বন্ধুরা চলুন আজ ফিরে যাই ১৯৭০ সালের দিকে, যখন সবচাইতে মজার বিষয় ছিল আমাদের হাতে ডিজিটাল ঘড়ি। এর আগে ধির গতির কাঁটার ঘুরে আসা থেকে সময় নির্ণয় করতাম আমরা। আর যেটাকে বলা হতো পুরাতন অ্যানালগ ঘড়ি। যাই হোক, তারপর থেকে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যাবহারের অনেক ধারণা বেড় করে ফেলেছি। বর্তমানে আমাদের ঘরের টিভি থেকে আরম্ভ করে রেডিও, মিউজিক প্লেয়ার, ক্যামেরা, সেলফোন এমনকি আমাদের পড়ার বই গুলোও হয়ে উঠেছে ডিজিটাল। তো চলুন বন্ধুরা আজ আলোচনা করা যাক অ্যানালগ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি নিয়ে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কে সর্বউত্তম। এবং সাথে অবশ্যই থাকছে বরাবরের মতো অনেক কিছুই।
আরো কিছু প্রযুক্তি পোস্ট
- ব্লুটুথ নিয়ে ৫টি ভুল ধারণা | যা থেকে আপনার বেরিয়ে আসা উচিৎ
- ৩ডি টাচ কি? | থ্রীডি টাচ | এই প্রযুক্তি কতটা সুবিধা জনক?
- এনএফসি কি? | NFC | এর সেরা ৫টি ব্যবহার
অ্যানালগ প্রযুক্তি কি?
আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি বলতে কি বুঝি? মানুষ সহজেই ডিজিটাল বলতে বোঝে যেটা কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সাধারনত ইলেক্ট্রনিক কোন কিছু, ব্যাস সিম্পল। কিন্তু সত্যি বলতে অ্যানালগ প্রযুক্তির ধারণা এ থেকে আরো বেশি বিভ্রান্তিকর—বিশেষ করে যখন কেউ এ নিয়ে সহজ ভাষায় লেখার চেষ্টা করে। তাহলে আসলে বিষয়টি কি? চলুন সহজ করে জানার চেষ্টা করি।
ভেবে দেখুন আপনার পুরাতন কাঁটা ওয়ালা হাত ঘড়ির কথা, যেখানে তিনটি কাঁটা অবিরত একটি ডায়ালের চারপাশে ঘুরতে থাকে। কাঁটার অবস্থান সময়কে পরিমাপ করে। ঘড়িটির কাঁটা কতদূর পর্যন্ত ঘুরে গেলো সে অনুসারে সরাসরি মাপা হয়ে থাকে জে কয়টা বাজে। সুতরাং যদি ঘণ্টার কাঁটা ডায়ালের দুটি অংশ অতিক্রম করে তবে সময় বেশি চলে গেছে বলে গণ্য করা হয় যেখানে একটি অংশ অতিক্রম করাকে এর চেয়ে কম সময় যাওয়া ধরা হয়ে থাকে। তো ঠিকই তো আছে তাই না? আপনি হয়তো ভাবছেন, “ভাই এই গুলো উদাহরণ দিয়ে কি বোঝাবার চেষ্টা করছেন? এটা তো একদম জানা ব্যাপার!” কিন্তু এখানেই রয়েছে আসল প্যাঁচ। এখানে পয়েন্ট হলো, ডায়ালের উপর দিয়ে কাঁটা গুলো সরানোরা করা বিগত সময় প্রকাশের একটি মাধ্যম মাত্র। কিন্তু বাস্তবিক ভাবে সময় এবং ঘড়ি কিন্তু এক জিনিষ নয়। ঘড়ি শুধু মাত্র সময় প্রদর্শনের একটি সাদৃশ্য যেটি বারবার পরিবর্তিত হয়ে নতুন পরিমাপ প্রদর্শিত করে।
