স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য | ২৬ শে মার্চের ভাষণ

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য | ২৬ শে মার্চের ভাষণ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস বেশ বর্ণাঢ্য ভাবে সারাদেশে উদ্‌যাপন করা হয়। বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই দিনটি উদযাপন করে।

আজকের আর্টিকেলে আমি স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য | ২৬ শে মার্চের ভাষণ নিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যারা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আলোচনার সভায় অংশগ্রহণ করতে চান তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি উপকারে আসবে।

স্বাধীনতা দিবস

স্বাধীনতা দিবস

প্রথমেই শুরু করা যাক স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ (wiki)। বাংলাদেশের সবার জন্য এটি একটি বিশেষ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ বলেছিল, “আমি স্বাধীন হতে চাই!” বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হতে চায়নি। তাই ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাস ব্যাপী এই যুদ্ধে বহু সাহসী বাঙালি মানুষ পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর সাথে  লড়াই করেছেন। ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। অবশেষে বাংলাদেশ জয়ী হয়ে স্বাধীন দেশে পরিণত হয়। প্রতিবছর ২৬শে মার্চ তারিখে সারাদেশের মানুষ আনন্দে বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন করে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক,  সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিভিন্ন রঙের ঝাড়বাতি দিয়ে সজ্জিত করা হয়। অনেক জেলার জাতীয় স্টেডিয়ামে ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান  গান, নাচ হয় এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা বীরদের প্রতি স্মরণ করে। এটি বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব বোধ করার একটি দিন।

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য

যেকোন বক্তব্য বা ভাষণ শুরু করার আগে অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত থাকবেন ছোট- বড় সবাইকে যথাযথভাবে সম্বোধন করতে হবে। আপনার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে হয় তাহলে সেখানে অধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অতিথিও উপস্থিত থাকতে পারে। তাই বক্তৃতার শুরুতে তাঁদের উদ্দেশ্য করে সম্ভাষণ বা শুভেচ্ছা জানাতে হবে । যেমনঃ সম্মানিত প্রধান অতিথি বা শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ ও উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ বা প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনেরা। ঠিক এভাবে সম্বোধন করতে হবে। যেকোন বক্তব্যে সাধারণত তিনটি ধাপ থাকে যেমনঃ

  • সূচনা
  • মূল বক্তব্য
  • উপসংহার

নিচের অংশে আমরা ২৬ শে মার্চ নিয়ে কিছু বক্তব্য ও ভাষণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য নির্বাচন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা পেশ করতে পারেন।

স্বাধীনতা দিবসের  বক্তব্য-১

স্বাধীনতা দিবসের  বক্তব্য-১

আমি আমার বক্তব্যের শুরুতেই আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান
অতিথি, আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি ও মঞ্চের সামনে উপবিষ্ট সুধীমন্ডলী, সবার প্রতি
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ।

আজ ২৬শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশের সবার জন্য এটি একটি বিশেষ দিন। এই দিনে, আমরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে তাদেরকে স্মরণ করি। তাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানী সরকার মধ্য রাতে পূর্ব পাকিস্তানে ওপর নিরীহভাবে আক্রমণ ও অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। নয় মাসের কঠিন লড়াইয়ের পর ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন অভ্যুদয় ঘটে , সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশের।

২৬শে মার্চ যেদিন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই দিনটি এখন স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়। জনগণ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বীরদের স্মরণ করে। তবে স্বাধীনতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এই দিনে উপলব্ধি করা যায়। তাই,  তাদের সাহসিকতাকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর ২৬শে মার্চ আমরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি যারা বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হতে আত্মত্যাগ করেছিল।

আবারও সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার বক্তব্যটি এখানেই সমাপ্ত করছি।আসসালামু আলাইকুম।

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য-২

স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য-২

আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় উপস্থিত সুধীবৃন্দ, আজ ২৬শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি সবার প্রতি আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

আমার বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা হাজারো বাংলার বীর সন্তানদের প্রতি। যারা স্বাধীনতার যুদ্ধে নিজের জীবন উৎসগ করে উপহার দিয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আরো স্মরণ করছি বাঙালি স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যাদের মহান আত্নত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশের) জনগণ পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিল। বাংলাদেশ বাহিনীর নেতৃত্বে এবং ভারত সমর্থিত এই যুদ্ধ দীর্ঘ নয় মাস চলে। বাংলাদেশের বীর জনগণ সাহস ও দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করেছিল এবং ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ অবশেষে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির মাধ্যমে এই দিনটি সম্মানিত করা হয়। দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ আমাদের এই আয়োজনটি। এই আয়োজন তরুণ বাংলাদেশিদের হৃদয়ে গর্ব ও দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে এবং দেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে তাদের অনুপ্রাণিত করার একটি উপলক্ষ মাত্র।

স্বাধীনতা দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য-৩

স্বাধীনতা দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য-৩

সম্মানিত প্রধান অতিথি, শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ ও উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ ও প্রিয় ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। শুরুতেই সবাইকে জানায় মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।

আজ ২৬শে মার্চ, স্বাধীনতা দিবসের আনন্দঘন মুহুর্তে আমাদের প্রথমেই স্মরণ করতে হবে দেশের জন্য লড়াই করা অনেক দেশপ্রেমিক শহীদের আত্মত্যাগ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক স্বৈরাচার বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেলিফোন যোগে সরাসরি চট্টগ্রাম আওয়ামী – লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরী নিকট বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পৌঁছে দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তাক্ত যুদ্ধের পর শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। ত্যাগের বিশালতা সত্ত্বেও, স্বাধীনতা আন্দোলন জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিল। স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও দেশপ্রেমের একটি দিন।

সবাইকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যটি এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

শেষ কথা

আশা করছি, আজকের আর্টিকেলটি স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য আপনাদের ভালো লেগেছে। আপনাদের সুবিধার জন্য এখানে ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও ভাষণ সংগ্রহ করে আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেল থেকে আপনার পছন্দের বক্তব্য বা ভাষণ বাছাই করে যেকোন অনুষ্ঠানে খুব সহজে বক্তব্য দিতে পারবেন। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ।

Author

More Reading

Post navigation

Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

স্বাধীনতা দিবস অনুচ্ছেদ – ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস অনুচ্ছেদ