হ্যাকিং কি? | হ্যাকারের প্রকারভেদ | হ্যাকিং কি অবৈধ?

বন্ধুরা আমি জানি যে, আপনাদের মনে হ্যাকিং নিয়ে রয়েছে বহুত প্রশ্ন। আপনি হয়তো জানতে চান যে, “হ্যাকিং আসলে বৈধ না অবৈধ এবং যদি হ্যাকিং বৈধ হয় তবে কীভাবে হ্যাকার হওয়া যাবে?”। বন্ধুরা চিন্তার কোন কারন নেই, কেনোনা আজ আমি এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলে এসেছি। পোস্টটি পড়তে থাকুন, আশা করছি অনেক বিষয় আপনাদের সামনে চলে আসবে।


হ্যাকিং

বন্ধুরা হ্যাকিং এমন একটি শব্দ যা শুনতেই আমাদের মনে প্রথম কথাটি আসে, “যে ভাই কিছু তো গণ্ডগোল রয়েছে, মনে হয় অবৈধ কোন ব্যাপার ঘটছে।” কিন্তু আপনার মন্তব্যটি কি সম্পূর্ণ সত্য? হ্যাঁ সত্য তো বটেই, কিন্তু সম্পূর্ণ সত্য নয়। কেনোনা কিছু ভালো হ্যাকার রয়েছে আবার কিছু খারাপ হ্যাকার রয়েছে। এবং তাদের অ্যাকটিভিটি ভালো এবং মন্দ উভয় দিকেরই হয়ে থাকে। ছোট বেলায় আপনি হয়তো জেনেছেন যে, কিছু ভালো ভূত থাকে আবার কিছু খারাপ ভূত থাকে 😛 হ্যাকারও ঠিক একই রকমের হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হলো কে ভালো আর কে মন্দ? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে জানতে হবে হ্যাকারের প্রকারভেদ সম্পর্কে।

হ্যাকার প্রধানত তিন প্রকারের হয়ে থাকে। যারা ভালো কাজের জন্য হ্যাকিং করে তাদের বলা হয়ে থাকে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারস (White Hat Hackers)। যারা মন্দ হ্যাকার তাদের বলা হয় ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস (Black Hat Hackers)। আর যারা ভালো আর মন্দ মাঝামাঝি হয়ে থাকে তাদের বলা হয়ে থাকে গ্রে হ্যাট হ্যাকারস (Grey Hat Hackers)।

তো চলুন এবার এই তিন টাইপ হ্যাকার সম্পর্কে ভালোভাবে জানা যাক। এবং আলোচনা করা যাক, যদি আপনি কোন হ্যাকার হতে চান তো কোন প্রকারের হ্যাকার হতে পারেন তা নিয়ে।

# ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস (Black Hat Hackers)

বন্ধুরা ব্ল্যাক হ্যাট হাকারস সেই প্রকারের হ্যাকারস হয়ে থাকে যারা নিজের লাভের জন্য যেকোনো প্রকারের ক্ষতি করতে পারে। মনে করুন আমি কোন সার্ভার হ্যাক করে ফেলেছি বা কোন ডাটা লিক করে দিয়েছি এবং তার বদলে অর্থ দাবি করছি বা ব্ল্যাক মেইল করছি। তো এই অবস্থায় আমি হয়ে গেলাম একজন ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার। কেনোনা আমি নিজের ইচ্ছায় কোন প্রকারের অনুমতি ছাড়ায় কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে সেই সিস্টেম খারাপ করার চেষ্টা করেছি এবং বদলে আমার চাই টাকা বা অন্য কোন সুবিধা।

# হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারস (White Hat Hackers)

হ্যাকারসদের আরেকটি ক্যাটাগরি হলো হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারস। এই হ্যাকারসরা পরিপূর্ণ অনুমতি নিয়ে কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে শুধু এটি জানার জন্য যে সেই সিস্টেমে কোন সমস্যা রয়েছে কিনা বা সিস্টেমটির নিরাপত্তা লেভেল কতটা মজবুত। এই অবস্থায় এই হ্যাকারগন কে বলা হবে ইথিক্যাল হ্যাকারস। কেনোনা তারা পরিপূর্ণ অনুমতি নিয়ে কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে ঐ সিস্টেমকে বা ঐ কোম্পানিকে সাহায্য করার জন্য।

