বর্তমানে প্রায়ই স্কুল কলেজ কিংবা সরকারি চাকরির পরিক্ষায় একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য লিখতে বলে। কেননা বাংলা ভাষাভাষী ব্যবহারকারী জনগনের গৌরবোজ্জ্বলের দিন হল ২১শে ফেব্রুয়ারী। এটি শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পরিচিত। এই ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ। বাংলা ভাষার জন্য সালাম, রফিক, জব্বার ও বরকত সহ আর অনেকে শহিদ হয়েছেন। ৩০ লক্ষ শহিদ এর বিনিময়ে আমরা এই ভাষাটি পেয়েছি। দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধের পর স্বাধীন হয় পূর্ব পাকিস্থান যা বাংলাদেশ নামে পরিচয় লাভ করে।
আজকাল অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের শহিদদের প্রতি সন্মান ও শ্রদ্ধার ওপর নির্ভর করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে লিখতে বলে। তাই আজকে আমি আমার পোস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অর্থাৎ একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য তুলে ধরবো।
একুশে ফেব্রুয়ারী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
২১শে ফেব্রুয়ারী হল ভাসা শহিদ দিবস বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অনেক প্রানের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষাটি অর্জন করেছি। সমস্থ বাংলাভাষী ব্যাবহারকারী জনগনের গৌরবোজ্জ্বল দিন হল ২১শে ফেব্রুয়ারী। এই দিন বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষা ব্যবহারকারীরা নানা ভাবে উজ্জাপন করে থাকে।
১৯৪৭ সালে ভারত বর্ষ স্বাধীন হলেও বাংলাদেশ তখন স্বাধীন হয় নি। ভারত বর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের তখন নাম ছিল পূর্ব পাকিস্থান। পূর্ব পাকিস্থান এবং পশ্চিম পাকিস্থান দুভাগে বিভক্ত হলেও পশ্চিম পাকিস্থান তখন পূর্ব পাকিস্থানকে শাসন করতো। পূর্ব পাকিস্থানের ভাষা ছিল বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্থানের ভাষা ছিল উর্দু। সেজন্য ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলাকে পূর্ব পাকিস্থানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গড়ে তলার দাবিতে অনেক আন্দোলন সৃষ্টি হয়।
এই আন্দোলনে পুলিশ ছাত্রদের ওপর নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর প্রান যায়। তাদের মধ্যে সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত সহ আরও নাম না জানা অনেকে। এভাবেই আন্দলনের মাধ্যমে ধিরে ধিরে এটি যুদ্ধে পরিনত হয়। সবশেষে দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন হয় পূর্ব পাকিস্থান। পরে পূর্ব পাকিস্থান পাল্টে নাম দেওয়া হয় বাংলাদেশ।
একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
সমস্ত বাংলা ভাষাভাষী ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল দিন হলো একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বাঙ্গালী এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করে। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও পরিচিত। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি বর্ষণের কারণে অনেক তরুণ শহীদ হন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য নিয়ে অনেক স্কুল কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় সরকারি চাকরির লিখিত পরিক্ষা বা ভাইবা তেএকুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আজকে আমি এই পোস্টে একুশে ফেব্রুয়ারি বা ভাষা শহিদদের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য নিয়ে হাজির হয়েছি-
- একুশে ফেব্রুয়ারী যা আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা বা ভাষা শহিদ দিবস হিসেবে চিনে থাকি। এটি বাঙ্গালির জাতীয় জীবনে একটি স্মরণীয় দিন।
- একুশে ফেব্রুয়ারী এলে প্রত্যেক বাঙ্গালির জীবনে শোক শক্তি গৌরবের প্রতিক নিয়ে মেতে ওঠে। ১৯৫২ সালে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে সালাম রফিক জব্বার সহ আরও অনেকে শহিদ হন। এ দিনটি ভাষা শহিদদের প্রতি স্মরণ করা হয়।
- এ দিনে কৃষক শ্রমিক ছাত্র সকলের মাতৃভাষার ভাষার দাবিতে উর্দুকে একমাত্র সরকারী ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করা হয়েছিল। তাই আজ বাংলা আমাদের মাতৃভাষা হওয়ায় বিশ্বের দরবারে আমরা বাঙালি জাতি নামে পরিচিত।
- শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও সন্মানের ওপর ভিত্তি করে ২১শে ফেব্রুয়ারী প্রত্যেক বছর শহিদ মিনারে ফুল প্রদর্শন করা হয়।
- যখন ঢাকায় বেশ করেকজন বিক্ষবকারি পুলিশের হাতে নিহত হয় তখন ৫২র আন্দোলনটি একটি মরমান্তক ঘটনায় পরিনত হয় যা বাংলা ভাষার দাবিকে উসকে দেয়। ৫২ তে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছিল বাঙ্গালীরা।
- ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনের পর দেশ ভাগ হয়ে যায় ফলে আমরা যখন পাকিস্থানের মধ্যে চলে আসি তখন আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মাতৃভাষা ব্যবহার করা মানুষের জন্মগত অধিকার। যেটি পাকিস্থান আমাদের থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল।
- ভাষাগত সাংস্কৃতিক সকল বৈচিত্র্য উন্নত করার জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলা ভাষা কে UNESCO কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
- ২১শে ফেব্রুয়ারী আদিবাসীর ভাষা সংরক্ষণ এবং সকল বৈচিত্র্যর গুরুত্বকে উৎসাহিত করে।
- ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি তোমায় ভুলিতে পারি’ বাংলা ভাষা রক্ষা করার জন্য যারা শহিদ হয়েছেন। তাদের অবদান অনেক, তাদের এই ঋণ কখনোই পরিশোধ করার নয়।
- ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। ৩০ লক্ষ প্রানের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন দেশের সাথে বাংলা ভাষা অর্জন করেছি। এটি আমাদের গর্ব ও অহংকার।
সকল ভাষা শহিদের প্রতি আমার অশেষ শ্রদ্ধা ও সন্মান জানাই। যারা বাংলা ভাষা আমার মায়ের ভাষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে।
সকল বাঙ্গালির কাছে ২১শে ফেব্রুয়ারী একটি স্মরণীয় দিন। ভাষা শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর এই দিনে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে তাদেরকে স্মরণ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের পরিক্ষা চাকরি কিংবা ভাইবা তে একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য প্রশ্ন আসতে পারে। তাই আমি আজকের এই পোস্ট এর মাধ্যমে তুলে ধরার শ্রেষ্ঠা করেছি।
Leave a Comment