স্যারাউন্ড সাউন্ড ফরম্যাট গাইড!

আপনার বাসায় হোম থিয়েটার আছে? থাকলে আজকের পোষ্টটি আপনার বেশ কাজে দিবে। হোম থিয়েটারে আমরা অডিও শোনার জন্য বেশ চমৎকার একটি প্রযুক্তি উপভোগ করি যার নাম স্যারাউন্ড সাউন্ড (surround sound)। এই আর্টিকেলে, হোম থিয়েটারে ব্যবহৃত স্যারাউন্ড সাউন্ড ফরম্যাট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। কোন ফরম্যাটটি আপনার হোম থিয়েটারে ব্যবহার করলে আপনি আরো চমৎকার সাউন্ড সিস্টেম উপভোগ করতে পারবেন!

আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনার হোম থিয়েটারে কোন ফিচারের সাউন্ড ফরম্যাট ইন্সটল দেওয়ার রয়েছে সে ব্যাপারে ধারণা লাভ করতে পারবেন।  তো চলুন দেখে নেই স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমে ব্যবহৃত ফরম্যাটগুলোকে!


Audyssey DSX

স্যারাউন্ড সাউন্ড প্রসেসিং এর একটি ফরম্যাটের নাম হচ্ছে Audyssey DSX (Dynamic Surround Expansion) । এই ফরম্যাটটি ২,৫ এবং ৭ চ্যানেল সাউন্ডট্রাকের জন্য বেশ উপযুক্ত। এই ফরম্যাটি সামনের দিকের ভার্টিক্যাল-হাইট স্পিকারস, বাম-ডানের ওয়াইড স্পিকারস এবং স্যারাউন্ড বাম-ডানের স্পিকারগুলোকে সার্পোট করে। এই Audyssey DSX ফরম্যাটে কোনো কনটেন্ট এনকোড করা থাকে না বরং যে হোম থিয়েটারে এই ফরম্যাটটি সার্পোট করে সেটায় একটি রিসিভার থাকে যা এই কনটেন্ট থেকে সাউন্ডগুলোকে এনালাইজ করে স্পেসিফিক স্পিকারগুলোতে সঠিক মানের সাউন্ড ছড়িয়ে দিয়ে থাকে।

তবে Audyssey DSX ফরম্যাটের সম্পূর্ণ মজা নিতে চাইলে আপনার চাই একটি ৯.১ চ্যানেলের হোম থিয়েটার যেটার রিসিভার এই ফরম্যাটটি সার্পোট করে। তবে আপনি ৭.১ চ্যানেলেও এই ফরম্যাটি ম্যানুয়াল ভাবে কনফিগারেশন করে নিতে পারেন।

Auro 3D Audio

হোম থিয়েটার স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের সবথেকে কনিষ্ঠ ফরম্যাট হচ্ছে এই Auro 3D Audio ফরম্যাটটি। তবে এই ফরম্যাটটি সেটআপ করা অনান্য ফরম্যাটের থেকে বেশ কঠিন এবং কমপ্লেক্স। কিছু কর্মাশিয়াল সিনেমার প্লেব্যাক সিস্টেম হিসেবে Barco Auro 11.1 চ্যানেল স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, আর এই Barco Auro 11.1 এর কনজিউমার ভার্সন হচ্ছে Auro 3D Audio ফরম্যাট। হোম থিয়েটার সেক্টরে Auro 3D Audio ফরম্যাটটি সরাসরি Dolby Atmos এবং DTS:X ফরম্যাটগুলোর সাথে প্রতিযোগীতা করে থাকে।

স্পিকার সেটআপ করার দিক থেকে এই ফরম্যাটি ৫.১ চ্যানেল স্পিকার লেয়ার থেকে শুরু হয়, আর তারপর থাকে subwoofer এবং এই স্পিকার লেআউটের উপরেও আরেকটি ফ্রন্ট এবং স্যারাউন্ড স্পিকার বসানো থাকে। মানে এখানে দুটি লেয়ারের স্পিকার থাকবে যা level 1 এবং level 2 হিসেবে বলা হয়ে থাকে।

লেভেল ১ হচ্ছে ৫.১ চ্যানেল (front left, center, front right, left surrond, right surrond এবং subwoofer), অন্যদিকে লেভেল ২ তে থাকে Height Layer চ্যানেল (front left, center, front right, left surrond, right surrond) । আর এই দুটি চ্যানেলের সেটআপের জন্য এই ফরম্যাটি আপনি ৯.১ চ্যানেল স্পিকার সেটআপে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই ফরম্যাটের সম্পূর্ণ স্বাদ পেতে হলে আপনার দেয়ালের সিলিংয়ে (আপনি যেখানে বসবেন তার একদম উপরে) একটি আলাদা ceiling mounted speaker বসাতে হবে; একে বলা হয় VOG channel (Voice of God) ।

তাহলে এই ফরম্যাটে টোটাল স্পিকারের সংখ্যা দাড়ায় ১০টিতে।  Auro 3D Audio হচ্ছে ডেকোডিং এবং প্রসেসিং ফরম্যাট দুটোই। একটি blue-ray Disc বা অন্য কোনো কনটেন্টে যদি Auro 3D audio দ্বারা এনকোডেড করা থাকে আর আপনার হোম থিয়েটারের রিসিভারে যদি সঠিক ডিকোডার থাকে তাহলে সরাসরি এর সিস্টেমের স্বাদ আপনি গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও এই ফরম্যাটে রয়েছে মিক্সার সিস্টেম, এর মাধ্যমে আপনি স্ট্যান্ডার্ড 2,5 এবং 7 চ্যানেল কনটেন্টে এই Auro 3D Audio কে ব্যবহার করতে পারবেন। বর্তমানে এই ফরম্যাটকে আপনি নির্দিষ্ট কিছু হাই এন্ড হোম থিয়েটারে পাবেন যেগুলোতে Av preamp প্রসেসর রয়েছে।

Dolby Atmos

স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম হিসেবে Dolby Atmos কে ২০১২ সালে বাজারে আনা হয়, তখন মূলত এটি ছিলো কর্মাশিয়াল সিনেমা সাউন্ড ফরম্যাট যেটা ৬৪টি চ্যানেল পর্যন্ত স্পিকার সার্পোট করতো। একটি কমপ্লিট স্যারাউন্ড স্যাউন্ড সিস্টেম এই Dolby Atmos আপনাকে দিতে পারবে। হোম থিয়েটার সিস্টেমে ব্যবহারের ক্ষেত্রে Dolby Atmos ফরম্যাটকে আপনি নির্দিষ্ট Blu-ray এবং Ultra HD Blu-ray ডিস্কে পাবেন।

আর এই ফরম্যাটটি ব্যবহার করতে হলে আপনার চাই নুন্যতম ৭ চ্যানেলের স্পিকার সিস্টেম যেটায় Dolby Atmos enable রিসিভার রয়েছে । তবে বেষ্ট স্বাদ নিতে হলে ওই উপরের সিলিং স্পিকারযুক্ত হোম থিয়েটার আপনার দরকার হবে। Dolby Atmos টেকনোলজিতে ব্যবহার করা হয়েছে Spatial Coding সিস্টেম। এই সিস্টেমে স্পিকারের অবস্থানের থেকে একটি অবজেক্টকে টার্গেট করে সাউন্ড ডেলিভার দেওয়া হয়ে থাকে।

Dolby Digital, Dolby Digital EX, Dolby Digital Plus

Dolby Digital decoder যুক্ত একটি রিসিভারের অডিও সিগন্যালকে ডিজিটালভাবে এনকোড করার জন্য এই Dolby Digital ফরম্যাটটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমাদের বাজারে Dolby Digital কে সাধারণত ৫.১ চ্যানেল স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বাজারে গিয়ে ৫.১ চ্যানেলের হোম থিয়েটার কেনার সময় দোকানাীর কাছে Dolby Digital কথাটি বা টার্মটি আপনি শুনতেই পারেন। তবে এখানে ভূল বিষয়টি হচ্ছে Dolgy Digtal হচ্ছে একটি অডিও সিগন্যাল ডিজিটালভাবে এনকোডিং করার সিস্টেম, এটা কোনো স্পিকার চ্যানেল নয়। তাই Monophonic,২ চ্যানেল, ৪ চ্যানেল কিংবা ৫.১ চ্যানেলেও ডলবি ডিজিটাল ফরম্যাটি থাকতে পারে। তবে মোস্ট কমন অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে Dolby Digital 5.1 কে সাধারণত Dolby Digital নামে রেফার করা হয়ে থাকে।

Dolby Digital EX হচ্ছে এমন একটি ফরম্যাট যা ওই Dolby Digital 5.1 এর উপর ভিক্তি করে নির্মিত হয়েছে। এই ফরম্যাটটি Dolby Digital 5.1 এর পেছনে আরেকটি তৃতীয় স্যারাউন্ড চ্যানেল এড করে থাকে। এর জন্য এই ফরম্যাটটি ব্যবহার করতে হলে আপনার চাই একটি এক্সট্রা amplifier এবং A/V Surround Receiver য়ে চাই একটি স্পেশাল ডেকোডার

Dolby Digital Plus হচ্ছে এমন একটি ফরম্যাট যা ওই Dolby Digital 5.1 সিস্টেমকে সর্বোচ্চ ৭.১ চ্যানেল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। মানে হচ্ছে এই সিস্টেমে আপনি বামে এবং ডানে এক্সট্রা surround back স্পিকার জোড়া হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। Dolby Digital এবং EX সাউন্ড সিস্টেমটি আপনি DVD, Blu-Ray Dics এবং কিছু স্ট্রিমিং কনটেন্ট সার্ভিসে পাবেন, অন্যদিকে Dolby Digital Plus ফরম্যাটকে আপনি শুধুমাত্র Blu-ray এবং কিছু স্ট্রিমি কনটেন্টে পাবেন।

Dolby Pro Logic, Prologic II এবং IIX

২টি চ্যানেল কনটেন্টগুলোতে Dolby Pro Logic ফরম্যাটটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখানে সেন্টার চ্যানেল এবং রেয়ার (rear) চ্যানেল থাকে। সেন্টার চ্যানেলে কোনো মুভি সাউন্ডট্রাকের ডায়ালগগুলোকে ফোকাস করা হয় এবং রেয়াল চ্যানেলের স্পিকারগুলোতে monophonic signal পাস করা হয়; যার মাধ্যমে rear-to-front এবং side-to-front মোশনগুলো এবং সাউন্ড প্লেসমেন্ট সঠিক ভাবে করা হয়ে থাকে।

Dolby Pro Logic II হচ্ছে একটি স্যারাউন্ড সাউন্ড প্রসেসিং টেকনোলজি যা Jim Fosgate এবং Dolby Labs দুটি মিলে একত্রে তৈরি করেছে। এই ফরম্যাটটি ২ চ্যানেল এবং ৪ চ্যানেল যুক্ত হোম থিয়েটার সিস্টেমে “simulated” 5.1 চ্যানেল স্যারাউন্ড সিস্টেম তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সরাসরি 5.1 সিস্টেমের স্বাদ না পেলেও আপনি এতে 5.1 এর কিছু ফিচার উপভোগ করতে পারবেন।

অন্যদিকে Dobly Pro Logic IIx হচ্ছে Dolby Pro-Logic II সিস্টেম একটি “enhanced” ভার্সন। এখানে আরো অতিরিক্ত দুটি ব্যাক চ্যানেল যুক্ত করে একে 7.1 চ্যানেল স্যারাউন্ড সাউন্ড প্রসেসিং সিস্টেম হিসেবে বানানো হয়েছে।

Dolby Pro Logic IIz

Dolby Atmos স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের একটি উন্নত সংস্করণ হচ্ছে এই Dolby Pro Logic IIz । atmos এর মতোই pro logic IIz সিস্টেম ব্যবহার করার জন্য কনটেন্টকে কোনো স্পেশাল এনকোডের ব্যবহার করতে হয় না। তাই  এই সিস্টেমকে আপনি ২, ৫ বা ৭ চ্যানেলের সোর্সে ব্যবহার করতে পারবেন।