অ্যানালগ সিগন্যাল অনেকটা একই ধারনার উপর কাজ করে থাকে। অ্যানালগ সিগন্যাল এমন জিনিষ যা বারবার পরিবর্তন হয়ে ডাটা প্রদর্শন করে। বন্ধুরা ভেবে দেখুন আগের এএম রেডিও অথবা সিলভার অ্যান্টেনা লাগানো টিভির কথা। এগুলো ডিভাইজ এমন সিগন্যাল ব্যবহার করে কাজ করতো যা বারবার তরঙ্গ পরিবর্তন করে সেখানে আলাদা আলাদা ডাটা নিয়ে আসতো। অ্যানালগ তরঙ্গ বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স ডায়োটের সাহায্যে সহজেই ডি-কোড হতে পারে। ইলেক্ট্রনিক্স ডায়োট আসল ডাটা গুলোকে স্ক্রীনে প্রদর্শিত করে বা স্পীকারে শব্দ হিসেবে পাঠিয়ে দেয়। যখন আপনি মাইকের সামনে কিছু বলেন তখন আপনার কণ্ঠ থেকে শব্দ বেড় হয়ে বাতাসে কম্পাঙ্কের সৃষ্টি করে এবং আপনার মাইক্রোফোন সেই কম্পাঙ্ককে ইলেক্ট্রনিক কম্পাঙ্কে পরিণত করে। আপনার কথা বলার সাথেসাথে বারবার ইলেক্ট্রনিক কম্পাঙ্কের নতুন রুপ তৈরি হয় এবং স্পীকারে সেটি পৌঁছে শব্দের সৃষ্টি করে। বন্ধুরা এটাই হলো মূলত অ্যানালগ প্রযুক্তি।
আরো কিছু প্রযুক্তি পোস্ট
- মেশিন লার্নিং | আপনি শিক্ষা দিন কম্পিউটারকে | বিস্তারিত
- গ্রাফিন | GRAPHENE | দুনিয়ার সবচাইতে শক্তিশালি ও কঠিন ধাতু
- লাইফাই কি? | Li-Fi | এটি ওয়াইফাই থেকে কতটা উন্নত?
অ্যানালগ পরিমাপ এবং তথ্য সংরক্ষন পদ্ধতি
পেছনের কয়েক দশকের আগে অর্থাৎ কম্পিউটার সম্পূর্ণভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দখলের আগে সকল প্রকারের পরিমাপ যন্ত্র গুলো ছিল অ্যানালগ প্রযুক্তির। যদি আপনার তখন কোন সার্কিটের কারেন্ট পরিমাপ করার প্রয়োজন পড়তো তবে তার জন্য রয়েছিল কাঁটা ওয়ালা কয়েল মিটার। যেখানে একটি কাঁটা নড়াচড়া করে তার অবস্থান পরিবর্তন করে কারেন্ট মাপতে সাহায্য করতো। কাঁটাটি ডায়ালের যতো বেশি অংশ অতিক্রম করতো আপনাকে ভেবে নিতে হতো ততোবেশি কারেন্ট আপনার সার্কিটে রয়েছে। তো এখানে ঐ পয়েন্টারটি হলো আপনার সার্কিটে থাকা কারেন্টের সাদৃশ্য। এরকম সকল প্রকারের পরিমাপ করার যন্ত্র গুলো একই পদ্ধতিতে কাজ করতো সেটা ওজন মাপার মিটার হোক আর গাড়ীর গতি মাপার মিটার হোক আর ভূমিকম্প পরিমাপ করার যন্ত্র হোক।
এবার কথা বলি অ্যানালগ প্রযুক্তিতে কীভাবে ডাটা সংরক্ষন করা হতো সেই ব্যাপারে। অ্যানালগ প্রযুক্তি মানেই যে শুধু নড়াচড়া করা কাঁটা আর ডায়ালের ব্যবহার তা কিন্তু নয়। যখনই আমরা বলি যে এটি অ্যানালগ প্রযুক্তি তখনই এর মানে হলো এটি ডিজিটাল নয় বরং এটি অনেকটা হাতে কলমের কোন জিনিসের মতো। অর্থাৎ সেখানে ডাটা আদান প্রদানে নাম্বার ব্যবহার না করে সরাসরি মূল বিষয়ের সাদৃশ্য ব্যবহার করা হয়। আগের যুগের ফিল্ম ওয়ালা ক্যামেরা এর একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে। আপনি যখন এই ক্যামেরাতে ছবি তোলেন তখন তা একটি ট্রান্সপারেন্ট প্ল্যাস্টিক ফিল্মে আসল ইমেজের সাদৃশ্য তৈরি করে। ট্রান্সপারেন্ট প্ল্যাস্টিক ফিল্মের গায়ে এক প্রকারের রুপা নির্ভর কেমিক্যালের প্রলেপ লাগানো থাকে যা আলোর উপর প্রতিক্রিয়া দেখায়। যখন সেই ফিল্মটি ল্যাবে উন্নতিকরণ করা হয় তখন একটি পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে এই ছবিটি হলো আপনি যা রেকর্ড করে চেয়েছিলেন তারই একটি সাদৃশ্য।
