স্বপ্নের ব্যাখ্যা : আমরা কেন স্বপ্ন দেখি? স্বপ্নের কি কোন অর্থ রয়েছে?

আমাদের মস্তিষ্ক এক রহস্যময় জীবন্ত যন্ত্র, যেখানে আমরা এখনো ঠিকঠাক জানি না এটি কিভাবে এবং কেন এরকমভাবে কাজ করে। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীগন আমরা কেন ঘুমাই বা কেন আমরা স্বপ্ন দেখি — এর উপর পড়াশুনা ও নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু আমরা এখনো ১০০ ভাগ নিশ্চিত নয়, যে কেন আমাদের ঘুম প্রয়োজনীয় বা কেন ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন আসে।

অনেক ধর্মে স্বপ্ন নিয়ে অনেক বর্ণনা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো শত বছর বা হাজার বছরের পুরনো ধারণা, আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান স্বপ্ন নিয়ে বর্তমানে কি বলে? ঘুমের মধ্যে আমাদের মস্তিষ্ক কেন গল্প না ছবি তৈরি করে? সে সময় আমাদের মস্তিষ্কে কি চলতে থাকে? কেন চলতে থাকে? চলুন, আজকে আলোচনা করা যাক, “কেন আমরা স্বপ্ন দেখি?” — এই টপিকের উপর!

কেন আমরা স্বপ্ন দেখি?

আমরা কেন ঘুমাই অথবা কেনই বা স্বপ্ন দেখি, এটা আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, আধুনিক বিজ্ঞানের কাছে এর স্পষ্ট জবাব এখনো নেই। তবে আমার পূর্বের লেখা আর্টিকেল থেকে আরো জানতে পারেন; ৫টি প্রশ্ন, যেগুলোর উত্তর বিজ্ঞানের কাছে নেই!

যাইহোক, স্বপ্ন বা ড্রিম (Dream) নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার নাম হচ্ছে, ওনায়োরলোজি (Oneirology) যেটাকে বাংলায় স্বপ্নবিদ্যা বলতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ ইতিহাসে এরকম কোন বিদ্যা মজুদই নেই, কেননা স্বপ্ন এমন একটি জিনিষ যেটা মাপা যায় না, ধরে রাখা যায় না, আবার আপনি চাইলেও অন্য কারো স্বপ্ন দেখতে পারবেন না। এটা এমন এক ইউনিক ফিল, যেটা কেবল আপনি নিজে নিজের মাধ্যমে অনুভব করতে পারবেন, তবে একে ব্যাখ্যা করাও অনেক মুশকিল কাজ।

যদি আপনি কাউকে জিজ্ঞাস করেন, সে স্বপ্নে কি দেখেছে, সেক্ষেত্রে ফলাফল প্রায়ই যৌক্তিক হয় না। আর ফলাফল এরকমটা হওয়াই স্বাভাবিক, যদি আপনি নিজের ড্রিম থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে চান, সেক্ষেত্রে স্বপ্নে প্রায়ই আপনি যেসব কাল্পনিক জায়গা বা কাজকর্ম সম্পূর্ণ করে থাকেন সেগুলো বলে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। তাছাড়া গবেষকগনের মতে সারা রাতের স্বপ্নে প্রায় ৯৫% স্বপ্ন মনেই থাকে না। তাছাড়া এভারেজ ব্যাক্তি রাতে ৩-৫টি স্বপ্ন দেখে থাকে, কেউ কেউ ৭টি পর্যন্ত দেখতে পারে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এদের মধ্যে বেশিরভাগ স্বপ্ন আমরা তাৎক্ষনিকই ভুলে যাই।

