লো স্পেস সমস্যা? উইন্ডোজ কম্পিউটারে লো স্পেস ফিক্স করুণ!

আজকের দিনে হার্ড ড্রাইভ গুলোর সাইজ দিনের পর দিন ধরে বেড়েই চলছে, আর প্রতি গিগাবাইটে এর দামও কমে যাচ্ছে অনেক। আর হার্ড ড্রাইভ গুলো যতো সস্তা হচ্ছে, আমরা ততো আরো বেশি পিকচার, মুভি, ফাইলস দিয়ে হার্ড ড্রাইভ গুলোকে ভরিয়ে ফেলছি। লো ডিস্ক স্পেস অনেকটা কমন প্রবলেম আপনার জন্য, যদি আপনি এসএসডি ব্যবহার করেন, — কেনোনা এসএসডি’তে ট্র্যাডিশনাল মাকানিক্যাল হার্ড ড্রাইভ থেকে অনেক কম স্পেস থাকে। যখন আপনার কম্পিউটারে লো স্পেস সমস্যা ম্যাসেজ প্রদর্শিত করতে শুরু করবে, এই আর্টিকেলের টিপস গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনি হার্ড ড্রাইভ থেকে কিছু স্পেস ফাঁকা করতে পারবেন। তো অঝথা ফাইল গুলোকে রিমুভ করে কাজের ফাইল গুলোকে বাঁচিয়ে রাখুন!


অপ্রয়োজনীয় ফাইল রিমুভ

অনেক টুল রয়েছে যেগুলো আপনার কম্পিউটারে থাকা জাঙ্ক ফাইল গুলোকে রিমুভ করতে আপনাকে সাহায্য করে। কিন্তু আমি বলবো, আগে আপনি ম্যানুয়ালি চেক করে দেখুন, আপনার কাছে কোন ফাইলটির আর গুরুত্ব নেই, ব্যাস সেটাকে ডিলিট করে দিন। পুরা কম্পিউটার স্ক্যান করে হয়তো জাঙ্ক ফাইল ক্লিনার সফটওয়্যার ২-৩ জিবি স্পেস ফাঁকা করতে পারবে। কিন্তু আপনার ম্যানুয়ালি চেক করে অপছন্দের বা দেখা মুভি ফাইল গুলোকে ডিলিট করে, অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ব্যাকআপ ফাইল গুলোকে ডিলিট করে, অকাজের সফটওয়্যার গুলোকে সিস্টেম থেকে আনইন্সটল করে অনেক বেশি ফাঁকা জায়গা বাঁচাতে পারবেন। সাধারণভাবে উইন্ডোজ ফাইল এক্সপ্লোরার ওপেন করে ম্যানুয়ালি সকল ফোল্ডার গুলো চেক করে দেখুন, আর আপনার কাছের বিরক্তিকর ফাইল গুলোকে ডিলিট করে দিন। অথবা আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনার অপারেটিং সিস্টেমেই ডেডিকেটেড ফাইল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম রয়েছে, সেটার ব্যবহার করেও আপনি অপ্রয়োজনীয় ফাইল গুলোকে খুঁজে পেতে পারবেন এবং সেগুলোকে মুছে ফেলতে পারবেন।

উইন্ডোজ ১০ কম্পিউটারে কী-বোর্ড থেকে প্রেস করুণ “উইন্ডোজ কী + I” এবার সেটিং ওপেন হয়ে যাবে, সেটিং থেকে সিস্টেমে যান এবং স্টোরেজ অপশনে যান। এখানে সকল ড্রাইভ গুলো দেখতে পাবেন। যে ড্রাইভটি আউট অফ স্পেস হয়ে গেছে, তাতে ক্লিক করে সেই ড্রাইভটির কোন কাজে কোন ডাটা কতোখানি স্পেস নিয়ে রেখেছে, সকল ডিটেইলস পেয়ে যাবেন। আপনি যেকোনো টাইপের ফাইল’কে এখান থেকে অনেক সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারবেন। তো সেখান থেকে অকাজের ফাইল গুলোকে ডিলিট করে দিন, আপনি টেম্পোরারি ফাইল গুলোকে ডিলিট করার মাধ্যমেও অনেক স্পেস ফাঁকা করতে পারেন।

ডিস্ক ক্লিনআপ টুল

অন্য কোন টুল ব্যবহার করার আগে, আমি সাজেস্ট করবো উইন্ডোজের বিল্ডইন টুল “ডিস্ক ক্লিনআপ” ব্যবহার করতে। এটিও টেম্পোরারি ফাইল সহ আরো অপ্রয়োজনীয় ডাটা গুলোকে রিমুভ করতে সাহায্য করে। যেকোনো ড্রাইভের প্রপারটিস এ গেলেই আপনি ডিস্ক ক্লিনআপ করার অপশন পেয়ে যাবেন, সেখান থেকে ইন্টারনেট টেম্পোরারি ফাইলস, রিসাইকেল বিন, ডাউনলোড করা প্রোগ্রাম ফাইলস ইত্যাদি সহ অনেক অকাজের ফাইল গুলোকে অ্যানালাইজ করার পরে ক্লিন করতে পারবেন।

অপ্রয়োজনীয় বড় সফটওয়্যার/গেম আনইন্সটল

 

অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম গুলোকে আনইন্সটল করার মাধ্যমে স্পেস ফাঁকা করা সম্ভব, কিন্তু অনেক প্রোগ্রাম আকারে অনেক ছোট হয়, সেগুলোকে আনইন্সটল করলে মাত্র অল্প কিছুই স্পেস ফাঁকা হবে। উইন্ডোজ ১০ এর নতুন প্রোগ্রাম অ্যান্ড ফিচার অপশন থেকে আপনি আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল থাকা সকল প্রোগ্রাম লিস্ট পেয়ে যাবেন আর তাদের পাশে প্রোগ্রাম গুলোর সাইজও দেখতে পাবেন। তো প্রোগ্রাম গুলো আকারে অনেক বড় আর আপনি হয়তো খুব কমই সেগুলোকে ব্যবহার করেন, সেগুলোকে আনইন্সটল করার মাধ্যমে অনেক বড় পরিমানে স্পেস ফাঁকা করতে পারেন। আপনি চাইলে বিভিন্ন তৃতীয়পক্ষ আনইন্সটলার সফটওয়্যার ব্যবহার করেও অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার গুলোকে আনইন্সটল করতে পারেন।

টেম্পোরারি ফাইল ক্লিনআপ

হ্যাঁ, উইন্ডোজের ডিফল্ট ডিস্ক ক্লিনআপ অনেক উপকারি টুল, কিন্তু সেটার ফিচার গুলো অনেক সীমাবদ্ধ, মানে অনেক কম সফটওয়্যারের টেম্প ফাইল গুলোকে কেবল ডিলিট করার ক্ষমতা রাখে। ডিফল্ট টুলটি শুধু ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের টেম্প ফাইল রিমুভ করতে পারে, অন্য ব্রাউজার গুলোর টেম্প ফাইলকে ভুল করেও হাত লাগাতে পারে না। যদিও ব্রাউজারে ম্যানুয়ালি প্রবেশ করার মাধ্যমে একে একে তাদের টেম্প ফাইল গুলোকে ডিলিট করা যেতে পারে।

 

কিন্তু সি-ক্লিনার সফটওয়্যারটি লো স্পেস সমস্যা সমাধান করার জন্য বেস্ট সলিউসন। আপনি এক জায়গা থেকেই সকল টেম্প ফাইল গুলোকে মনিটর করতে পারবেন এবং ডিলিট করে দিতে পারবেন। সাথে এই সফটওয়্যারটি’তে আরো অনেক উপকারি ফিচার রয়েছে, যেগুলো আপনার কাজে লাগবে। যেমন সি-ক্লিনার থেকে আপনি ডুপ্লিকেট ফাইল গুলোকে সহজেই খুঁজে ডিলিট করতে পারবেন। অনেক সময় একই ফাইল সিস্টেমের অনেক ফোল্ডারে ছড়িয়ে পড়ে অনেক স্পেস নষ্ট করে, আর তাদের ম্যানুয়ালি খুঁজে বেড় করে ডিলিট করা অনেক ব্যাথার ব্যাপার হতে পারে। সি-ক্লিনার সফটওয়্যারটি এই ক্ষেত্রে আপনাকে পারফেক্ট সলিউসন প্রদান করতে সক্ষম। তাছাড়া আপনি কোন ফাইল গুলোকে ডিলিট করতে চান বা কোন ফাইল গুলোকে রাখতে চান, সেটা চয়েজ করার জন্যও পাবেন ডেডিকেটেড অপশন।

পুরাতন উইন্ডোজ ইন্সটলেশন ক্লিনআপ

যখন আপনি কোন নতুন অপারেটিং সিস্টেম আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল করেন, কিন্তু ইন্সটল করার সময় ড্রাইভ ফরম্যাট না করেই ইন্সটল করেন, সেই ক্ষেত্রে পূর্বের অপারেটিং সিস্টেম ফাইল গুলো আপনার কম্পিউটার হার্ড ডিস্কে থেকেই যায়। Windows.old নামক একটি ফোল্ডারে আপনি সেই পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম ফাইল গুলোকে খুঁজে পেতে পারেন। পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম ফাইল অঝথা অনেক জায়গা নষ্ট করে রাখে হার্ড ড্রাইভ থেকে। যদিও এই ফাইল গুলো থাকা একদিক থেকে ভালো, নতুন অপারেটিং সিস্টেমে কোন সমস্যা দেখা দিলে, আবার পুরাতন ওএস এ ফিরে যেতে পারবেন। কিন্তু আপনার যদি পুরাতন ভার্সনে ফিরে যাওয়ার কোন প্ল্যান না থাকে, সেই ক্ষেত্রে জাস্ট ওল্ড ওএস ফোল্ডারটি ডিলিট করে দিন।

বন্ধু উপরের ট্রিক্স গুলো অনুসরণ করে সহজেই উইন্ডোজ কম্পিউটার হার্ড ড্রাইভ থেকে কয়েক গিগাবাইট পর্যন্ত স্পেস ফাঁকা করতে পাড়বেন। তবে, যদি আপনার স্পেসের সিরিয়াস প্রবলেম থাকে, সেক্ষেত্রে একটি বড় ক্যাপাসিটির হার্ড ড্রাইভ কিনে ফেলায় বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আশা করছি, এই আর্টিকেলটি অনেক উপকারি ছিল এবং আপনি কিছু অপ্রয়োজনীয় ডাটা রিমুভ করার বিনিময়ে লো স্পেস সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন। আপনি কি এখনো লো স্পেস সমস্যা ফেস করছেন? আমাদের নিচে কমেন্ট করে জানান।

Images: Shutterstock.com

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories