আজ থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় বছর আগেও যদি আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন তবে নিঃসন্দেহে আপনার কাছে ব্লুটুথ অতি প্রিয় একটি শব্দ। কম দূরত্বের ভেতর তারহীন ডাটা আদানপ্রদান এর জন্য ব্লুটুথ একসময়কার অনেক জনপ্রিয় একটি প্রযুক্তি ছিল ; তবে কালের বিবর্তনে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে ওয়াইফাই এর মত প্রযুক্তির প্রবেশে ব্লুটুথ এর গ্রহনযোগ্যতা একটু কমে গিয়েছে।
তবে এখনও হেডফোন,স্পিকার, মাউস এর মত যন্ত্রে এই প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয় বলে এখনও ব্লুটুথ টিকে আছে। তবে ব্লুটুথ এর কার্যকারিতা এবং গ্রহনযোগ্যতাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিগত বছরের শেষের দিকে ব্লুটুথ এর সেরা আপডেটেড ভার্সন ‘ব্লুটুথ ৫.০’ রিলিজ হয়েছে। আর এই ভার্সনটি ডেভেলপ করেছে ব্লুটুথ এর ডেভেলপার গ্রুপ নাম ‘ব্লুটুথ স্পেশাল ইন্টারেস্ট গ্রুপ’, যাকে সংক্ষেপে বলা হয় ব্লুটুথ এসআইজি (Bluetooth SIG)।
তো ব্লুটুথ এসআইজি ইতিমধ্যে রিলিজ করেছিল ব্লুটুথ ভার্সন ৫.০ ; আর যাকে আমরা সাম্প্রতিক আইফোন ৮, আইফোন ১০ এবং গ্যালাক্সি এস৮ এ খুব ভালোভাবে ফিচার করা অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। ব্লুটুথ এর এই সংস্করন বা ভার্সনকে বলা হচ্ছে ব্লুটুথ এর সবচাইতে লেটেস্ট এবং গ্রেটেস্ট ভার্সন। আর আজকের আর্টিকেলে আপনি জানবেন, কেন ব্লুটুথ এর সর্বশেষ এই সংস্করনটি হয়ে উঠল গ্রেটেস্ট?
ব্লুটুথ এর সর্বশেষ কমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ড ‘ব্লুটুথ ৫.০’এ ব্লুটুথ এসআইজি ব্যবহারকারীদের এই ব্লুটুথ সম্পর্কে সকল অভিযোগ অনেক গুরুত্বের সাথে দেখেছে। এই বছরের শুরু থেকেই ওয়্যারলেস মাউস, কীবোর্ড, হেডসেট,ইয়ারবাড,স্পিকার এর মত ডিভাইসে এই নতুন স্ট্যান্ডার্ডটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিকেশন গ্যাজেটস যেমন স্মার্টহোম ডিভাইস এর মত আইওটি (ইন্টারনেট অফ থিংকস) প্রোডাক্টেও এই ব্লুটুথ ৫.০ ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ব্লুটুথ ৫ এখন আরো ব্যাটারি সাশ্রয়ী
ব্লুটুথ কে একসময় যেখানে ব্যাটারি রাক্ষস হিসেবে অবিহিত করা হত, নতুন ব্লুটুথ আপডেটে তার সেই পদবি হয়ত আর থাকছে না।
ব্লুটুথ এর ব্যাটারি সাশ্রয়তা বা এনার্জি এফিসিয়েন্সি শুরু হয় সর্বপ্রথম ব্লুটুথ ৪.০ সংস্করন এর ‘ব্লুটুথ লো এনার্জি’ ফিচার থেকে। তবে ৫.০ সংস্করনে ‘ব্লুটুথ লো এনার্জি’কে আরও উন্নত করা হয়েছে ; যার ফলে নতুন ব্লুটুথ এতদিনকার ব্লুটুথ সংস্করন থেকে অনেক বেশি বিদ্যুত তথা এনার্জি সাশ্রয়ী। যেখানে ক্লাসিক ব্লুটুথ রেডিও অনেক বেশি এনার্জি কনজিউম করত ; ঠিক সেখানে ব্লুটুথ লো এনার্জিকে ডিজাইন করা হয়েছে ইয়ারবাড, স্পিকার এর মত পোর্টেবল ডিভাইসে যেন কম ব্যাটারি খরচ করে সেজন্য।
এখন একটি ওয়্যারলেস ইয়ারবাড এর ব্যাটারি এমনিতেই ছোট, সেখানে যদি ব্লুটুথই বেশিরভাগ ব্যাটারি কনজিউম করে ফেলে তাহলে তো সেই ডিভাইস থেকে ভালো পারফর্মেন্স পাওয়া যাবে না। একইভাবে ওয়্যারলেস মাউস,কীবোর্ড এর ক্ষেত্রেও তাই। যদিও এখনও অ্যাপেল এর ওয়্যারলেস ইয়ারবাড ব্লুটুথ ৪.২ প্রযুক্তিতে চলে তবে অ্যাপেল এর ডাব্লিউ১ চিপ হওয়ার কারনে এর পারফর্মেন্স যথেষ্ঠ ভালো। তবে ইতিমধ্যে বাজারে অনেক ব্লুটুথ ৫.০ ইনেবলড ইয়ারবাড চলে এসেছে, যা কিনা অনেক কম ব্যাটারি কনজিউম করবে।
ডুয়াল অডিও
আপনি একই সাথে দুইটি অডিও সোর্সো গান বাজাতে পারবেন।
ব্লটুথ ৫.০ এর সাথে আরেকটি যে কুল ফিচার আসছে তা হল ডুয়াল অডিও। এখানে যা হবে তা হল ; আপনি আপনার একই ডিভাইস থেকে সর্বোচ্চ দুইটি স্পিকার বা হেডফোনে মিউজিক শেয়ার বা স্ট্রিম করতে পারবেন। অনেক সময় কোথায় বসে থেকে বা কোথাও যাত্রা করার সময় আপনি ও আপনার বন্ধু (/আপনার ওই) হয়ত একই হেডফোন শেয়ার করে গান শোনেন; আর এতে করে নিঃসন্দেহে আপনার একটু সমস্যা হয়। তবে ব্লটুথ ৫.০ কানেক্টিভিটি যুক্ত দুটি হেডফোন আপনারা দুজনেই কানে লাগিয়ে একই স্মার্টফোন থেকে একই মিউজিক খুবই সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবেন দুটি হেডফোনে। কেবল ইয়ারফোন বা হেডফোনেই নয় ; আপনি দুটি ব্লুটুথ স্পিকারেও একটি অডিও সোর্স থেকে মিউজিক/গান স্ট্রিমিং করতে পারবেন।স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৮ স্মার্টফোনটির দিকে নজর দিলে দেখতে পারবেন যে, এখানে স্মার্টফোনটি ব্লুটুথ ৫.০ ইনেবলড হওয়ার কারনে এটি ডুয়াল অডিও সাপোর্ট করে। অর্থাত একই স্মার্টফোন থেকে দুইটি অডিও সোর্সে মিউজিক স্ট্রিমিং করা যায়।
রেঞ্জ এবং স্পীড
ব্লুটুথ ৫ এর সুবিধাগুলো পেতে গেলে অবশ্যই মূল ডিভাইস বা স্মার্টফোন ‘ব্লুটুথ ৫’ হওয়ার পাশাপাশি এর সাথে ব্যবহৃত আনুসাঙ্গিক গ্যাজেটস ; হেডফোন,স্পিকার এসবও ব্লুটুথ ৫ সাপোর্টেড হতে হবে। যদিও একটি ব্লুটুথ ৫.০ স্মার্টফোন এবং অন্য একটি ব্লুটুথ ৪.২ ডিভাইস এর ভেতর কমিউনিকেশন অনেক ফাস্ট হবে, তবে ব্লুটুথ ৫.০ এর আসল ফিচার এর মত হবেনা। তো এরপর আপনি যখন কোনো ভালো স্মার্টফোন কিনবেন অথবা ওয়্যারলেস ব্লুটুথ ইনেবলড ডিভাইস কিনবেন খেয়াল রাখবেন তা ‘ব্লুটুথ ৫.০’ কিনা।
WiREBD এখন ইউটিউবে, নিয়মিত টেক/বিজ্ঞান/লাইফ স্টাইল বিষয়ক ভিডিও গুলো পেতে WiREBD ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুণ! জাস্ট, youtube.com/wirebd — এই লিংকে চলে যান এবং সাবস্ক্রাইব বাটনটি হিট করুণ!
Image Source: Anatoliy Cherkas on Shutterstock,GuadiLAb on Shutterstock, Magnetic mcc on Shutterstock
প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে চাই ভাইয়া এরকম সাজানো গোছানো একটি আর্টিকেল পাবলিশ দেওয়ার জন্য।
অসাধারণ লেগেছে। সাথে একটি প্রশ্ন; বর্তমানে কোন কোন ডিভাইজে এই ব্লুটুথ ৫ রয়েছে? নেক্সট যখন কোন ফোন কিনব সেখানে কি থাকতেই হবে?
নকিয়া ৮,গ্যালাক্সি এস৮, স্যামসাং এ৮, গ্যালাক্সি নোট ৮, আইফোন ১০, আইফোন ৮,ওয়ানপ্লাস ৫টি,ওয়ানপ্লাস ৬ সহ নতুন আরও ফোনে আপনি ব্লুটুথ ৫ ভার্সন পাবেন। আসল কথা নতুন ভালো ব্র্যান্ডের লেটেস্ট হার্ডওয়্যার সম্বলিত ফোনে আপনি হয়ত এই ব্লুটুথ ৫ ভার্সনটি দেখতে পাবেন। তবে অনেক চাইনিজ কোম্পানি যারা পুরাতন হার্ডওয়্যার ব্যবহার করে তাদের ফোনে নতুন ব্লুটুথ এর এই সংস্করনটি আপনি নাও দেখতে পারেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। এরকম চরম একটি আর্টিকেল উপহার দেওয়ার জন্য। গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানলাম। এখনকার কিছু ফোনে ডুয়াল ব্লুটুথ সুবিধা রয়েছে দেখেছি আসলে এটা কিসের জন্য?
ডুয়াল ব্লুটুথ না ডুয়াল অডিও? ডুয়াল অডিও মানে উল্লেখ করেছিই আপনি দুইটা অডিও সোর্স এ একই সাথে অডিও শেয়ার করতে পারবেন।
Awesome Article Dude.
Thanks!!!! Go Ahead!!!!
Thanks Dude
Does dual audio work on headphones too?
Off Course!
আপডেট ইনফরমেশন জানতে পারলাম আপনার আর্টিকেলের মাধ্যমে। থ্যাংক ইউ ভাইয়া।
You’re Welcome 🙂