গুগল ট্রাফিক গুগল ম্যাপ এর অনেক জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার। গুগল ম্যাপে গুগল নীল,হলুদ এবং লাল রং দিয়ে রাস্তা মার্ক করার মাধ্যমে রাস্তার ট্রাফিক কন্ডিশন সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেয়। আপনি যদি এখনও না জানেন আপনার গুগল ম্যাপে ট্রাফিক কিভাবে দেখবেন, সেহেতু গুগল ম্যাপ অ্যাপে প্রবেশ করুন এবং ডান পাশে নিচের দিকে Go বাটনটিতে চাপ দিয়ে আপনার গন্তব্য এর লোকেশন সেট করুন, এতে করে সেই রুটে রাস্তার ট্রাফিক কন্ডিশন সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন। আবার বামপাশে ওপরের মেনু থেকে Start Driving অপশন ব্যবহার করেও আপনি আপনার আসেপাশের রাস্তার ট্রাফিক কন্ডিশন দেখতে পারবেন। একইভাবে কম্পিউটার ও মোবাইল ডিভাইসে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে ট্রাফিক কন্ডিশন সম্পর্কে জানা যাবে। প্রথম প্রথম ঢাকা শহরের ট্রাফিক কন্ডিশন দেখানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর থেকে গুগল ট্রাফিক ফিচারটি চালু হয়। তারপর থেকে কেবল ঢাকা নয়, অন্যান্য জেলার গুরুত্বপূর্ন মহাসড়ক এর ট্রাফিক কন্ডিশনও গুগল ম্যাপে দেখা যাচ্ছে।
গুগল ট্রাফিক এর বিশাল ডাটা সংগ্রহ করছে তাদের বিশাল ইউজার প্লাটফর্ম এর ইকোসিস্টেমকে ব্যবহার করে।
আমাদের দেশে গুগল ট্রাফিক বেটা পর্যায়ে থাকার ফলে বর্তমানে কেবল ঢাকা শহরের গুগল ট্রাফিক সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিচ্ছে। অন্যান্য স্হানে ম্যাপে রাস্তার মার্কআপ এর সাথে আপনি বাস্তবিক অবস্হার মিল নাও পেতে পারেন। আজকের আর্টিকেলে আমি গুগল ট্রাফিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।
গুগল ট্রাফিকে নীল মানে বুঝায় রাস্তা যাওয়ার জন্য ভালো বা কোনো জাম নেই, হলুদ বলতে বোঝায় গাড়ি জ্যাম এর কারনে আস্তে যাচ্ছে এবং লাল বলতে বোঝায় একদম জ্যাম মানে গাড়ি নড়তেই পাচ্ছেনা। এখন প্রশ্ন হল, গুগল কি স্যাটেলাইট দিয়ে গাড়ির গতিবিধি নজরে রাখছে বা কোন লোক কি নিয়োগ করে রেখেছে? উত্তর হল, না। গুগল এই কাজটি করছে তাদের বিশাল ইউজার প্লাটফর্ম এর ইকোসিস্টেমকে ব্যবহার করে।
গুগল ট্রাফিক শুরু হয় যেভাবে
সর্বপ্রথম ২০০৭ সালের দিকে গুগল ট্রাফিক চালু হয় । তার আগে গুগল ট্রাফিক তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ট্রাফিক সেন্সর এর ওপর নির্ভরশীল ছিল। সেসময় সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা গুরুত্বপূর্ণ শহরের রাস্তায় ইনফ্রারেড বা লেজার পয়েন্টিং সেন্সর ব্যবহার করা হত। যে সেন্সরটি গাড়ির আকৃতি এবং গতি নির্নয় করতে পারত। সেন্সরটি তার প্রাপ্ত তথ্য ডিজিট্যালি কনভার্ট করে বের করতে পারত রাস্তায় আসলে জ্যাম আছে কিনা। পরে একত্রিত তথ্য একটি মেইন সার্ভারে জমা হত।
তবে এই সিস্টেমে ট্রাফিক তথ্য সংগ্রহ করা গুগলের জন্য তেমন ফলপ্রস্যু হয়নি। গুগল তখন ইতিমধ্যে জিপড্যাস নামক একটি ট্রাফিক অ্যানালাইসিস কোম্পানি কিনে রেখেছিল। এবার গুগল জিপড্যাস এর প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করে। আর এই প্রযুক্তিটিই ছিল জিপিএস ব্যবহার করে ট্রাফিক তথ্য সংগ্রহকরন। গুগল মোবাইল ফোন এর জিপিএস থেকে প্রাপ্ত ফলাফলকে অ্যানালাইজ করে ট্রাফিক রেজাল্ট তৈরি করতে শুরু করে।
গুগল ট্রাফিক যেভাবে তথ্য সংগ্রহ করে

গুগল ম্যাপ রাস্তার দুরত্ব মাপার সময় অনেকসময় মোবাইল বা সেলুলার টাওয়ার এর ওপর নির্ভরশীল। ট্রাইল্যাটেরেশন নামক বিশেষ এক জ্যামিতিক প্রক্রিয়ায় দু থেকে তিনটি সেলফোন টাওয়ার এর মাঝের অবস্হান এগুলোর দুরত্ব ইত্যাদি মাপা যায়। এরকম একটি সিস্টেমে গুগল রাস্তার দুরত্বও বের করে থাকে।

গুগল ট্রাফিক এর ট্রাফিক সম্পর্কিত সকল তথ্য আহরন করার প্রধান মাধ্যম হল সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা শতকোটি সক্রিয় মোবাইলফোন। প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে গোপনে গুগলের কাছে তথ্য চলে আসে। গুগল ট্রাফিক মূলত এতসব মোবাইল ফোনের তথ্যের ক্রাউড সোর্সিং রিপোর্টকে অ্যানালাইস করে ট্রাফিক রেজাল্ট তৈরি করে । গুগল এখানে জিপিএস ব্যবহার করে আপনার রিয়েল-টাইম অবস্হান এবং গতি নির্নয় করে। এভাবে আপনার মত আরও অনেক মোবাইল এর জিপিএস থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে একত্র করে গুগল সেই এলাকার ট্রাফিক এর খুবই ভালো একটি আইডিয়া পেয়ে যায়।

যখন কোনো রাস্তায় একাধিক জিপিএস ডিভাইস থেমে থেমে যাবে , তখন গুগল সেই রাস্তাতে হাল্কা জ্যাম আছে বলে মনে করে নেবে । আবার একইভাবে যখন কোনো রাস্তায় একাধিক জিপিএস ডিভাইস একদম থেমে থাকবে , গুগল সেই রাস্তাকে লাল রঙ এ মার্ক করবে মানে পুরোপুরিভাবে জ্যাম ।
কেন সব জায়গায় গুগল ট্রাফিক কাজ করে না
কেন শহর থেকে ক্রাউড সোর্সিং এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমান তথ্য পাওয়ার মাধ্যমেই গুগল সেই এলাকার জন্য একদম সঠিক ট্রাফিক অবস্হা গুগল ম্যাপে চিত্রায়িত করতে পারবে। যখন গুগল কোন শহর থেকে বা কোন রাস্তা থেকে কোন এত মোবাইল ডিভাইস থেকে জিপিএস সিংনাল এবং তাদের গতি ইত্যাদি তথ্য পায় না, তখন গুগল সেই শহরের রাস্তাগুলোকে নীল,হলুদ কিংবা লাল এর বদলে ধূসর দেখায়। অর্থাত কোনরূপ তথ্য সেই রাস্তার জন্য নেই।
তবে যে শহরগুলোতে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস খুব ভালোভাবে চালু রয়েছে সেসব এলাকায় গুগল ট্রাফিক অনেক বেশি এবং সঠিক ফলাফল প্রদান করে থাকে। এর কারন হলো রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের ক্ষেত্রে সবসময় গাড়ির চালকগন মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেট এবং জিপিএস এর সাথে সংযুক্ত থাকেন। আর এখানে তিনি একাই নন তার মত আরো অনেক চালক সরাসরি প্রকৃত সময় বা রিয়েল টাইম ভিত্তিতে জিপিএস এর সাথে সংযুক্ত থাকেন। আর এখান থেকে এতগুলো সংযুক্ত ডিভাইস থেকে এদের গতির সাপেক্ষে দরত্ব অতিক্রম এর তথ্যগুলোকে গুগল একত্র করে দারুন একটি ট্রাফিক রেজাল্ট গুগল ম্যাপে প্রেরন করে থাকে।

গুগল বর্তমানে গাড়ি চালকদের জন্য বিশেষ একটি অ্যাপলিকেশন লঞ্চ করেছে। আর এই অ্যাপলিকেশনটির নাম হল ওয়েজ। ওয়েজ ব্যবহার করে যেকোন চালক চলার পথে রাস্তায় কোনো স্হানে যেকোন রকম অবস্হা সম্পর্কে অবগত করতে পারবে। যেমনঃ রাস্তায় যাওয়ার পথে চালক দেখল যে, কোন রাস্তার কোন স্হানে কন্সট্রাকশন এর কাজ হচ্ছে, সে সুন্দরভাবে ওয়েজ অ্যাপে সে স্হানে কন্সট্রাকশন মার্ক করে দিতে পারবে। একইভাবে রাস্তায় কেনো অ্যাক্সিডেন্ট হলেও সে ওয়েজ অ্যাপে সেই স্হান চিহ্নিত করে দিতে পারবে। আর এতে করে অন্যসব চালকগন আগে থেকে বুঝে যেতে পারবে যে সেখানে কি হয়েছে। বাংলাদেশে ওয়েজ অ্যাপটির প্রচলন হয়নি বিধায়, আমাদের দেশে ট্রাফিক এর ভেতর ওয়েজ থেকে প্রাপ্ত ফলাফল দেখায় না। তবে উন্নত বিশ্বে ওয়েজ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলকে একত্র করে গুগল ট্রাফিক রেজাল্ট তৈরি করে।
গুগল ট্রাফিক কি গোপনীয়তা ভঙ্গ করছে
WiREBD এখন ইউটিউবে, নিয়মিত টেক/বিজ্ঞান/লাইফ স্টাইল বিষয়ক ভিডিও গুলো পেতে WiREBD ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুণ! জাস্ট, youtube.com/wirebd — এই লিংকে চলে যান এবং সাবস্ক্রাইব বাটনটি হিট করুণ!
গুগল যখন আপনার মোবাইল থেকে ট্রাফিক তথ্য সংগ্রহ করছে, তখন এটি আপনার ট্রিপ তথা যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনার গতি, অবস্হান ইত্যাদির অপর নজর রাখছে। সুতরাং আপনি কোথায় থেকে যাত্রা শুরু করে কোথায় গেলেন গুগল সব ট্র্যাক করেছে। তবে এখানে ভয়ের কিছু নেই, কেননা গুগল এখানে আপনার এই এক্টিভিটি ট্র্যাক করছে অ্যানোনিমাস ভাবে, গুগল এখানে কেবল একটি জিপিএস ইনেবলড ডিভাইস এর রাস্তায় মুভমেন্ট বা গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে সে স্হানের ট্রাফিক অবস্হাকে জানার জন্য। সেহেতু যখন সেই জিপিএস ইনেবলড ডিভাইস ডিসকানেক্ট হয়ে যায়, সাথে সাথে সেই ডাটা সবসময়ের জন্য ডিলিট হয়ে যায়। সুতরাং গুগল আপনাকে ট্র্যাক করলেও আপনার ক্ষতির কিছু নেই , কেননা ট্র্যাকিং এর সময় এখানে কোনো ইউজার ডাটা সংগ্রহ হচ্ছে না । আশা করি আজকের আর্টিকেলটি ভাল লেগেছে , ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন । আর আপনার গুরুত্বপূর্ণ অভিমত নিচে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন ।
Awesome Vai
ধন্যবাদ ভাই
valo laglo vai. thanks.. 😀
ওয়েলকাম 🙂
greate explained via. egiye jan onek dinapnar post pai na? why??
তাই আজকে একসাথে ৩টা 😉
Thanks vai.
ওয়েলকাম ভাই
This website is more helpful than TechTunes, Tunerpage, PChelpline or another sh**t.
TecHubs is the best. TecHubs is the Legend.
আশা করি এভাবে সব সময়ই এরকম পাঁশে থেকে সাপোর্ট দিয়ে যাবেন ।
I always have my gps turned off to save battery. 😛
ঠিক চালু করারই দরকার নাই 😉
This is awesome. Ive been wondering this for a while.
:-> :->
Just Awesome Vai. Woow
I’m glad to know
অনেক কিছু জানতে পেরেছি আজকের আর্টিকেল বুম ছিল ভাই ????????????
????????
Nice Explained
☺☺
আচ্ছা ভাই একটা বিষয় ক্লিয়ার করলে ভাল হত,যেমন আমরা অনেকেই স্মার্ট ফোনে লোকেশন অফ রাখি অন্যদিকে অনেকে লোকেশন অন রাখলেও গুগলে লোকেশন শেয়ার করিনা,তো সে ক্ষেত্রে কিভাবে ডেটা কালেক্ট করে? বেশির ভাগ লোকই এমন টা করে থাকেন,তাহলে গুগল ডেটা পায় কি করে? এডভান্স থ্যাংকস।
আপনি যখন লোকেশন ট্র্যাকিং অফ করে রাখবেন , তখন গুগল ডাটা নিতে পারবে না । মুলত ‘গুগল ট্রাফিক’ সেসব জায়গায় ভাল কাজ করে যেখানে নিয়মিত মানুষ গুগল ম্যাপ ব্যাবহার করে , যেমন ঢাকা ; এখানে নিয়মিত পাঠাও ,উবার এর মত সেবা প্রতি সেকেন্ড চলছে সেই সাথে সাথে গুগল ম্যাপও ব্যাবহার হচ্ছে ; এতে করে গুগল বাই ডিফল্ট ডাটা কালেক্ট করে নিচ্ছে । অন্য দিকে দেশের মহাসড়কে হয়ত কিছু মানুষ গুগল ম্যাপ লোকেশন সহ অন করে রাখে তাই সেখানে অনেক সময় ট্র্যাফিক রেজাল্ট দেখালেও তা ৭০% ক্ষেত্রে ভুল দেখায় । আর যেসব অঞ্চলে বেশিভাগ মানুষ গুগলে লোকেশন শেয়ার করেনা সে অঞ্চলে গুগল ম্যাপ ট্রাফিকও কাজ করে না।
ভালো লাগলো অনেক ক্লিয়ার বিষয়টা বুজতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো লিখেছেন।