ওয়ার্ডপ্রেস গীকঃ পর্ব ৩; ধাপে ধাপে ওয়ার্ডপ্রেস থিম এবং প্লাগইন ইন্সটল গাইড! [ফ্রী কোর্স!]

ওয়ার্ডপ্রেস গীক সিরিজের তৃতীয় পর্বে সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। সবাই যেনো ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানে, নিজে নিজে যেনো দারুন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পায় সেই প্রত্যয়ে আমাদের সিরিজের যাত্রা। বিগত দুই পর্বে আমরা আপনাদের দারুন সাড়া ও অনুপ্রেরনা পেয়েছি। সেই অনুপ্রেরনা থেকে শক্তি নিয়ে আজ ওয়ার্ডপ্রেস গীক সিরিজে তৃতীয়। এবার থেকে খুবই তাড়াতাড়ি এই ওয়ার্ডপ্রেস সিরিজের আর্টিকেল আনার চেষ্টা করব।

আর কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের টপিকে। আজ আমরা জানব ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ও ওয়ার্ডপ্রেস থীম সম্পর্কে। বিগত আর্টিকেলে আমি দেখিয়েছি কিভাবে আপনার কম্পিউটারে লোকাল হোস্ট তৈরি করে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করবেন, আরো দেখিয়েছি কিভাবেই বা সার্ভারে/ ওয়েব হোস্টিং এ ম্যানুয়ালি ও অটোমেটিক ভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করবেন। যদি না পড়ে থাকেন, অনুরোধ রইল আর্টিকেলটি আবার পড়ে আসুন।


 ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করার পর যে ইন্টারফেসটি দেখতে পান তা খুবই সাধারন একটি জিনিস। একজন নতুন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী তথা বিগেনার খুবই সহজেই  পাঁচ মিনিট ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাসবোর্ডে ঘোরাঘোরি করলে বেসিক সব অপশন গুলো বুঝে যাবে। আজকের আর্টিকেলে আমরা ওয়ার্ডপ্রেসের প্লাগিন ও থীম আসলে কি এবং কিভাবে এদের ওয়ার্ডপ্রেসে ইনস্টল করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানব।

এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ

প্লাগিন

 ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন একেক ফাংশনাবিলিটি সম্পন্ন একেকটি সফটওয়্যার। এখানে প্লাগিনকে বলতে পারি ওয়ার্ডপ্রেসের একেকটি অ্যাপ। এসব প্লাগিন এর ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে নানাবিধ নতুন ফাংশান আনা যায়। কোনো কোনো প্লাগিন ব্যবহার করা হয় ওয়েবসাইটের সুরক্ষার জন্য ; আবার কোনো কোনো প্লাগিন ব্যবহার করা হয় পাঠক/দর্শকদের সুবিধার জন্য; কোনো কোনো প্লাগিন আবার ব্যবহার করা হয় এডমিনের নানাবিধ সুবিধার জন্য। এসব ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন লেখা হয় পিএইচপি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে। এরকম নানাবিধ প্লাগিন ওয়েবসাইটের অ্যাডমিন সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাসবোর্ড এর প্লাগিন স্টোর থেকে, বা ডাউনলোড করা থেকে আপলোড করে ইনস্টল করতে পারে। আবার ওয়েব হোস্টিং ফাইল ম্যানেজারে ম্যানুয়ালি আপলোড বা এফটিপি ক্লায়েন্ট ব্যবহার করে আপলোড করতে পারবে।

থীম

এনড্রয়েড স্মার্টফোনে কাস্টম লঞ্চার ব্যবহার করলে কী হয়? ফোনের চেহারা ভেতরকার নকশা সব বদলে যায়, পাশাপাশি নতুন ফিচার যুক্ত হয়, তাই নয় কি? ঠিক একইভাবে ওয়ার্ডপ্রেসের কাস্টম টেমপ্লেট, স্টাইলশীট ও বিল্ট ইন কিছু ফিচারের সংমিশ্রন হল ওয়ার্ডপ্রেস থীম। এসব ওয়ার্ডপ্রেস থীমও সিএসএস,এইচটিএমএল এরমত মার্কআপ ল্যাংগুয়েজের সাথে পিএইচপি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে কোড করে তৈরি করা। এসব ওয়ার্ডপ্রেস থীম গঠন অনুযায়ী তিনভাগে বিভক্ত। এগুলো হলঃ

  • স্টাইল সীট বা Style.css
  • ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেট ফাইল
  • ফাংশন বা function.php

ওয়ার্ডপ্রেসে আপনি ব্যাক্তিগতভাবে এগুলো কোডিং করে মডিফাই করারও সুযোগ পাবেন। যার ফলে ডেভেলপারদের জন্য ওয়ার্ডপ্রেস খুবই পছন্দের।

ওয়ার্ডপ্রেসে একেকটি থীম আসে একেক ডিজাইনের সাথে, একেক লেআউট এর সাথে ও একেক ফিচারস এর সাথে। এখন আপনি কি রকম ওয়েবসাইট চান তার ওপর বিবেচনা করে হাজারটি ওয়ার্ডপ্রেস পেইড বা ফ্রী থীম কালেকশন থেকে আপনারটি বাছাই করে ইনস্টল করার পালা।

প্লাগিন ইনস্টলেশন

এখন আমি প্রথমে আপনাদের প্লাগিন ম্যানুয়ালি বা  এফটিপি[ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল] এর মাধ্যমে কিভাবে আপলোড করবেন তা দেখাবো। এখানে আমি প্রথমেই একটি প্লাগিন ওয়ার্ডপ্রেস ডট অর্গ থেকে ডাউনলোড করে নিয়েছি। পরে সেই ডাউনলোড করা  জিপ ফাইলটি আমি আনজিপ করে করে নিয়েছি। আমাকে এখন এই আনজিপ করা ফাইলটির ভেতর আরেকটি ফাইল আছে তাকে  আপলোড করতে হবে।

আমি এইক্ষেত্রে এফটিপি বা ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল সফটওয়্যার হিসেবে Cyberduck ব্যবহার করেছি। সাইবারডাক এর এর ইন্টারফেস এবং সচরাচর ওয়েব হোস্টিং এর সিপ্যানেলের ফাইল ম্যানেজারের ইন্টারফেস একদম একই। প্রথমে আপনার সার্ভার বা ওয়েব হোস্টিং থেকে আপনি ftp এর ইউজারনেম,লিংক পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবেন, তা দিয়ে এখন সাইবারডাক সফটওয়্যারটিকে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং একাউন্ট এর সাথে কানেক্ট করান। কানেক্ট হয়ে গেলে এবার আপনার সামনে আপনার সাভারের ফাইল ম্যানেজার ওপেন হবে। এখন  public_html ফাইলটি ওপেন করুন। তারপর  wp-content ফাইলটি ওপেন করুন। আবার সেখানে  plugins নামে আরেকটি ফোল্ডার পাবেন তা ওপেন করুন। ব্যাস এবার ওপরে আপনাকে যে ফাইলটি আপলোড করার কথা বলেছিলাম তা আপলোড করুন। আপলোড শেষ হয়ে গেলে, আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাসবোর্ডে যান, সেখানে  Plugins>Installed Plugins এ গিয়ে দেখবেন আপনার কাঙ্খিত প্লাগিনটি ইনস্টল হয়ে গিয়েছে। তবে এখনকার সময় এফটিপি ব্যবহার না করে যদি আপলোড করাই লাগে, তবে সার্ভার বা হোস্টিং এর ফাইল ম্যানেজার থেকে  আপলোড করুন।

আবার Plugins>Add New থেকে আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের প্লাগিন স্টোর থেকেও প্লাগিন বাছাই করে অটোমেটিক ইনস্টল করতে পারবেন। আবার ওপরে প্লাগিন আপলোড বাটনে চাপ দিয়ে আপনি যে প্রথমে জিপ ফাইলটি ডাউনলোড করেছিলেন, সরাসরি সেই  জিপ ফাইলটিকেই  আপলোড করে দিবেন।

থীম ইনস্টলেশন

সাইবারডাক ব্যবহার করে থীম ইনস্টলও একই। জিপ  ফাইল আনজিপ করে, আনজিপ করা ফাইলের ভেতর থাকে মেইন থীম ফাইলটি আপলোড করতে হবে। এবার আপলোড করতে হবে  public_html>wp-content>themes এই ফোল্ডারে। একই ভাবে সার্ভার বা ওয়েব হোস্টিং এর ফাইল ম্যানেজার থেকে।

আবার, ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাসবোর্ডে  Appearance>Themes এ গিয়ে আপনি ডাউনলোড করা  জিপ থীম ফাইলটি আপলোড করার মধ্য দিয়ে থীম ইনস্টলেশন কমপ্লিট করতে পারেন। আবার পাশের  সার্চ বারে সার্চ করে ওয়ার্ডপ্রেসের বিশাল ফ্রী থীমস গ্যালারি থেকে আপনার পছন্দের থীম বাছাই করে ইনস্টল করতে পারেন।


আজকের আর্টিকেলে খুবই সংক্ষেপে ওয়ার্ডপ্রেসের থীম ও প্লাগিন ইনস্টল করার প্রক্রিয়ার বর্ননা দিলাম।  একবার থীম আপলোড ও ইনস্টলেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে, আপনি Appearance>Customize বা Appearance>Theme Options থেকে থীম তথা ওয়েবসাইটের ডিজাইনের যাবতীয় সব কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন। আর হ্যাঁ, আর্টিকেলে আমি যে এফটিপি ক্ল্যায়েন্ট দেখিয়েছি, সেটা বাদেও আপনি যেকোনো ক্লায়েন্ট যেমন ফাইল জিলা ব্যবহার করেও একই ভাবে কাজ করতে পাড়বেন। অতি শীঘ্রই ওয়ার্ডপ্রেস গীক পর্ব ৪ নিয়ে হাজির হব, সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, ওয়্যারবিডিের সাথেই থাকুন।

Images: Shutterstock.com

About the author

তৌহিদুর রহমান মাহিন

Add comment

Categories