যেমন ধরুন আপনি আপনার আঙ্গুল পরিমাপ করার জন্য একটি কাঠের স্কেল ব্যবহার করলেন। এবার আপনার আঙ্গুলের পরিমাপ অনুসারে স্কেলে একটি কলম দিয়ে দাগ কেটে রাখলেন। এখন একটু ভেবে দেখুন বন্ধুরা ঐ স্কেলের দাগ কাটা অংশ পর্যন্ত কিন্তু আপনার আঙ্গুলের সাদৃশ্য অর্থাৎ আপনার আঙ্গুল আর ডাক কাটা স্কেল একই লম্বা। অবশ্যই কিন্তু স্কেলটি আপনার আঙ্গুল নয় বরং সাদৃশ্য। আমি একই ব্যাপার বিভিন্ন উপমা দ্বারা বোঝানোর চেষ্টা করছি কারন অ্যানালগ প্রযুক্তির মূল মন্ত্র হলো এটাই। এই প্রযুক্তিতে কোন ডাটা বা তথ্য সংরক্ষন করার জন্য সরাসরি যেটি সংরক্ষন করতে চান তার সাদৃশ্যকে সংরক্ষিত করা হয়ে থাকে।
বন্ধুরা যেমন ধরুন পুরাতন ফিতা ওয়ালা ক্যাসেট রেকর্ডারের কথা। সেখানে যখন কিছু রেকর্ড করা হয় তখন আপনার শব্দ গুলো একই তরঙ্গ আকারে অর্থাৎ মূল শব্দের সাদৃশ্য হয়ে একটি চৌম্বক ওয়ালা প্ল্যাস্টিক ফিতাতে সংরক্ষিত হয়ে থাকে। এবং সেখানে আসল শব্দের এনালজি সেভ হয় যেটা আপনি পড়ে প্লে করতে পারেন।
আরো কিছু প্রযুক্তি পোস্ট
- টরেন্ট কি? | কিভাবে কাজ করে? | টরেন্ট বৈধ না অবৈধ?
- ওয়াইফাই (WiFi) সম্পর্কে বিস্তারিত | কীভাবে ওয়াইফাই নিরাপদ রাখবেন?
- ডিসপ্লে প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন – আইপিএস, এমোলেড, রেটিনা
অ্যানালগ প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা
যখন অ্যানালগ তরঙ্গের মাধ্যমে কোন ডাটা পাঠানো হয়ে থাকে তো সেই তরঙ্গে অনেক ছোট পরিমানের তথ্য থাকায় এবং মূল তথ্যর সরাসরি সাদৃশ্য থাকায় এই তরঙ্গ আরেকটি তরঙ্গের সাথে সহজেই মিশে যেতে পারে। এর জন্য দেখা যায় যে পুরাতন রেডিও এবং অ্যান্টেনা ওয়ালা টিভিতে এক চ্যানেলের সাথে আরেক চ্যানেল এসে গোলমাল পাকায়। আর যেহেতু এই প্রযুক্তি বারবার পরিবর্তিত সিগন্যালের উপর এবং মূল ডাটার সাদৃশ্যের উপর কাজ করে তাই এই প্রযুক্তির কোন ডাটাকে কপি করতে অনেক সময় লেগে যায়। যেমন ধরুন একটি ক্যাসেট থেকে হুবুহু আরেকটি ক্যাসেট বানাতে চাইলে আগের ক্যাসেটকে প্লে করে বসে থেকে তারপর আরেকটা ক্যাসেট রেকর্ড করতে হবে। যতক্ষণ আগের ক্যাসেটের শব্দ সম্পূর্ণ শোনা না হবে ততোক্ষণে আরেকটি ক্যাসেট রেকর্ডও করা যাবে না।
ডিজিটাল প্রযুক্তির অনেক সুবিধা রয়েছে বলে কিন্তু এটা নয় যে তা সবসময়ই অ্যানালগ প্রযুক্তি থেকে ভালো হবে। অবশ্যই এই প্রযুক্তিরও কিছু সুবিধা রয়েছে। অ্যানালগ ঘড়ি ডিজিটাল ঘড়ির তুলনায় বেশি নির্ভুল হতে সক্ষম। অ্যানালগ ঘড়িতে অনেক সূক্ষ্ম সময় দেখানো সম্ভব যা ডিজিটালে সম্ভব নয়। তাছাড়া আপনি তো জানেনই যে পৃথিবীর সবচাইতে দামী ঘড়িগুলো অ্যানালগ হয়ে থাকে।
একটি মজার ব্যাপার হলো কোন ডিজিটাল তথ্য যতটা দীর্ঘস্থায়ী ভাবে সংরক্ষিত রাখা যায় অ্যানালগ তথ্যও সমান স্থায়ী ভাবে সংরক্ষিত রাখা যায়। যাদুঘর গুলোতে হাজার বছর পুরাতন পাথর লিপি এবং প্রথম কাগজ লিপি সংরক্ষিত রাখা আছে। কিন্তু আপনি কি বলতে পারবেন, প্রথম কোন টেক্সট ম্যাসেজটি পাঠানো হয়েছিলো বা প্রথম কোন কলটি করা হয়েছিলো এবং কি বলা হয়েছিলো? কিছু পুরাতন কম্পিউটারে ব্যবহার হওয়া ফাইল এখনকার আধুনিক কম্পিউটারে চালানো অসম্ভব। এমনকি এখন আর কোন আধুনিক কম্পিউটারেই ফ্লপি ডিস্ক থাকে না, এর মানে ফ্লপি ডিস্ক থেকেও আপনার কম্পিউটারে ডাটা রিকভার করা সম্ভব নয়। কিন্তু টেপ যতই পুরাতন হোক ক্যাসেট প্লেয়ার কিন্তু প্লে করবেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো ডিজিটাল প্রযুক্তি আজকেরটা আর কাল নাও চলতে পারে কেনোনা ডিজিটাল প্রযুক্তি পরিবর্তনশীল। কিন্তু অ্যানালগ প্রযুক্তি সর্বদায় তার নিজের স্থানেই থাকবে।
আরো কিছু প্রযুক্তি পোস্ট
- জিপিএস (GPS) কীভাবে কাজ করে?
- আইরিস স্ক্যানিং প্রযুক্তি সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানুন
- ক্লাউড কম্পিউটিং কি? ক্লাউড কম্পিউটিং এর বিস্তারিত জানুন
ডিজিটাল প্রযুক্তি বৃত্তান্ত
বন্ধুরা এবার বিশদ আলোচনা করবো ডিজিটাল প্রযুক্তি নিয়ে। অ্যানালগ প্রযুক্তি বোঝাতে যতটা কষ্ট হয়েছিলো তা কিন্তু এবার একদমই লাগবে না। যাই হোক, ডিজিটাল প্রযুক্তি কিন্তু সম্পূর্ণই আলাদা বিষয়। যেখানে অ্যানালগে সরাসরি শব্দ, ছবি, তরঙ্গ ইত্যাদি সংরক্ষন করে রাখা হতো সেখানে ডিজিটালে সকল ডাটা গুলোকে কনভার্ট করে ডিজিট বা সংখ্যায় পরিণত করে রাখা হয়। আজকের দিনে প্রায় সকল প্রকারের ডিভাইজে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি শব্দ এবং ছবিকে ডিজিটাল বিটস এ পরিণত করা হয়। বিটস মানে ১ এবং ০ এই সংখ্যা।
এই প্রযুক্তিতে ডাটা গুলো ১ এবং ০ এর একটি নির্ভুল সাদৃশ্যে থাকে তাই এই ডাটা কপি করা এবং হাজারটা ফাইল তৈরি করা ব্যাস কয়েক মিনিটের কাজ। তাছাড়া এই প্রযুক্তিতে কখনোই সিগন্যাল গোলমাল বা এক সিগন্যালের সাথে আরেকটি সিগন্যালের বাঁধা ঘটবে না। যেমন আমরা মোবাইল ফোনে যে কথা বলি তা কনভার্ট হয়ে নাম্বারে পরিণত হয় এবং এই নাম্বার গুলো পাঠানো হয়ে থাকে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে। অপর ইউজারের কাছে নাম্বার গুলো পৌঁছে তা ডি-কোড হয় এবং সে তা শুনতে পায়। সিগন্যাল খারাপ হওয়া মানে কথা আটকে যাওয়া কেনোনা খারাপ সিগন্যালে কিছু বিট মিস হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এমনটা হবে না যে আরেকজনের কথা এসে আপনার ফোনে শোনা যাচ্ছে কিংবা শব্দ পরপর সরসর শব্দ করছে।
কিন্তু কোন শব্দ রেকর্ড করার সময় ডিজিটাল এবং অ্যানালগ উভয় প্রযুক্তিরই প্রয়োজন পড়ে। আপনার কণ্ঠ থেকে যে আওয়াজ বেড় হয়ে আসে তা কিন্তু প্রাকিতিক ভাবে অ্যানালগ প্রযুক্তি। তাহলে কীভাবে কোন অ্যানালগ রেকর্ড ডিজিটাল ভাবে কোন অনলাইন রেডিও অ্যাপে বা এমপি৩ ফাইলে শোনা যায়। বন্ধুরা এটি সম্পূর্ণ করতে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে তা হলো সাম্পলিং। আবার একে অ্যানালগ-টু-ডিজিটাল কনভারসেশন (ADC) বলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি অ্যানালগ তরঙ্গ ফর্ম থেকে স্ন্যাপসট গ্রহন এবং ডিজিটাল বিটে সংরক্ষন করে। তাই বিট যতো বেশি হয়ে থাকে ডাটা কোয়ালিটি ততোবেশি ভালো হয়ে থাকে। এজন্য এমপি৩ বা ভিডিও ফাইলে ১২৮ বিটস প্রতি সেকেন্ড, ১৯২ বিটস প্রতি সেকেন্ড বা ৩২০ বিটস প্রতি সেকেন্ড ইত্যাদি রেট দেখতে পাওয়া যায়।
আবার আপনার ফোনের এম্পিথ্রী মিউজিক যখন আপনার সাউন্ড সিস্টেমে প্লে করেন তার লাগিয়ে তখন তা ডিজিটাল-টু-অ্যানালগ কনভার্ট হয়ে যায়। এম্পিথ্রী মিউজিক একটি ইলেকট্রিকাল সিগন্যালে পরিবর্তন হয়ে যায়। যে সিগন্যালে কারেন্ট বারবার তার ভোল্টেজ পরিবর্তন করে এবং এই পরিবর্তিত ভোল্টেজের ফলে স্পীকারে সাউন্ড ভেসে আসে।
ডিজিটাল উপায়ে অনেক কম জায়গায় এবং পোর্টআবোল ভাবে অনেক তথ্য সংরক্ষন করা সম্ভব। ভেবে দেখুন এখন ১ লাখ মিউজিক আপনার পকেটের সমান জায়গাতে আটতে সক্ষম কিন্তু যদি সেগুলো টেপে সংরক্ষন করার কথা ভাবেন তবে একটি গুদাম ঘর লাগবে তা সংরক্ষন করবার জন্য। আবার ৫০ হাজার বই আটতে পারে একটি একটি বইয়ের সমান জায়গাতে যেখানে ফুটবল মাঠের সমান জায়গা লাগত।
তাছাড়া যেকোনো ডিজিটাল ছবি বা অডিও বা ভিডিও ফাইলকে সহজেই এডিট এবং প্লে করা সম্ভব। আগের যুগের ফটোগ্রাফাররা তাদের মেধার জন্য পুরস্কার পেতেন। কিন্তু আজ ফটো প্রসেসিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে তোলা ফটোকে যেকোনো রূপে রূপান্তরিত করা সম্ভব। তাছাড়া সবচাইতে সুবিধার ব্যাপার হলো ডিজিটাল ডাটা ইনক্রিপ্ট করা যায়। যার ফলে ডাটার ট্রান্সমিশন অনেক নিরাপদে করা সম্ভব। যেমন ধরুন সেলফোনের কথা গুলো পাঠানোর আগে তা ইনক্রিপটেড করানো হয়।
শেষ কথা
বন্ধুরা আজকের আলোচনায় আমি এতোবেশি মগ্ন হয়ে পড়েছিলাম যে পোস্টটি হয়তো অনেক লম্বা করে ফেলেছি। তবে আমি সর্বোউচ্চ চেষ্টা করেছি বিষয় গুলোকে সহজ করে তুলবার জন্য। আশা করছি আপনারা আজ বহুত কিছু জেনেছেন এবং আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। দয়া করে আপনার মতামত নিজে জানাবেন আমাকে কেনোনা আপনার মূল্যবান মতামতের অপেক্ষায় আমি সর্বদা হন্যে হয়ে থাকি। আর পোস্টটি শেয়ার করতে ভুল্লে কিন্তু একদমই চলবে না। ধন্যবাদ 🙂
Images: Shutterstock.com
No Comment! Be the first one.