অ্যান্ড্রয়েড দুনিয়ার সবচাইতে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম, আর এথিক্যাল হ্যাকিং উৎসাহীদের জন্য ও একটি গ্রেট চয়েজ! আর এই জন্যই অনেক ডেভেলপার অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য অনেক কাজের হ্যাকিং অ্যাপ গুলো তৈরি করেছে। আপনি যদি হ্যাকিং নিয়ে উৎসাহী একজন রিডার হয়ে থাকেন কিংবা নতুন এথিক্যাল হ্যাকিং শিখছেন, সেক্ষেত্রে আজকের লিস্টে থাকা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ গুলো আপনার বেশ কাজের প্রমাণিত হতে পারে।
তো আজকের লিস্টে থাকছে ৫টি সেরা অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকিং অ্যাপস — যেগুলোর সাহায্যে ওয়াইফাই হ্যাকিং থেকে শুরু করে, ফোন মনিটরিং, ফোন রিমোট কন্ট্রোল, নেটওয়ার্ক প্যাকেট ডাটা কালেক্ট, ওয়েব ব্রাউজিং মনিটরিং, ইত্যাদি সকল অ্যাকশন গুলো পারফর্ম করা যেতে পারে। তো দেরি কিসের? চলুন, দ্রুতই অ্যাপ গুলোর সাথে পরিচিত হওয়া যাক!
AndroRAT
এই হ্যাকিং অ্যাপটির নাম থেকেই এর কাজ বুঝা যায়; Andro মানে অ্যান্ড্রয়েড আর RAT বলতে রিমোট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ টুল (Remote Administrative Tools) বুঝানো হয়েছে। এটা ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকিং টুলের মধ্যে সবার সেরা অবস্থানে ছিল, টুলটি রিলিজ হয়ে অনেক সময় হয়ে গেছে আর এটি একটি ক্লায়েন্ট/সার্ভার অ্যাপলিকেশন! এই অ্যাপটি কোন সিস্টেমে ইন্সটল করালে সেই ফোনের রিমোট আক্সেস প্রদান করাতে সাহায্য করবে, আপনি আপনি ভিক্টিমের ফোন রিমোটভাবে কন্ট্রোল করতে পারবেন।
ফোন বুট হওয়ার সাথে সাথেই এই অ্যাপের সার্ভিস গুলো রান হয়ে যায়। ফোনে ইউজার কিছুই বুঝবে না বা অ্যাপটি চালু ও করতে হবে না। কল বা এসএমএস সেন্ড করার মাধ্যমে অ্যাপটি সার্ভারের কানেকশন ট্রিগার করবে। এই অ্যাপটি বিশেষ করে তথ্য কালেক্ট যেমন; ফোনের কন্টাক্ট নাম্বার, কল লগ, ম্যাসেজ, এবং লোকেশন ডাটা আক্সেস করার জন্য বেস্ট! তাছাড়া এই অ্যাপটি ইউজ করে ভিক্টিমের ফোন থেকে কল, এসএমএস সেন্ড করা, ফোনের ক্যামেরা ইউজ করে ফটো নেওয়া, ডিফল্ট ব্রাউজার থেকে কোন লিংক ভিজিট — ইত্যাদি অ্যাকশন গুলো পারফর্ম করার সুবিধা প্রদান করে!
Nmap
Nmap হচ্ছে ডেক্সটপের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নেটওয়ার্ক স্ক্যানিং টুল, যেটা অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ও লভ্য রয়েছে। এই হ্যাকিং অ্যাপ টি রুটেড ও নন-রুটেড উভয় ফোনেই কাজ করে। আপনি যদি বিগেইনার হ্যাকার হয়ে থাকেন, এটি এমনটি টুল যেটা আপনার সিস্টেমে ইন্সটল থাকতেই হবে!
Hackode
এই অ্যাপটি মূলত অনেক গুলো এথিক্যাল হ্যাকিং টুলের সমন্বয়! — এই অ্যাপের মধ্যে তিনটি মডিউল রয়েছে; Reconnaissance, Scanning, Security Feed। এথিক্যাল হ্যাকার, আইটি স্পেশালিষ্ট, পেনেট্রেশন টেস্টারদের জন্য এই অ্যাপটি বেশ কাজের প্রমানিত হতে পারে।
এই অ্যাপের সাথে কিছু ইউনিক হ্যাকিং অপারেশন পারফর্ম করা যেতে পারে; যেমন- Google hacking, SQL Injection, MySQL Server, Whois, Scanning, DNS lookup, IP, MX Records, DNS Dif, Security RSS Feed, Exploits, ইত্যাদি! নতুন যারা হ্যাকিং শেখা শুরু করেছেন তাদের জন্য এটি বেস্ট একটি সলিউশন। এই অ্যাপটি আপনার সিস্টেমে রান করতে কোন পার্সোনাল আক্সেস চেয়ে বসবে না, আপনি সহজেই এর টুলস গুলো ইউজ ও করতে পারবেন!