এই সিস্টেম আপনি বাম এবং ডান দিকের মেইন স্পিকারের সাথে দুটি এক্সট্রা ফ্রন্ট স্পিকার লাগানোর সুযোগ পাবেন। এতে হোম থিয়েটারে আপনি rain, helicopter, plane flyover ইফেক্টসগুলো পেয়ে যাবেন। Dolby Pro Logic IIz সিস্টেমটি ৫.১ বা ৭.১ চ্যানেল সেটআপের সাথে ব্যবহার করতে পারবেন আপনি।

Dolby TrueHD

Dolby TrueHD হচ্ছে একটি হাই ডেফিনেশন ডিজিটাল ভিক্তিক স্যারাউন্ড সাউন্ড এনকোডিং ফরমেট যেটি স্যারাউন্ড ডিকোডিংয়ের জন্য ৮ চ্যানেল পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেম সার্পোট করে। আগে HD-DVD গুলোতে এই TrueHD ফরম্যাটটি পাওয়া যেতে কিন্তু বর্তমানে আপনি একে Blu-ray Disc এবং অনান্য compatible প্লেব্যাক ডিভাইসে পাবেন। এটি সাধারণত HDMI কানেক্টশন ইন্টারফেসের মাধ্যমে ডেলিভার করা হয়ে থাকে।

Dolby Virtual Speaker

মাত্র দুটি স্পিকার এবং একটি subwoofer সিস্টেমে প্রায় একুরেট স্বাদের স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম উপহার দেবার জন্য এই Dolby Virtual Speaker ফরম্যাটটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটিকে আপনি সাধারণ মানের সাউন্ড সিস্টেমেও ব্যবহার করতে পারেন।

DTS Digital Surround

DTS হচ্ছে একটি ৫.১ চ্যানেল এনকোডিং এবং ডিকোডিং স্যারাউন্ড সাউন্ড ফরম্যাট যেটা প্রায় Dolby Digtal 5.1 এর মতো। কিন্তু Dolby Digital 5.1 এর চাইতে DTS এনকোডিং প্রসেসে কম কমপ্রেস ব্যবহার করে বিধায় অনেকেই মনে করেন যে শব্দ শোনার ক্ষেত্রে  DTS বেশ ভালো রেজাল্ট দেয়। DTS সিস্টেম কে উপভোগ করতে হলে আপনার চাই বিল্ট ইন DTS ecoder যুক্ত হোম থিয়েটার বা preamplifier এবং DTS pass-through যুক্ত সিডি বা ডিভিডি প্লেয়ার।

DTS 96/24

DTS 5.1 এর আলাদা একটি ভার্সন হচ্ছে এই DTS 96/24। এখানে DTS এর স্ট্যান্ডার্ড 48kHz স্যাম্পল রেটের জায়গায় 96kHz স্যাম্পল রেট ব্যবহার করা হয়। এবং স্ট্যান্ডার্ড ১৬ বিট depth এর স্থানে ২৪ বিটরে depth ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই ফরম্যাটটি আপনি অধিকাংশ হোম থিয়েটারে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে আপনার হোম থিয়েটারটি যদি এই ফরম্যাটটি না সার্পোট করে তাহলে চিন্তার কিছু নেই আপনি স্ট্যান্ডার্ড ১৬ বিট এবং 48kHz স্যাম্পল রেট ব্যবহার করতে পারবেন।

DTS Circle Surround এবং Circle Surround II

Dolby Digital এবং DTS সরাসরি ডাইরেক্টশনাল পদ্ধতিতে স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম আমাদের কে উপহার দিয়ে থাকে, মানে স্পিকারগুলো যেদিকে মুখ করে সেটআপ করা থাকবে স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম সেদিকেই ফোকাস করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে Circle Surround একটু আলাদা ভাবে কাজ করে, এটা sound immersion এর উপর ফোকাস করে থাকে। Circle Surround ফরম্যাটে একটি নরমাল ৫.১ সোর্সকে এনকোড করে ২টি চ্যানেলে নিয়ে আসা হয়. তারপর একে আবারো ৫.১ সোর্সে রি-ডেকোড করে ৫টি স্পিকার (এবং subwoofer) য়ে ডিস্ট্রিবিউট করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে ডাইরেক্টশনাল সিস্টেমে আরো উন্নত মানের immersive sound সিস্টেম উপভোগ করা যাবে।

অন্যদিকে Circle Surround II হচ্ছে Circle Surround এর এনহান্সমেন্ট। এখানে হোম থিয়েটারের মাঝখানে একটি এডিশনাল rear center channel যুক্ত করে দেয়; যেখান থেকে anchor sounds ফিচারটি আমরা উপভোগ করতে পারি।

DTS-ES

দুটি ৬.১ চ্যানেলে স্যারাউন্ড এনকোডিং এবং ডিকোডিং সিস্টেম DTS-ES Matrix এবং DTS-ES 6.1 Discrete ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই ফরম্যাটি বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে তাই এর ব্যাপারে আর বেশি কিছু বললাম না।

DTS-HD Master Audio

অনান্য স্ট্যান্ডার্ড ডিটিএস ফরম্যাটের থেকে উচ্চতর ডাইনামিক রেঞ্জ, বৃহৎ ফ্রিক্রোয়েন্সি রেন্সপন্স এবং উচ্চতর স্যাম্পল রেট দিয়ে থাকে এই DTS-HD Master Audio ফরম্যাটটি। এটি সবোর্চ্চ ৮ চ্যানেলের স্যারাউন্ড ডেকোডিং কে সার্পোট করে থাকে। বর্তমানে Blu-ray Disc য়ে আপনি অনান্য ফরম্যাটের সাথে এই DTS-HD Master Audio ফরম্যাটকেও পেয়ে যাবেন।

এই ফরম্যাটটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনার প্রথমে চাই এই ফরম্যাট যুক্ত একটি Blu-ray Dics বা অন্য মিডিয়া ফরম্যাট আর ডেলিভার দেওয়ার জন্য চাই বিল্ট ইন DTS-HD master audio ফরম্যাটে ডেকোডার যুক্ত একটি হোম থিয়েটার রিসিভার যেটি আপনাকে HDMI কানেক্টশন ইন্টারফেস দিয়ে এই ফরম্যাটটির সাউন্ড উপহার দিবে।

DTS Neo:6

এই ফরম্যাটটি Dolby Prologic II এবং IIx এর মতোই কাজ করে থাকে। আপনার হোম থিয়েটারে যদি এই ফরম্যাটের রিসিভার থাকে তাহলে এখানে আপনি ৬.১ চ্যানেলের স্পিকার সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। মানে হচ্ছে এই ফরম্যাটের সাউন্ড সিস্টেমটির চ্যানেলগুলো হবে এরকম front, center, right, left surround, right surround এবং center back। উল্লেখ্য যে ৬.১ চ্যানেলের ফরম্যাট হওয়া সত্বেও DTS Neo:6 সিস্টেমে আপনি center back channel কে দুটি আলাদা স্পিকারে বিভক্ত করে নিতে পারবেন।

DTS Neo:X

এই ফরম্যাটকে DTS মূলত Dolby এর ProLogic IIz এবং Audyssey এর DSX সাউন্ড সিস্টেমের প্রতিযোগী ফরম্যাট হিসেবে বাজারে এনেছিলো। DTS Neo:X হচ্ছে একটি ১১.১ চ্যানেল স্যারাউন্ড সাউন্ড ফরম্যাট।  ১১.১ সাউন্ড ফিল্ডের জন্য এই ফরম্যাটটি ব্যবহার করতে হলে আপনার আলাদা কোনো মিক্সিং করতে হবে না।

অন্যদিকে এই ফরম্যাটকে আপনি ৯.১ এবং ৭.১ চ্যানেলেও ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য কিছু ৭.১ এবং ৯.১ চ্যানেলযুক্ত হোম থিয়েটারে আপনি এই DTS Neo:X ফরম্যাটকে পেয়ে যাবেন। ৭.১ এবং ৯.১ থিয়েটারে আলাদা এক্সট্রা সাউন্ড ইফেক্ট যুক্ত করলে এটা দিয়ে ১১.১ এর সাউন্ডের স্বাদ আপনি পাবেন না।

DTS:X

মূলত থ্রিডি স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের জন্য এই DTS:X ফরম্যাটটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মানে হচ্ছে আপনার যতগুলোই স্পিকার থাকুক না কেন, এই ফরম্যাটে আপনি স্পিকারভিক্তিক সাউন্ডের থেকে থ্রিডি সাউন্ড বেশি পাবেন। এই থ্রিডি সাউন্ড ইফেক্ট যদি আপনি আগে কখনো শুনে না থাকেন তাহলে এই পোষ্টে এটা লিখে আপনাকে বোঝানো সম্ভব নয়।

এই ফরম্যাটটি ব্যবহার করার আলাদা কোনো নির্দিষ্ট স্পিকার লেআউট ব্যবহার করতে হয় না, যেসকল হোম থিয়েটার রিসিভাবে Dolby Atmos দেওয়া থাকে সেখানে আপনি এই DTS:X ফরম্যাটটিও পেয়ে যাবেন। তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে এই ফরম্যাটি কাজ করার জন্য আপনার চাই এই ফরম্যাটের এনকোডযুক্ত Blu-ray বা Ultra HD Blu-ray ডিস্ক।

DTS Virtual:X

কোনো ফরম্যাটে ভার্চূয়াল কথাটি লেখা থাকলেই বুঝে নিবেন যে অতিরিক্ত স্পিকার ছাড়াই এই ফরম্যাটটি আপনাকে উচ্চতর সাউন্ড সিস্টেমের মজা দিতে পারবেন। DTS Virtual:X হচ্ছে সেরকমই একটি স্যারাউন্ড সাউন্ড প্রসেসিং ফরম্যাট; এখানে অতিরিক্ত স্পিকারের সাহায্য ছাড়াই আপনি height / overhead সাউন্ডফিল্ড প্রজেক্ট উপভোগ করতে পারবেন। এই ফরম্যাটে একটি কমপ্লেক্স (মানে খুবই জটিল) এলগোরিদম ব্যবহার করা হয়েছে এমন ভাবে যে, এই ফরম্যাটে সাউন্ড শুনলে আপনার মনে হবে আপনার কান আর আপনার কাছে নেই! এটা এখানে লিখে আপনাকে বোঝানো যাবে না (দুঃখিত)।

তবে বাস্তব ফিজিক্যাল Height স্পিকারের আসল মজা আপনি এই ভাচূর্য়াল ফরম্যাটে স্বাভাবিক ভাবেই পাবেন না। এই ফরম্যাটটি মূলত ক্ষেত্রবিশেষ সাউন্ডবারে ব্যবহার করা হয়ে থাকলেও এটাকে আপনি হোম থিয়েটারেও ব্যবহার করতে পারবেন। একে আপনি two-channel stereo এবং multi-channel স্যারাউন্ড সাউন্ড সোর্স কনটেন্টে ব্যবহার করতে পারবেন।


পোষ্টের আগেই বলে নিয়েছি যে যাদের হোম থিয়েটার রয়েছে তাদের জন্য আমার আজকের পোষ্টটি বেশ কাজের। আর যাদের নেই তারা এই স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমের ফরম্যাটগুলোর সম্পর্কে বেসিক ধারণা পেয়েছেন বলে আমি আশা করবো। আর সেটা যদি না হয় তাহলে এই মধ্যম সাইজের পোষ্টটি আপনাদের অনেকেই কাছেই বোরিং লাগতে পারে!

তবে যারা হোম থিয়েটার ব্যবহার করেন বা এই ঈদে হোম থিয়েটার কিনবেন তারা আজকের এই পোষ্টটি দেখে কোন ধরণের স্পিকারে কোন ধরণের সাউন্ড সিস্টেম ফরম্যাট ব্যবহার করলে আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত হবে সেটা ঠিক করে নিতে পারবেন। প্রথম দিকে পোষ্টটি পড়ে বেশ ঝামেলা এবং আউলা ঝাউলা মনে হলেও সময় নিয়ে এবং ঠান্ডা মাথায় পোষ্টটি পড়লে আশা করবো দরকারী এবং সঠিক বিষয়গুলো আপনার বোধগম্য হবে।

Image: Shutterstock

About the author

ফাহাদ

Add comment

Categories