বেস্ট ওয়েবসাইট : ৫ টি প্রয়োজনীয় এবং মজার ওয়েবসাইট! [পর্ব-৪]

এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

পর্ব-৪


যদিও ইন্টারনেট আর ওয়েব আলাদা জিনিস—তারপরেও ইন্টারনেটে আমরা বেশিরভাগ সময় ওয়েবেই কাটিয়ে থাকি। নানান কাজের জন্য রয়েছে নানান ওয়েবসাইট গুলো। দুনিয়ার এমন কিছু কিছু ওয়েব সাইট রয়েছে যেগুলো আপনি হয়তো কখনো কল্পনা পর্যন্ত করেন নি। যাই হোক, আজকের আর্টিকেলে এমন কিছু বেস্ট ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো আজব তো নয়, কিন্তু অনেক কাজের, প্রায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে আমি এই সাইট গুলোকে ব্যবহার করে থাকি।

আজকে কয়েকটি ভালো ওয়েবসাইট সম্পর্কে আলোচনা করবো যেগুলো আপনার কাজে আসতে পারে। এই  লিস্টের মধ্যে খুবই দরকারি ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে শুধুমাত্র মজার জন্য তৈরী ওয়েবসাইট পর্যন্তও আছে. হতে পারে আপনাদের মধ্যে অনেকেই এই ওয়েবসাইটগুলোর ব্যাপারে আগে থেকেই জানেন এবং আগে থেকে ব্যাবহারও করে আসছেন। নিচে বলা ওয়েবসাইট গুলোর নাম যদি আপনি আগে থেকেই জেনে থাকেন বা আগেই ব্যাবহার করা থাকেন, তাহলে আপনি লেখাটি এড়িয়ে যেতে পারেন। আর যদি না জেনে থাকেন, তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি অন্তত ভালো কয়েকটি ওয়েবসাইটের নাম জানতে পারবেন যেগুলো আপনার ভবিষ্যতে দরকার হতে পারে।

আমাদের বেস্ট ওয়েবসাইট সিরিজের পূর্ববর্তী আর্টিকেলগুলো নিচে দেওয়া লিংক থেকে পড়তে পারেন যদি আপনি এখনো না পড়ে থাকেন-


১. SaveToDrive

এই ওয়েবসাইটটিকে আমি এক্সট্রিমলি ইউজফুল বা প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের ক্যাটাগরিতে রাখবো। এই ওয়েবসাইটটির সাহায্যে আপনি অনলাইনে যেকোনো ফাইল ডাউনলোড না করেই আপনার গুগল ড্রাইভে সেভ করে রাখতে পারবেন বা আপলোড করে রাখতে পারবেন। এই সাইটটি ব্যবহার করলে আপনাকে ফাইলটি ডাউনলোড করে এবং তারপরে গুগল ড্রাইভে আপলোড করে অনেক বেশি ডেটা অপচয় করতে হবেনা। আপনি যদি কোনো ফাইল ডাউনলোড না করেই আপনার গুগল ড্রাইভে আপলোড করে ফেলতে চান, আপনাকে শুধুমাত্র এই সাইটটিতে গিয়ে যে গুগল ড্রাইভ আইকনে একবার ক্লিক করে আপনার গুগল একাউন্ট  সাইন ইন করে অথেন্টিকেট করে নিতে হবে। এরপরে শুধুমাত্র আপনাকে এই ওয়েবসাইটে থাকা টেক্সট ফিল্ডে যে ফাইলটি সেভ করতে চান ওই ফাইলটির ডাইরেক্ট ডাউনলোড লিংক পেস্ট করে দিতে হবে। শুধুমাত্র মনে রাখবেন, লিংকটি অবশ্যই ডাইরেক্ট ডাউনলোড লিংক হতে হবে।

এরপরে আপলোড অপশনে ক্লিক করলেই ফাইলটি আপনার গুগল ড্রাইভের রুট ফোল্ডারে আপলোড হয়ে যাবে। এই ফাইলগুলো আপলোড হয় অনেক হাই স্পিড ইন্টারনেট কানেকশনে। তাই ফাইলটির সার্ভার যদি খুব বেশি ব্যান্ডউইডথ থ্রোটলিং না করে, তাহলে ফাইলটি খুবই দ্রুত আপলোড হয়ে যাবে। যেহেতু ওদের সার্ভার থেকে আপলোড হবে, তাই আপনার ১ মেগাবাইটও ইন্টারনেট খরচ হবেনা এতে। আর হ্যা, ফাইলটি আপলোড হওয়ার সময় আপনি চাইলে ব্রাউজার ট্যাবটি ক্লোজও করে দিতে পারেন। তাতে ফাইল আপলোড থেমে যাবেনা। আর এর সাহায্যে গুগল ড্রাইভ ছাড়াও ড্রপবক্স এবং বক্সেও ফাইল আপলোড করতে পারবেন।

২. Progress

এটি বেশ মজার একটি ওয়েবসাইট। এটাকে বলতে পারেন ইন্টারনেটের সবথেকে স্লো প্রোগ্রেস বার। এই সাইটটি ভিজিট করলে আপনি বিভিন্ন রকম প্রোগ্রেস বার দেখতে পাবেন যেগুলো একটির নিচে আরেকটি করে পরপর সাজানো আছে। এখানে আপনি এমন এমন প্রোগ্রেস বার দেখতে পারবেন যেগুলো আপনি অন্য কোথাও কখনো দেখবেন না। যেমন, পরবর্তী মিনিট হতে কত দেরি তার একটি প্রোগ্রেস থেকে শুরু করে, পরবর্তী ঘন্টা, পরবর্তী দিন, পরবর্তী মাস, পরবর্তী বছর, পরবর্তী যুগ এবং এভাবে চলতে চলতে পরবর্তী শতাব্দী এবং কবে সূর্য নিস্তেজ হয়ে যাবে তারও প্রোগ্রেস বার আছে। আর এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরণের স্পেশাল প্রোগ্রেস বার আছে যেমন পরবর্তী মাদার্স ডে আসতে কত দেরি, পরবর্তী ভ্যালেন্টাইন্স ডে আসতে কত দেরি, পরবর্তী হ্যালির ধূমকেতু দেখতে পেতে কত দেরি এবং এমন আরো অনেক ধরণের প্রোগ্রেস বার দেখতে পাবেন এখানে। অবসর সময়ে মাঝে মাঝে ভিজিট করে দেখার মতো অসাধারণ একটি ওয়েবসাইট এট

 ৩. IFTTT

এটি বেশ জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট বললে ভুল হবে, এটি সম্পূর্ণ একটি ওয়েব সার্ভিস। এটির একটি জনপ্রিয় এন্ড্রোয়েড এপ্লিকেশনও আছে। এটার সম্পূর্ণ টার্ম হচ্ছে If This Then That (IFTTT) টেকনিক্যালি বলা যায়, এটি মূলত বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিসগুলোর একটির সাথে আরেকটির এপিআই কানেক্ট করার একটি সার্ভিস। সম্ভবত বোঝেন নি। একটা উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন আমি কি বলতে চাইছি। এখানে মূলত আপনি আপনার ব্যবহার করা কিছু অনলাইন সার্ভিসের কিছু ইন্টার‌্যাকশন সেট করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো।

যেমন, আপনি চাইলে সেট করে রাখতে পারবেন যে, আপনি যখনই ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করবেন, সেটি সাথে সাথে ইন্টেস্টাগ্রামেও পোস্ট হয়ে যাবে। অথবা এমনও করতে পারবেন যে, আপনি আপনার ব্লুটুথ স্পিকার থেকে ফোন ডিসকানেক্ট করার সাথে সাথেই অটোমেটিক আপনার ফোনের ব্লুটুথ অফ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনার যদিও IFTTT এপ্লিকেশনটি ফোনে ইনস্টল করা থাকতে হবে। এই ওয়েবসাইটে এমন শত শত আগে থেকে সেট করা কমান্ড আছে এবং আপনি চাইলে আপনার নিজের ইচ্ছামতো সেগুলো একটিভ করতে পারবেন এবং চাইলে নিজের কাস্টম কমান্ড সেট করেও নিতে পারবেন।

৪. Product Hunt

এটিকে বলতে পারেন অনলাইনে নতুন জিনিস ডিসকভার করার একটি মাধ্যম। সাইটটির নাম প্রোডাক্ট হান্ট হলেও এখানে আপনি শুধুমাত্র প্রোডাক্ট না, বরং নতুন নতুন ওয়েব সার্ভিস, ওয়েবসাইট, এপ্লিকেশন, নতুন গ্যাজেট ইত্যাদি আরো অনেক ধরণের নতুন নতুন জিনিসের ব্যাপারে জানতে পারবেন। নতুন একটি এপ্লিকেশন রিলিজ হয়েছে? সেটা জানতে পারবেন এখানে। নতুন একটি ওয়েবসাইট এসেছে বা নতুন কোনো স্মার্টফোন রিলিজ হয়েছে? এসবকিছুই কভার করা হয় এখানে যদিও এটি কোনো ব্লগ নয়। মূলত এই সাইটটির মূল পয়েন্টই হচ্ছে  নতুন জিনিস ডিসকভার করা। এখানে আপনি আপনার ইন্টারেস্ট অনুযায়ী ফিল্টার করে আপনার ইচ্ছামতো ক্যাটাগরির প্রোডাক্টগুলো দেখতে পাবেন এবং আপনার কাছে যেগুলো দরকারি মনে হবে বা ভালো মনে হবে সেগুলোকে আপভোটও করতে পারবেন। এবং আপনি যদি ইউজার একাউন্ট সাইন আপ করেন, তাহলে আপনি নিজেও নতুন নতুন প্রোডাক্টস বা সার্ভিস নিয়ে লিখতে পারবেন। এটি মূলত একটি ফোরামের মতোই বলতে পারেন।

৫. The Wayback Machine

এটি বেশ জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। এটি এর ইউআরএল এর কারণে ইন্টারনেট আর্কাইভ নামেও পরিচিত। যদি আপনি না জেনে থাকেন এটির ব্যাপারে, তাহলে বলি, এই ওয়েবসাইটটি ইন্টারনেটের একটি ইতিহাসের মতো। এই ওয়েবসাইটটিতে আপনি মূলত অন্য কোনো ওয়েবসাইট এখন থেকে ১০ দিন আগে বা ১ মাস আগে এমনকি এখন থেকে আরো ৫-৭ বছর আগে কেমন দেখতে ছিল তা জানতে পারবেন বা দেখতে পারবেন। আপনাকে শুধুমাত্র ওই সাইটটির টেক্সট ফিল্ডে গিয়ে আপনি যে ওয়েবসাইট এর পূর্বের রূপ দেখতে চান সেটির ইউআরএল লিখে ইন্টার প্রেস করুন। এরপর পরের পেজে আপনি দেখতে পাবেন যে এই ওয়েবসাইটটির কত বছর আগের কোনকোন দিনের স্ন্যাপশট তাদের কাছে আছে। ক্যালেন্ডারে ঐদিনে ক্লিক করলেই আপনার কাঙ্খিত ওয়েবসাইট ঐদিনটিতে কেমন দেখতে ছিল তা দেখতে পাবেন আপনি। আপনি কি জানেন এখন থেকে ৫ বছর আগে ফেসবুকের ওয়েবসাইট কেমন দেখতে ছিল? এখন থেকে ১ বছর আগে ওয়্যারবিডি কেমন দেখতে ছিল? এসব আপনি চাইলে খুব সহজেই জানতে পারবেন এসব এই ওয়েবসাইট থেকে।


তো এই ছিল আরো পাঁচটি ইউজফুল এবং মজার ওয়েবসাইট। বেস্ট ওয়েবসাইট সিরিজের পরবর্তী আর্টিকেলে আরো এমন পাঁচটি ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করবো আশা করি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। কোনো ধরণের প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। আর আপনার কাছে যদি এমন ধরণের আরো ওয়েবসাইট এর কালেকশন থাকে, তাহলে সেগুলোর মধ্যে কয়েকটিও আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন কমেন্ট সেকশনে। ধন্যবাদ

Images: Shutterstock.com

About the author

stuff04@wirebd

Add comment

Categories