স্বপ্ন নিয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বা তত্ত্ব

ঘুমের মধ্যে বিভিন্ন স্টেজ রয়েছে, এমনই এক স্টেজে মস্তিষ্কের মধ্যে এক ইউনিক টাইপের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ঘটতে দেখা যায়। সেই অবস্থা থেকে বা ঐ স্টেজে যখন গবেষকগন ঘুম থেকে কোন ব্যাক্তিকে জাগিয়ে দেন বেশিরভাগ সময়ই ঐ ব্যাক্তি বর্ণনা করেন, সে স্বপ্ন দেখছিল এবং একই সময়ে ঐ স্টেজে থাকা কালীন চোখের গোলক চোখের পাতার নিচে পাগলের মতো এদিক ওদিক করতে থাকে। একে র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট স্লিপ (Rapid eye movement sleep) বলা হয়ে থাকে বা সংক্ষেপে রেম স্লিপ (REM Sleep)।

এটা আপনিও লক্ষ্য করলে দেখা পেতে পারেন, যখন কেউ ঘুমায় অনেক সময়ই তাদের চোখের গোলক চোখের পাতার নিচে এদিক ওদিক ঘুরতে থাকে। এরকমটা আপনি বা আমিও হয়তো করি। কিন্তু এখানেই রয়েছে এক রহস্য, রেম স্লিপ স্টেজে থাকা কালীন সময়ে আপনার মস্তিষ্কের মধ্যে যে ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি গুলো চলতে থাকে সেই হুবহু অ্যাক্টিভিটি চলে যখন আপনি জেগে থাকেন।

কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে, আপনি জেগে থাকার সময় মস্তিষ্কের মধ্যে যে বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল গুলো উৎপন্ন হয় যেমন- নরপাইনফ্রাইন (Norepinephrine), সেরোটোনিন (Serotonin), এবং হিস্টামিন (Histamine); ঘুমে এগুলো ব্লক অবস্থায় থাকে, ফলে আপনার মাংসপেশি নড়াচড়া করতে পারে না। আর এই জন্যই স্বপ্নে আপনি আকাশে উড়ে বেড়ান, পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেন, কিংবা চাইনিজ কুংফু করতে থাকেন, কিন্তু আপনার শরীর নড়তে পারে না।

কিন্তু যাদের ঘুম ব্যাধি রয়েছে, তারা ঘুমের মধ্যেও নড়াচড়া করতে পারে এবং স্বপ্ন দেখার সময় স্বপ্ন অনুসারে অ্যাক্ট করতে পারে। তারা এমনকি বিছানা থেকে বের হয়ে হাটাচলা শুরু করতে পারে, আর এই ব্যাধি সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। অনেক সময় আপনি ঘুম থেকে জেগে যান কিন্তু শরীর একটুও নাড়াতে পারেন না, অনেকেই এই সময় ফিল করেন তাদের উপর অশরীরীয় কিছু একটা চেপে বসে রয়েছে, কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়। আপনি রেম স্লিপে থাকা অবস্থায় হঠাৎ জেগে গেলেও আপনার ব্রেইন তখনও কল্পলোকেই থাকে। আপনি সম্পূর্ণ জেগে যান, এমনকি আপনার চারপাশে কি হচ্ছে সেগুলোও অনুভব করেন কিন্তু আপনার বডি নড়াচড়া করতে পারে না, কেননা আপনি তখনও রেম স্লিপ স্টেজের মধ্যেই রয়েছেন।

তবে অনেক সময় ব্যাপারটা আরো মজাদার হতে পারে। আপনি স্বপ্নের মধ্যেই রয়েছেন, কিন্তু আপনি স্বপ্নের মধ্যেই জানেন, আপনি স্বপ্নে রয়েছেন। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, বাট এরকম আমার নিজের সাথেও অনেক বার হয়েছে। আমি আকাশ থেকে মাটিতে পরে যাচ্ছি, খুব ভয়ে চিৎকার করছি, ঠিক তখনই মনে পরে যায়, “আরে ধুর, আমি তো স্বপ্ন দেখছি, কিছুই হবে না!” আপনার সাথেও যদি এমন হয়, তো জেনে রাখুন একে লুসিড ড্রিমিং (Lucid Dreaming) বা স্বচ্ছ স্বপ্ন দেখা বলা হয়।

