সতর্কতা অবলম্বন করা। মুখে যদি ঘা জাতীয় কিছুর উপস্থিত দীর্ঘদিন স্থায়ি থাকে, তাহলে আমাদের দ্রুত ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ দ্রুত চিকিৎসার ফলে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ক্যান্সারের নানা ধরনের চিকিৎসা রয়েছে।

সার্জারি, কেমোথেরাপি, ও রেডিওথেরাপি। সাধারানত আমাদের দেশে এই চিকিৎসা গুলো উপস্থিত রয়েছে। রোগীদের প্রথমত মুখের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সাধারন চিকিৎসা পদ্ধতি, অবস্থা অনুযায়ী সার্জারি করে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা গ্রহন করা সম্ভব। কেমোথেরাপি মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। এবং মুখের ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিয়েশনের সহায়ক হিসেবে এটি কাজ করে। এবং রেডিও থেরাপি মুখের ক্যান্সার চিকিৎসায় সার্জারির সাথে সাথে এটি দেয়া হয় এবং ধীরে ধীরে রোগীর চর্বন শক্তি বাড়ানো, গেলা, কথা বলার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

ক্যান্সার একটি জটিল রোগ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি মানব দেহের জন্য ভয়াবহতা ডেকে আনে। তবে বর্তমান সময়ে ক্যান্সারের থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এটিকে রোধ করা যায়। ক্যান্সার বড় আকার ধারন করলে সার্জারি কেমোথেরাপি দিয়ে বা রেডিওথেরাপি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই আতঙ্ক না হয়ে ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা নিন, এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কোলন ক্যান্সার বা মলাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ, কারণসমুহ ও চিকিৎসা

আপনারও হতে পারে পাকস্থলীর ক্যান্সার – জেনে নিন পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণ ও প্রতিকার

জেনে রাখুন ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার