২১ শতকের শুরু থেকে বিষ্ফোরনের মত ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা বেড়েছে। এই গ্লোবাল ইন্টারকানেশন সিস্টেম এর জনপ্রিয়তা আবিষ্কারের ১০-১১ বছরে এতটা বেড়ে গিয়েছে যে, মানুষের একটা মৌলিক চাহিদায় পরিমত হয়েছে এটি। তবে বন্ধুরা, আজ আমি ইন্টারনেট তথা অনলাইন জগতের বিপ্লব নিয়ে নয়,বরং এর আমাদের শরীরে এর কী নেতিবাচক প্রভাব হতে পারে তা নিয়ে আলোকপাত করব। আজ থেকে ৪ বছর আগের ২০১৪ সালের পাওয়া একটি রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, কেবল আমেরিকায় প্রতিটি মানুষ মাসে গড়ে মোট ২৭ ঘন্টা ওয়েব ব্রাউজিং করে কাটায়। আর একই সালের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিটি মানুষ সারা মাস তার মোবাইল ফোনে সময় ব্যায় করে ৩৪ ঘন্টা। নিঃসন্দেহে এই কয় বছরে এই হার দ্বিগুনেরও বেশি হারে বেড়েছে, তবে আমার বর্তমান কোন রিপোর্ট জানা নেই।
এখন আমাদের প্রশ্ন হল, ঠিক কতটা ইন্টারনেট ব্রাউজিং অত্যান্ত বেশি বলে বিবেচিত হবে? অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্রাউজিং যদি আমাদের শারীরিক, মানসিক বা আবেগ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য কোনটিরও যদি খারাপের কারন হয়, তবে সময় এসেছে এই বিষয়ে ভাবার। কেননা এখান থেকে কোনো ক্ষতি যদি আমাদের হয় তবে তা কোনভাবেই ঠিক হবার নয়। আমি এই আর্টিকেলে যেসব নেতিবাচক প্রভাবের কথা আলোচনা করব, তার ভেতর যদি একটিও মনে করেন আপনার রয়েছে? তবে সময় এসেছে আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর হারকে কমিয়ে দেওয়ার।
অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর প্রভাব
টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয় এর একটি প্রতিবেদন থেকে উঠে আসে যে, একজন বহুদিন টানা ৮-১২ ঘন্টা যদি ডেক্সটপ এর সামনে বসে থাকে, তবে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া লাগতে পারে, তার শরীরে হৃদরোগ এমনকি ক্যান্সার এর মত রোগও বাসা পারে এমনকি সে ব্যাক্তি অকাল মৃত্যুরও স্বীকার হতে পারে । এমনকি সে ব্যাক্তি এসবে আক্রান্তিত হতে পারে, যথেষ্ঠ কায়িক শ্রম বা এক্সারসাইজ করার পরও। আপনি বাসায় বা অফিসে বসে বসে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করেন; এটি আপনার অত্যান্ত অভিজাত একটি স্বভাব। তবে ভয়ের কথা হল, প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যমতে আপনি প্রতিদিন যতই এক্সারসাইজ করেন না কেন; ইন্টারনেট ব্রাউজিং জনিত কারনে যদি মানব শরীরে কোন ছোট খারাপ ইম্প্যাক্ট তথা প্রভাবও যদি পড়ে, তা পরবর্তীতে কোন অবস্হাতেই প্রতিকারযোগ্য নয়। তাই অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্রাউজিং আমাদের শরীরে নানারকম চিরস্থায়ী ক্ষতিসাধন করতে পারে।
এখন অনেকে আছেন যারা চাকরি করেন বা অনেকে আছেন তাদের সারাদিন কাজ ডেক্সটপ বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকা। এদের বেশির ভাগ ৩-৫ ঘন্টা করে টানা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর সামনে বসে থাকেন । তাদের জন্য সমাধান হল আপনি স্ট্যান্ডিং ডেক্স ব্যবহার করতে পারেন, যেখানে আপনি দাড়িয়ে থেকে কাজ করবেন, এতে আপনার শরীরে স্ট্রেস অনেক কম পড়বে, এখানে আপনি টানা একনাগারে কাজ করার সাথে সাথে আপনার বডি নড়াচড়া করবে। তাছাড়া এখন চলন্ত বা ট্রেডমিল ডেক্স পাওয়া যায় ; যে ডেক্স সবসময় নড়াচড়া করানো যায়। আপনি বাসা বা অফিসে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর তাও যদি সম্ভব না হয়, আপনি বিশেষ এক সফটওয়্যার ইনস্টল করে নেবেন, যা আপনাকে ৩০ মিনিট পর পর রিমাইন্ডার দেবে। আর এতে করে ৩০ মিনিট টানা কাজের পর আপনি ৫ মিনিট করে হেটে নেবেন।