আপনি লুসিড ড্রিমে থাকার সময় আপনার সচেতন মন কিন্তু কাজ করে এবং স্বপ্নের মধ্যেই আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন। আপনি যে কারো সাথে ইচ্ছা মতো কথা বলতে পারেন, ইচ্ছা মতো উড়তে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আরেকভাবে বলতে গেলে আপনি নিজের স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখেন।

রেম স্লিপ

রেম স্লিপ স্টেজে থাকার সময় ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই এটা নিশ্চিত করেন যে তারা স্বপ্নের মধ্যে ছিলেন। এর মানে ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ালো, কেউ রেম স্লিপ স্টেজে রয়েছে মানে এটা বলায় যেতে পারে সে স্বপ্ন দেখছে। চোখের নিয়মিত নড়াচড়া থেকে এটাই ধারণা করা যায়, সে সময় আলাদা আলাদা দৃশ্যের পরিবর্তন ঘটছিলো। তবে জেনে অবাকই হবেন, বেশিরভাগ স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্রে আপনি প্রায় জেগেই থাকেন, কিন্তু এক রহস্যময় ভাবে।

যদি ঘুরিয়ে পেছিয়ে না বলি সেক্ষেত্রে আপনি আসলে স্বপ্নের চেতনায় জেগে থাকেন, যেহেতু আপনার ব্রেইন জেগে থাকার মতোই অ্যাক্টিভিটি প্রদর্শিত করে। এই স্টেজে থাকার সময় আপনি বিভিন্ন দৃশ্য দেখতে আরম্ভ করেন যেগুলো তৈরি হয় আপনার ভিজুয়াল কর্টেক্স থেকে। আপনি জেনে আরো অবাক হবেন যে, আপনার স্বপ্নের মধ্যে আপনার মস্তিষ্কের বিশাল পরিমাণের ইমোশন এরিয়া অনলাইনে থাকে।

এমনকি আপনি জেগে থাকতে যতোটা না ইমোশনাল ছিলেন, রেম স্লিপ স্টেজে তার থেকেও বেশি ইমোশনাল হয়ে পরতে পারেন। আর অপরদিকে আপনার মস্তিষ্কের যে অংশ ফোকাস প্রদান করে বা লজিক্যাল চিন্তা তৈরি করে, সেটা সম্পূর্ণ শাটডাউন হয়ে যায়। আর এই জন্যই রিয়াল লাইফে বিশাল সাহসী ব্যাক্তি হওয়ার পরেও স্বপ্নে আপনি তেলাপোকা দেখে ভয় পেতে পারেন!

তবে আপনার রিয়াল লাইফের সাথে স্বপ্নের ইমোশনাল ম্যাটারের সম্পর্ক রয়েছে। এটা গবেষণা থেকে জানা গেছে যারা অনেক খারাপ সময় পার করছেন বা হয়তো আপনার সম্পর্ক ব্রেকআপ হয়ে গেছে, সেই সময় আপনি প্রায়ই খারাপ ও বেদনা দ্বায়ক ইমোশনাল স্বপ্ন দেখতে পারেন।

তবে স্বপ্ন অনেক সময় রিয়াল লাইফে আরো বেটার প্রস্তুত হওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে। যদিও স্বপ্ন আমাদের মস্তিষ্কের তৈরি করা খেয়াল ছাড়া আর কিছুই নয়, কিন্তু স্বপ্নে থাকা অবস্থায় সবকিছুই রিয়াল মনে হয় আর যেহেতু এর সাথে অনেক ইমোশন জরিয়ে থাকে, তাই এটা বলার আর দরকার নেই যে আমরা কতোটা ইমোশনাল প্রাণী।

আপনি যদি সারাদিন কমপ্লেক্স কোন টাস্কের উপর কাজ করেন, বা নতুন কিছু শেখেন সেই সময়ের আপনার ব্রেইনের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ও যখন আপনি রাতে ঘুমিয়ে যান সে সময়ের আপনার ব্রেইনের অ্যাক্টিভিটি একই হয়ে যায়। আপনার ব্রেইন জেগে থাকার সময়কার অ্যাক্টিভিটি গুলো রিপিট করতে থাকে।

অচেতন মন/সচেতন মন

যদিও স্বপ্ন আর ঘুম অনেক কমপ্লেক্স ব্যাপার, এতোক্ষণে একটু হলেও বুঝতে পারছেন — কিন্তু তারপরেও বিজ্ঞানীরা এর গবেষণা আর অনুমান করা থেকে বিরত নেই। স্বপ্ন আর ঘুম নিয়ে অনেক তত্ত্ব রয়েছে যেগুলো অনেকে বিশ্বাস করে আবার অনেকে করে না। অনেক তত্ত্ব অনুসারে আপনি সারাদিনে যে কাজ গুলো করেন বা আপনার ব্রেইন যেভাবে ইনপুট পায় স্বপ্নের মাধ্যমে এই তথ্য গুলোকে একত্রে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে। যেমন- আপনি হয়তো বাসস্ট্যান্ডে বসে বাসের অপেক্ষা করছিলেন, সেই মুহূর্তেই হয়তো একটা লাল কার আপনার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো, কারটি আপনার মনে বেশ ধরেছিল কিন্তু হঠাৎ সেই সময় বাস চলে আসায় আপনি সেটা নিয়ে চিন্তা করতে ভুলে গেছেন। স্বপ্নে হয়তো সেই কার নিয়েই স্বপ্ন দেখছেন, মানে আপনার মস্তিষ্ক জেগে থাকতে ইনপুট পাওয়া সকল তথ্য গুলোকে ঝালিয়ে নিচ্ছে।

এর প্রমান ও রয়েছে, ধরুন আপনি কাউকে কোন কমপ্লেক্স ওয়ার্ড বা প্রেজেন্টেশন স্ক্রিপ্ট মুখস্ত করতে দিয়েছেন, কিন্তু আপনি যদি তাকে ঘুমাতে না দেন, সে একবার সবকিছু মুখস্ত করার পরেও সব গুলিয়ে একাকার করে দিতে পারে। আপনি সারাদিনে যা যা করেন, ঘুমের মধ্যে আপনার ব্রেইন সকল ইনফরমেনশন গুলোকে একত্র করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কোন গুলো মনে রাখবে আর কোন গুলো ভুলে যাবে। আর অনেক বিশেষজ্ঞগনের মতে স্বপ্ন এই প্রসেসকে সাহায্য করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে।

ঘুমের মধ্যে অচেতন মন স্মৃতি কালেক্ট করতে ব্যাস্ত হয়ে পরে এবং ঘটনা গুলোর সাথে কানেকশন তৈরি করার চেষ্টা করে। আর এই চেষ্টার সময় যে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল তৈরি হয় সেটা আমাদের সচেতন মনের কাছে চলে যায়, সচেতন মন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কি হচ্ছে, তখন সিগন্যাল থেকে কর্টেক্স মস্তিষ্কে ছবি তৈরি শুরু হয় আর সচেতন মন গল্প তৈরি করে। আর এই জন্যই স্বপ্ন এলোপাথাড়ি হয়ে থাকে, বেশিরভাগ স্বপ্নেরই কোন কারণ বা অর্থ থাকে না। কেননা স্বপ্ন প্রকৃতপক্ষে সচেতন মনের তৈরি দৃশ্য হয় না।