FaceNiff
ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের উপর নজরদারি করার জন্য FaceNiff একটি সেরা অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকিং অ্যাপ — আপনার ওয়াইফাই এর সাথে কানেক্টেড থাকা ডিভাইজ গুলোতে কে ফেসবুক, টুইটার, বা আলাদা সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে কি করছে সেগুলোর উপরে নজর রাখার জন্য এই অ্যাপ খুবই বিস্তরভাবে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। অ্যাটাকারদের কাছে এটা বেশ পছন্দের একটি টুল, ইউজারদের কুকিজ চুরি করে তাদের নানান অ্যাকাউন্টে অনধিকার প্রবেশ চালিয়ে যায় হ্যাকারগন!
Wi-Fi Kill
আপনি কি শেয়ারড ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ইউজ করেন? অনেক ইউজার একসাথে কানেক্ট থাকার ফলে স্পীড একেবারেই পাচ্ছেন না? তাহলে এই অ্যাপটি বেশ কাজের প্রমাণিত হতে পারে। আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট থাকা যেকোনো ডিভাইজের কানেকশন ডিস্কানেক্ট করে দিতে পারেন এর মাধ্যমে সহজেই। আসলে ওয়াইফাই ডিস্কানেক্ট হবে না, কিন্তু ডিভাইজটিতে কোন প্যাকেট সেন্ড বা রিসিভ হবে না, ফলে আপনি বেশি ব্যান্ডউইথ ইউজ করতে পারবেন! অ্যাপটির ইউজার ইন্টারফেস একেবারেই সোজা সাদা, তাই ইউজ করতে কোনই সমস্যা হবে না!
বোনাস হ্যাকিং অ্যাপ
ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক নিয়ে আরো বেশি ঘাটাঘাটি করতে চাইলে Droidsheep অ্যাপটি বেস্ট সলিউশন প্রদান করতে পারে। এই অ্যাপটি নিজে থেকে রাউটার মনিটরের মতো আচরন করে। আপনি ব্রাউজিং সেশন হাইজ্যাক করতে পারবেন, সাথে যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে নজর রাখতে পারবেন। যেকোনো ওয়েব সেশন হাইজ্যাক করতে এই অ্যাপটি বিস্তর ব্যাবহৃত হয়ে থাকে।
সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং হ্যাকারদের জন্য আরেকটি পছন্দের অ্যাপ হচ্ছে Shark for Root, ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক, ৩জি নেটওয়ার্কের ট্র্যাফিকের উপরে নজর রাখতে এই অ্যাপ ইউজ করতে পারেন। তাছাড়া আপনার ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে কি কি ডিভাইজ কানেক্টেড রয়েছে বা ম্যাপ ড্রাইভ গুলো অ্যাক্টিভ রয়েছে সেগুলো স্ক্যান করতে Fing Network Scanner অ্যাপটি ইউজ করতে পারেন।
তো এই ছিল আজকের বেস্ট অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সিরিজের আয়োজন। এই বেস্ট ৫টি অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকিং অ্যাপ আপনার কতোটা উপকারে আসলো, আমাদের নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। সাথে আপনি যদি আরো কিছু অ্যাপ এই লিস্টে যুক্ত করতে চান নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। পরবর্তী পর্বে এগুলোকে অ্যাড করার চেষ্টা করবো!
WiREBD এখন ইউটিউবে, নিয়মিত টেক/বিজ্ঞান/লাইফ স্টাইল বিষয়ক ভিডিও গুলো পেতে WiREBD ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুণ! জাস্ট, youtube.com/wirebd — এই লিংকে চলে যান এবং সাবস্ক্রাইব বাটনটি হিট করুণ!
Feature Image: Shutterstock
ওয়াও, অসাধারন একটা আর্টিকেল।
ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক উপকারী পোস্ট।