ইনসোমনিয়া
চক্ষু চিকিৎসক এবং ভিশন এক্সপার্ট ড. ট্রয় বেডিংগাউস “ডিজিটাল আই স্ট্রেইন” বিষয়ে লিখেছেন। আর এখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে টেলিভিশন, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার এর ডিসপ্লে থেকে আগত নীল রশ্মি মানব চক্ষুর দীর্ঘমেয়াদী একটি ক্ষতিসাধন করে। আর যা মানুষের রাতে ঘুম বিঘ্নিত হওয়ার জন্য দায়ী। আর এটি আইসোমনিয়া রোগের কারন। অনেকে হয়ত জানেন না ইনসোমনিয়া কি? ইনসোমনিয়া হল একটি শারীরিক সমস্যা যার ফলে আপনি রাত্রীতে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারেন না। আপনার শোয়ার আগে স্মার্টফোনের বা টিভির স্ক্রীনে সময় দেয়া রাত্রীতে ঘুম না হওয়ার কারন। আর এথেকে বোঝা যায় আপনি আইসোমনিয়া তে আক্রান্ত।
ড. বেডিংগাউস এখানে ডিসপ্লে থেকে আসা নীল রশ্মি এবং মানব শরীরের ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন এর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক খুবই সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন। এখানে রাত্রীতে এই রশ্মি যখন চোখে পড়ে, তখন আপনি দিনের মত জাগ্রত অনুভব করেন। কেননা এই আলোকে মেলাটোনিন হরমোনটি দিনের আলোর মত মনে করে। আর তাই রাতের জন্য চোখে যে স্বয়ংক্রীয়ভাবে এক ঘুমের যে ভাব তা আর থাকে না।
এই সমস্যা থেকে বাচার সহজ উপায় হচ্ছে, ঘুমানোর আগে ডিসপ্লে ডিভাইস এর দিকে তাকিয়ে থাকা থেকে বিরত থাকা। আর একান্ত দরকার পড়লে এসব ডিভাইসের এক্সপোসার লিমিট একেবারে ডাউন করে দিতে হবে। স্মার্টফোনে এবং পিসিতে নাইট মোড অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে কাজ করতে হবে। বর্তমানে স্মার্টফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশন এর এই নীল আলো প্রতিহতকারী সানগ্লাস পাওয়া যায়, আর আপনি ইচ্ছা করলে এগuলো ব্যবহার করতে পারেন।
ঘাড় এর সমস্যা
আমেরিকান একটি গবেষনা ফলাফল তথা রিপোর্ট থেকে দেখা যায় যে; মাথা কাত করে বা মাথা নিচু করে স্মার্টফোন ব্যবহার করা মানুষের ঘাড়ে অনেক বেশি স্ট্রেস বা চাপ প্রদান করে। আর এটি অনেকসময় মানুষের চিরস্থায়ী ঘাড় ব্যথা এবং ঘাড়ের সমস্যার কারনও হয়ে দাড়ায়। রিপোর্ট থেকে আরও জানা যায় যে; সাধারন মানব দেহের মাথার ওজন ১০-১২ পাউন্ড তবে অতিরিক্ত স্ট্রেস এর কারনে ৫০-৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে মাথা বেকে থাকার ফলে মানুষের ঘাড়ে মাথার ওজন ৬০ পাউন্ড এর মত মনে হয়।
আর এর থেকে বেচে থাকার সহজ উপায় হলো মাথা নিচের দিকে না বাকিয়ে, মাথা সোজা করে মোবাইল ব্যবহার করা উচিত। আর চ্যাটিং এ বেশি জোড় না দিয়ে দরকার পড়লে একটি ফোন কল করে যোগাযোগ করা উচিত। কারন চ্যাটিং এর ফলে মানুষ বহুসময় ধরে মাথা নিচে হেলে থাকে। সর্বপরি আপনার ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় হতে অবশ্যই বিরত থাকার অভ্যাস করতে হবে।
মানসিক উদ্বেগ, হতাশা এবং বিষন্নতা
বহু গবেষনা ফলাফল থেকে উঠে আসে যে; সামাজিক মাধ্যম ওয়েবসাইটগুলো অনেকাংশে মানসিক উদ্বেগ এবং বিষন্নতার কারন। আজকাল মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা এবং মানসিক আবেগের ওপর সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব বিষয়ে বহু গবেষনা চালানো হচ্ছে।