আপনারা হয়তো জানেন যে, যতো বড় বড় কোম্পানি রয়েছে যেমন গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক ইত্যাদি হাজার হাজার ডলার পুরস্কার প্রদান করে থাকে যদি তাদের সিস্টেমে কেউ কোন ভুল ধরিয়ে দিতে পারে তো। আপনি যদি তাদের বলেন যে, “আপনাদের সিস্টেমে অমুক কোডে সমস্যা রয়েছে।” আর তার বদলে তারা আপনাকে হাজারও ডলারে পুরস্কৃত করবে। আর তাছাড়া এই সকল কোম্পানি গুলোতে আগে থেকেই অনেক বড় হ্যাকারস টিম চাকরিও করছে।

# গ্রে হ্যাট হ্যাকারস (Grey Hat Hackers)

এই ক্যাটাগরির হ্যাকাররা কোন অর্থ উপার্জন বা কোন ব্ল্যাক মেইল করার জন্য কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে না। তারা তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে এমনি মজা করে কোন সিস্টেম হ্যাক করে। কিন্তু তারা কোন সিস্টেমে প্রবেশের জন্য অনুমতি গ্রহন করে না। এখানে যেহেতু এরা কোন ক্ষতিসাধন করতে বা অর্থ উপার্জন করতে হ্যাকিং করে না তাই এদের ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস তো বলা যায় না। আবার যেহেতু এরা অনুমতি না নিয়েই সিস্টেমে প্রবেশ করে তাই এদের হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারস ও বলা যায় না। তাই এদের বলা হয় গ্রে হ্যাট হ্যাকারস। মানে কালো আর সাদার মাঝামাঝি পর্যায়।

ইথিক্যাল হ্যাকিং

বন্ধুরা আপনি চাইলে একজন ইথিক্যাল হ্যাকার হতে পারেন। কেনোনা আজকাল ইথিক্যাল হ্যাকারসদের অনেক চাহিদা। আপনি যদি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করেন এবং আপনি যদি একজন আইটি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তবে ইথিক্যাল হ্যাকিং আপনার বেস্ট চয়েজ হতে পারে। আপনাকে কিছু কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে এবং আপনার বেসিক যদি অনেক ভালো থাকে তবে আপনি হয়ে যেতে পারেন ইথিক্যাল হ্যাকার। আপনি এই ক্ষেত্রে থেকে কোন বড় কোম্পানিকে সার্ভিস দিতে পারেন আবার আপনি ফ্রিলান্সার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। এভাবে এই ক্ষেত্র থেকে আপনি মোটামুটি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আর যদি আসি হ্যাকিং বৈধ না অবৈধ এই ব্যাপারে তবে এক কথায় ব্ল্যাক হ্যাট হাকারস এবং গ্রে হ্যাট হ্যাকারস সম্পূর্ণ অবৈধ কাজ করে। কিন্তু যেহেতু একজন হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার সিস্টেম থেকে অনুমতি নিয়ে কোন সিস্টেমে প্রবেশ করে এবং সিস্টেমকে সাহায্য করে তাই ইথিক্যাল হ্যাকিং সম্পূর্ণ বৈধ।

শেষ কথা

আপনারা যদি চান তবে পরবর্তী কোন এক পোস্টে আমি আলোচনা করতে পারি যে, কীভাবে আপনি একজন ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার হয়ে উঠতে পারবেন। হতে পারে সেখানে কিছু টিপস বা কিছু গাইড লাইন শেয়ার করবো। আপনারা নিচে কমেন্ট করে আমাকে জানাতে পারেন যে আপনারা এরকম কোন পোস্ট চান কিনা। আর তাছাড়া আশা করি আজকের পোস্টে হ্যাকিং সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছেন। সকলকে বিষয় গুলো জানিয়ে দিতে পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করুন। ভালো থাকুন 🙂

Images: Shutterstock.com

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories