ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ - ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও করণীয়

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ – ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও করণীয়

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ বর্তমান সময়ে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ ও নানা কর্মকাণ্ডের ফলে দিন দিন এটির প্রভাব বিস্তার করছে। ডেঙ্গু জ্বর সাধারানত এসিড মশার কারনে হয়ে থাকে। এটি একটি ভাইরাস জাতীয় রোগ। ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমন তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো দেখা যায়।উপসর্গগুলোর মাঝে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা এবং গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। ডেঙ্গু জ্বরের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের যা করনীয়:-

ডেঙ্গু জ্বর কি _ wirebd.com

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ এবং কিভাবে হয়

ডেঙ্গু জ্বর এক প্রকারের এসিড মশার কামরে হয়ে থাকে। মানব দেহের জন্য এটি ভয়ানক রূপ ধারন করে। ড্রেন এবং আমাদের বাড়ির আশেপাশের পরিত্যাক্ত স্থান থেকে এটি বিস্তার করে। সাধারণত ফুলের টব, ট্যায়ার, ড্রেন সহ নানা স্থান থেকে ডেঙ্গুর উৎপত্তি হয়। ডেঙ্গু জ্বরের আক্রান্তের সংখ্যা রাজধানী ঢাকাতে স্বাভাবিকের তুলনায় এর পরিমান বেশি। দুই থেকে সাত দিনের মাঝে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী আরোগ্য লাভ করে।

এটিকে রক্তক্ষরী জ্বর বলা হয়। কেননা শরীরে এ সময় রক্তের উপস্থিতি কম থাকে। এসময় রক্তপাত হয়, রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কয়েক জাতি এসিড (স্ত্রী) মশা এর জন্য দায়ি। ডেঙ্গু রোগীদের জ্বর ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। তাই এটির লক্ষন দেখা দিলে আমাদের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ও উপযুক্ত চিকিৎসা নেওয়া।

মানব দেহে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ অনেক ভাবে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে কিছু বিশেষ লক্ষণ রয়েছে, যেমনঃ

  • উচ্চ জ্বর (১০৪°/১০৫°F)
  • তীব্র মাথার যন্ত্রণা
  • চোখের পিছনে ব্যথার অনুভূতি
  • মাংসপেশি এবং অস্থি তে যন্ত্রণা
  • বমি বমি ভাব
  • মাথাঘোরা
  • গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
  • ত্বকে বিভিন্ন স্থানে ফুসকুড়ি

ডেঙ্গু জ্বর হলে করনীয় কি

ডেঙ্গু জ্বর আমাদের শরীরে একটি মারাক্তক আকার ধারন করে। ডেঙ্গুর প্রভাব দিন দিন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বর দুই থেকে সাত দিন উপস্থিত থাকে। সাধারণত, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। ডেঙ্গু জ্বর তিন প্রকারের হয়ে থাকে এ, বি, ও সি। ডেঙ্গু হলে কি ধরনের চিকিৎসা নিবেন তা নির্ভর করবে এটির ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর। প্রথম অবস্থায় যদি রোগীর স্বাভাবিক মাত্রায় জ্বর থাকে তাহলে বাড়িতে থেকে বিশ্রাম নেওয়া উত্তম।

বি ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। জ্বর, মাথা বেথা, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা ইত্যাদি থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় উত্তম। এবং ডি ক্যাটাগরির রোগীদের ডেঙ্গু জ্বর রোগীদের ক্ষেত্রে মারাক্তপ আকার ধারন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর হলে করনীয় কি

ডেঙ্গু রোগীদের বাসায় করনীয়

সাধারানত ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের চারপাশের অগোছান পরিবেশ এটির মুল কারণ। এই জ্বর মানব দেহের জন্য মারাক্তপ ক্ষতির কারণ হয়ে দ্বারায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক মানুষের প্রাণহানির কথাও শুনতে পাওয়া যায়। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বেশ কিছু নিয়মের সাথে চলতে হয়।

  • পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
  • প্রচুর পরিমানের তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
  • ডেঙ্গু জ্বরে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীদের লেবার, হার্ড, ও কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা উপস্থিত থাকায় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।
  • ডেঙ্গু জ্বরে গায়ের ব্যাথার জন্য কোন ঔষধ খাওয়া যাবে না। কারণ ডেঙ্গুর সময় এই জাতীয় ঔষধ প্রচুর রক্ত ক্ষরনের কারণ হতে পারে।

এছারাও ডাক্তারের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। এবং আমাদের উচিত ডেঙ্গু প্রতিকারে আমাদের সবার সতর্কতা অবলম্বন করা। কেননা এটি মানব দেহের জন্য ভয়াবহতা ডেকে আনতে পারে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধের পদক্ষেপ

ডেঙ্গু প্রতিরোধের পদক্ষেপ

ডেঙ্গু আক্রান্তের কারনে বিশ্বব্যাপি ডাক্তাররা এটিকে প্রতিরোধ করতে টিকা নিয়ে আসছে যা একজন ব্যক্তিকে ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এখন পর্যন্ত নিদিষ্ট ভাবে এটিকে প্রতিরোধ করার কোন ভ্যাক্সিন নেই। ডেঙ্গুর প্রধান কারণ এটি একটি এসিড মশার কারনে হয়। যা আমাদের রক্তের সাথে মিশে আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পরে। সাধারণত এটি আমাদের চার পাশের পরিবেশের কারনে হয়ে থাকে। পরিত্যাক্ত ট্যায়ারে পানি জমলে অথবা ফুলের টব ও ড্রেন থেকে এর উৎপত্তি হয়।

এটির কারনে আমরা নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারি। যার মধ্য অন্যতম মশা নিরোধক ব্যাবহার করা। পুরো শরীর ঢেকে রাখা। দরজা জানলাতে পর্দা ব্যাবহার করা। কেও যদি মশার উপস্থিত বেশি এমন এলাকায় বসবাস করে, তাহলে তাদের জন্য জামাকাপড়, তাঁবু এবং অন্যান্য জিনিসপত্রে পারমেথ্রিন স্প্রে (wiki) করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যা ডেঙ্গু হতে আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম হয়। এবং বাসা বাড়িতে আমাদের উচিত পরিত্যাক্ত ফুলের টব অথবা যেকোনো জায়গাতে আবর্জনার সৃষ্টি না করা। কেননা ডেঙ্গু জন্মের ক্ষেত্রে এটি মুল কারণ।

ডেঙ্গু জ্বরে রোগীদের জন্য ডায়েট

ডেঙ্গু জ্বরে রোগীদের জন্য ডায়েট

ডেঙ্গু জ্বরে রোগীদের নানা সমস্যার উপস্থিত লক্ষ করা যায়। এসিড (স্ত্রী) মশার কামরে এই রোগটি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এটি একটি মারাক্তক ভাইরাস। কেননা রক্তের সাথে মিশে এটি আমাদের শরীরে নানা সমস্যার আকার ধারন করে। অনেক সময় দেখা যায় ভুল চিকিৎসায় অনেকে মারা যায়। তবে ডাক্তারের কিছু গুরুপ্তপূর্ণ পরামর্শে আমাদের এটির হতে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। ডেঙ্গু রোগীদের ডায়েট একটি গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। ডেঙ্গু রোগীদের ক্ষেত্রে কিছু পুষ্টিকর উপাদান যা বিশেষ ভাবে উপকারি হতে পারে।

  • ভিটামিন সি  (ফল ও শাক সবজিতে পাওয়া যায়)
  • জিঙ্ক ( সমুদ্রিক খাবারে পাওয়া যায়)
  • আয়রন ( মাংস ও মটরশুঁটিতে পাওয়া যায়)
  • পেঁপে ও
  • নারিকেলের জল।

উক্ত খাবারের তালিকা একটি ডেঙ্গু রোগীদের জন্য গুরুপ্তপূর্ণ ভুমিকা পালনে কাজ করে থাকে। এবং আমাদের সবার উচিত ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এবং ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নেওয়া ও সতর্ক থাকা।

ডেঙ্গু একটি মারাক্তক রোগ। এটির বর্তমানে কোন নিদিষ্ট ভ্যাক্সিন নেই। তবে সঠিক পদক্ষেপ ও চিকিৎসকের মতামতে চলাচল করলে ডেঙ্গু থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। তবে মনে রাখবেন আতঙ্ক নয় বরং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *