লগ ফাইল কি (LOG ফাইল)? প্রত্যেকটি সিস্টেমেই একে কেন দেখা যায়?

আপনি পিসি, ল্যাপটপ কম্পিউটার বা অ্যান্ড্রয়েড ফোন যেটাই ব্যাবহার করেন না কেন, অনেকসময় ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখবেন যে আপনি পিসির হার্ডড্রাইভে বা অনেকসময় ফোনের ফাইল ম্যানেজারে অনেকধরনের সিম্পল কিছু টেক্সটের মতো ফাইল খুঁজে পাবেন যেগুলোর নাম লগ ফাইল (Log)। আপনি নিশ্চিতভাবেই অনেকবার বিভিন্ন জায়গায় এসব লগ ফাইল দেখেছেন এবং হয়তো আপনার মনে প্রশ্নও এসেছে যে এসব লগ ফাইল আসলে কেন নিজে থেকেই জেনারেট হচ্ছে এবং কেনই বা জেনারেট হচ্ছে, এর কাজই বা কি?

আজকে এই লগ ফাইল নিয়েই আলোচনা করবো। এছাড়া এটাও জানবো যে আপনি লগ ফাইল কিভাবে ওপেন করতে পারবেন আপনি, আর ওপেন করে লাভই বা কি।


সহজ ভাষায় বলতে হলে লগ হচ্ছে একটি ফাইল এক্সটেনশন। যেমন mp3 একটি ফাইল এক্সটেনশন, jpg একটি ফাইল এক্সটেনশন, exe একটি ফাইল এক্সটেনশন, ঠিক তেমনি log ও আরেক ধরনের ফাইল এক্সটেনশন। log হচ্ছে সেই ধরনের সেই ধরনের ফাইলগুলোর এক্সটেনশন, যেগুলো অটোমেটিক্যালি জেনারেট হয় আপনার অপারেটিং সিস্টেম কিংবা অন্য কোন অ্যাপসের বা অন্য কোন প্রোগ্রামের কতিপয় কিছু ইভেন্টের রেকর্ড রাখার জন্য। এটা সবধরনের অ্যাপস এবং প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে না ঘটলেও অধিকাংশ প্রোগ্রামের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে।

লগ ফাইলগুলো মুলত আপনি একটি নির্দিষ্ট বা সবথেকে রিসেন্ট সেশনে কোন প্রোগ্রামে কি কি কমান্ড দিলেন এবং কি কি ডেটা ইন্টার করলেন বা রিসিভ করলেন বা সর্বোপরি ওই সেশনটিতে নির্দিষ্ট কোন প্রোগ্রামে আপনার কি কি অ্যাক্টিভিটি ছিলো, তার একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে এবং সাময়িকভাবে সেটিকে সেভ করে রাখে যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি আবার ওই প্রোগ্রামটি ওপেন করছেন এবং নতুন করে আপনার অ্যাক্টিভিটি লগ করার দরকার হচ্ছে। সবধরনের প্রোগ্রাম লগ ফাইল তৈরি করেনা। শুধুমাত্র যেসব প্রোগ্রাম মনে করে যে এখানে আপনার অ্যাক্টিভিটির রেকর্ড রাখার দরকার আছে, তারাই লগ ফাইল তৈরি করে।

সব ধরনের প্রোগ্রাম যে একই লগ রাখে এমনটাও নয়। যেমন- আপনি আপনার পিসির ফাইল ব্যাকআপ করার কোন প্রোগ্রাম ব্যাবহার করলে প্রোগ্রামটি ব্যাকআপ করার সময় কি কি ব্যাকআপ করলো এগুলোর একটি লগ বা রেকর্ড রাখতে পারে এবং সেই অনুযায়ী লগ ফাইল তৈরি করতে পারে। আপনি যদি কোন ভিপিএন প্রোগ্রাম ব্যাবহার করেন, তাহলে সেটি লগ করে রাখতে পারে যে আপনি কোন সার্ভারে কানেক্ট করেছেন, কতক্ষনের জন্য করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। যদিও এখন অধিকাংশ ভিপিএন প্রোভাইডার ইউজার অ্যাক্টিভিটি লগ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। যাইহোক, কোন প্রোগ্রামটি কি লগ করবে তা নির্ভর করে সেই প্রোগ্রামটি কি কাজ করে তার ওপরে।

আপনি এতক্ষনে নিশ্চই নিজেই বুঝে গিয়েছেন যে লগ ফাইলের প্রয়োজনীয়তা কি আসলে। ধরুন আপনার পিসির কোন প্রোগ্রাম বা কোন প্রোসেস ভালোভাবে কাজ করছে না কিংবা আপনি কোন প্রোগ্রামে কিংবা কোন অ্যাপে যে টাস্কটি এক্সিকিউট করার চেষ্টা করছেন সেটি বারবার কোন কারনে ফেইল করছে কিংবা কোন ধরনের এরর শো করছে। সেক্ষেত্রে আপনার যদি লগ ফাইলগুলো নিয়ে কিছুটা আইডিয়া থাকে, তাহলে আপনি সেই সম্পূর্ন প্রোসেসটির জেনারেট হওয়া লগ ফাইলটি চেক করতে পারেন।

অনেকক্ষেত্রে লগ ফাইলটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই আপনি বুঝবেন যে আসলে আপনার এক্সিকিউট করতে চাওয়া টাস্কটি ঠিক কোন পর্যায়ে এসে ফেইল করছে। আপনি হয়তো লগ ফাইল দেখে সেই প্রবলেমটি ১০০% ফিক্স করতে পারবেন না, তবে অন্তত জানতে পারবেন যে কেন এবং কোথায় প্রবলেমটি হচ্ছে। মুলত এইটুকুর জন্যই লগ ফাইল দরকার।

লগ ফাইল কিভাবে ওপেন করবেন?

অধিকাংশ লগ ফাইল বা রেকর্ড ফাইল যেহেতু প্লেইন টেক্সট ফরম্যাটেই জেনারেট হয়ে থাকে, তাই লগ ফাইল ওপেন করার জন্য সাধারনত আলাদা কোন প্রোগ্রাম বা আলাদা কোন টুলের দরকার হয়না সাধারনত। এটি যেহেতু অনেক ক্ষেত্রে TXT ফরম্যাটেই সেভ হয়, তাই আপনি এটির ওপরে ডাবল ক্লিক করলে উইন্ডোজ এটিকে ডিফল্ট নোটপ্যাড প্রোগ্রামের সাহায্যেই ওপেন করবে।

তবে অনেকসময় দেখা যায় যে উইন্ডোজের ডিফল্ট নোটপ্যাডে টেক্সট ফরম্যাটিং ঠিক থাকে না। অনেকসময় দেখা যায় যে সব টেক্সট হোরিজন্টালি বা সব টেক্সট ভারটিক্যালি শো করে। তাই লগ ফাইল ওপেন করার জন্য নোটপ্যাড বেস্ট সল্যুশন নয়। তবে টেক্সট ভিউ এবং এডিট করার জন্য সবার পিসিতেই একটি না একটি বেটার প্রোগ্রাম ইন্সটল করাই থাকে। সেগুলোর সাহায্যেও লগ ফাইল আপনি ওপেন করতে পারবেন এবং এডিট করতে পারবেন।

মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, LibreOffice ইত্যাদি যেকোনো মডার্ন টেক্সট এডিটরের সাহায্যেই লগ ফাইল ওপেন এবং এডিট করা যায়। সেগুলোও যদি আপনার পিসিতে না থাকে, তাহলে আপনি যেকোনো ওয়েব ব্রাউজার যেমন গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স ইত্যাদি যেকোনো ধরনের ব্রাউজা ব্যাবহার করে টেক্সট ফাইলের মতোই ওপেন করতে পারবেন। তবে উইন্ডোজে নিজে থেকে জেনারেট হওয়া লগ ফাইলগুলো অ্যাক্সেস করার জন্য উইন্ডোজের নিজেরই একটি ডেডিকেটেড টুল আছে, যার নাম Event Viewer। আপনি এই টুলটি ব্যাবহার করেও উইন্ডোজের অটো জেনারেটেড লগ ফাইলগুলো দেখতে পারবেন।


এই ছিলো লগ ফাইল এবং লগ ফাইলের প্রয়োজনীয়তা। আশা করি কিছুটা হলেও ধারণা দিতে পেরেছি যে লগ ফাইল নিয়ে। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটিও আপনাদের ভালো লেগেছে। কোন ধরনের প্রশ্ন বা মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে জানাবেন।

Image: Shutterstock.com

About the author

সিয়াম

Add comment

Categories