এদের ভেতর অনেক গবেষনা ফলাফল এর রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, যারা অনেক সময় সামাজিক মাধ্যমে ব্যয় করে তারা বাস্তবিক জীবনে অনেক বেশি একাকিত্ব অনুভব করে এবং তারা তাদের পরিবার, আসেপাশের মানুষের সাথে কম সময় ব্যয় করে থাকে। তবে কিছু রিপোর্ট থেকে দেখা গিয়েছে যে, মহিলারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের মানসিক স্ট্রেস লেভেল অনেক কমিয়ে থাকে।
তাছাড়াও ইন্টারনেটে সামাজিক মাধ্যমে সাইবার বুলিইং বা অনলাইন হ্যারাসমেন্ট এর স্বীকার হয়ে; যে অনেকে মানাসিক ভাবে ভেঙ্গে পরে আত্মহত্যা এর পথ বেছে নিয়েছেন , এমন ঘটনা কিন্তু নতুন নয় । তরুণদের ক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমে নতুন সম্পর্ক তৈরি হওয়া যেমনটি সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে , তেমনি সামাজিক মাধ্যম এর কল্যাণে তা খুবই সহজেই ভেঙ্গেও যাচ্ছে । যা মনে অনেক বড় মানসিক বিষন্নতার এবং হতাশা সৃষ্টি করছে। বাস্তবিক জীবনে এর প্রভাব অনেক ভয়ংকর ।
আজকের আর্টিকেলে আমি ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর ফলে আমাদের দেহে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলকপাত করেছি । হতে পারে এসকল নেতিবাচক সমস্যা শারীরিক, মানসিক বা আবেগ সংক্রান্ত । আপনি যদি মনে করেন এর ভেতর যেকোনো একটিও আপনার ভেতর রয়েছে ; তাহলে নিসন্দেহে আপনার মধ্যে ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর খারাপ প্রভাব কাজ করছে । আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানান ,আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব । আশা করি লেখাটি ভালো লেগেছে ; ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন ,আর এভাবেই থাকবেন ওয়্যারবিডি এর সাথে ।
WiREBD এখন ইউটিউবে, নিয়মিত টেক/বিজ্ঞান/লাইফ স্টাইল বিষয়ক ভিডিও গুলো পেতে WiREBD ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুণ! জাস্ট, youtube.com/wirebd — এই লিংকে চলে যান এবং সাবস্ক্রাইব বাটনটি হিট করুণ!
Featured Image/by Ahmed Aqtai from Pexels , Image by Pixabay from Pexels ,Image by Kat Smith from Pexels
????????????
🙁 🙁
দিনে ১৭\১৮ ঘন্টয় পিসির সামনে দিন চলে যায় । আর নেট দুনিয়ায় আমার এক জীবনের অংশ, এটি এক মুহুর্তের জন্য বন্ধ থাকলে বিষন্নতা লাগে আমার । আর এসব ব্যবহারে লাইফটা চাঙা হয়ে উঠে ও উভবক করি, আর মনের মধ্যে হতাশা এবং বিষন্নতা থাকলে সেগুলি দুর হয়ে যায় ☺
কিভাবে সম্ভব ? আপনি এলিয়েন মনে হয় :-0
এ কি সুনালেন ভাইয়া? আমার তো দিনে ১০ ঘণ্টা ইন্টারনেট আর কম্পিউটারের সাথেই কাটে।
ভাই টানা ২- ২.৩০ ঘণ্টার বেশি পিসির সামনে থাকা উচিত নয়। অবশ্যই মাঝে ৩০ মিন… ব্রেক নিবেন ।
@তুলিন
নিজের জীবন নিজেই নষ্ট করতেছেন।
মতামত এর জন্য ধন্যবাদ ।
Voyanok Kahani to vaya???
জি ভাইয়া
onek valo laglo article ti onek janar bisoy chilo. protteker jana dorkari egulo. thanks for share.
Bhai Windows 10 Home install kre6i media creation tool use kre. Activation avoid kre use kr6i but Night Light feature turn on krte par6i na… ek2 help krben plz…
Activation Avoid Korle Onek Feature Limited Hoye jay
This is a great article .
ভালো ইনফরমেশন ছিল। থাঙ্কস ভাইয়া।