বলতে পারেন অচেতন ব্রেইন থেকে সচেতন ব্রেইনের কাছে কিছু সিগন্যাল নয়েজ আকারে আসে আর সচেতন ব্রেইন সেগুলো রিসিভ করে আর কর্টেক্স সিগন্যাল ডিকোড করে ভিজুয়াল কিছু দেখাতে শুরু করে, যার কোনই অর্থ নেই। আরেকভাবে বলতে পারেন, ব্রেইনের ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস চলার সময় দুর্ঘটনাবশত সেই সিগন্যাল থেকে আসা তথ্য গুলো আমরা দেখে ফেলি, যার কোন মাথা মুন্ডু সেন্স কিছুই নেই। তবে অনেক গবেষকগন মোটেও এই তত্ত্বের সাথে একমত নন। আর আমি প্রমাণিত, আপনি যদি ধার্মিক ব্যাক্তি হয়ে থাকেন, অবশ্যই এই তত্ত্ব গুলো বিশ্বাস করেন না!

বিভিন্ন ধর্মে স্বপ্নের গুরুত্ব

আমারা কেন স্বপ্ন দেখি এর সাংস্কৃতিক ও ধার্মিক অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। নানান ধর্মানুসারে স্বপ্নের গুরুত্ব নানানভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও এটা সায়েন্স ফোকাস করা আর্টিকেল, তারপরেও কিছু আলাদা জ্ঞান অর্জনের লক্ষে এই সংক্ষিপ্ত প্যারাগ্রাফটি যুক্ত করলাম।

প্রাচীন ইহুদীদের ধর্মের সাথে স্বপ্নের অনেক সংযোগ রয়েছে — এরা এক ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখে এবং স্বপ্নকে ঈশ্বরের বার্তা হিসেবে মনে করে। যদি ভালো স্বপ্ন দেখে তাহলে এরা এটাকে ঈশ্বরের বার্তা মনে করে আর খারাপ স্বপ্নকে খারাপ আত্মা দেখিয়েছে বলে মনে করা হয়। অনেক প্রাচীন সংস্কৃতির মতো এরাও স্বপ্নকে ঐশ্বরিক বার্তা রিসিভ করার মাধ্যম হিসেবে মনে করে। অনেক খ্রীষ্টান ধর্ম অনুসারীদের মতে কেউ কেউ স্বপ্নের মাধ্যমে সরাসরি ঈশ্বরের সাথে কথা বলতে পারে।

একজন সামাজিক নৃবিজ্ঞানী Iain R. Edgar — তিনি ইসলাম ধর্মে স্বপ্নের গুরুত্ব নিয়ে অনেক গবেষণা চালান এবং তিনি দাবি করেন স্বপ্ন ইসলাম ধর্মে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার অনুসারে, ইসলামের সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মারা যাওয়ার পরে স্বপ্নই কেবল একমাত্র উপায় যেখানে মুসলমানগন ঈশ্বরের কাছ থেকে আয়াত প্রাপ্ত হয়ে পারে।

হিন্দু ধর্মানুসারে, মানুষের বেঁচে থাকার তিনটি অবস্থার মধ্যে স্বপ্ন হচ্ছে আরেকটি অবস্থা, বাকি দুইটি অবস্থা হচ্ছে যখন মানুষ হেঁটে চলে বেড়ায় এবং ঘুমিয়ে থাকা আরেকটি অবস্থা।


আমাদের কাছে কাটায় কাটায় হিসেব রয়েছে সূর্য থেকে আমাদের গ্রহের দূরত্ব কতো বা পাশের গ্যালাক্সিতে পৌছাতে কোন আলোক বর্ষ সময় লাগতে পারে, বা আমাদের নিজেদের গ্যালাক্সি কতো কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত — কিন্তু আমাদের কাছে উত্তর নেই আমরা নিজেরা কেন ঘুমাই বা কেন আমরা স্বপ্ন দেখি! হয়তো বিজ্ঞানের কাছে ভবিষ্যতে এর ১০০% সঠিক উত্তর থাকবে। অন্তত এই আর্টিকেল লেখার সময়ে আমাদের কাছে এর পরিস্কার জবাব নেই!

/Image Credit: Shutterstock

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories