কম্পিউটার নিয়ে ১০টি ভুল ধারণা | এক্ষুনি বিশ্বাস করা বন্ধ করুন!

আজকে কম্পিউটার নিয়ে ১০টি ভুল ধারণার আলোচনা করবো, হতে পারে এতদিনে আপনিও কোনটির শিকার ছিলেন। পোস্টটি পড়ার পর থেকে এগুলো বিশ্বাস করা বন্ধ করা উচিৎ আপনার। এই ভুল ধারণা গুলোর মধ্যে কিছু ধারনার হালকা ফুলকা অস্তিত্ব রয়েছে এবং কিছু ধারণা তো একেবারেই বুলশীট। তো অন্ধ বিশ্বাস আর কম্পিউটার কুসংস্কারের দিন শেষ, চলুন শুরু করা যাক…


#কম্পিউটার রিস্টার্ট

প্রত্যেকটি প্রোগ্রাম ইন্সটল করার পরে অবশ্যই আপনাকে কম্পিউটার রিস্টার্ট করতে হবে!… সত্যি? না করলে কি হবে? প্রোগ্রাম কাজ করবে না? “আরে ভাই, আমি তো করতেই চাই না, কি করবো বলুন? প্রোগ্রাম ইন্সটল করার পরে প্রোগ্রাম নিজেই পিসি রিস্টার্ট করতে বলে” কিন্তু ব্যস্তবিকভাবে, প্রায় বলতে গেলে ৯০ শতাংশ সময়ে প্রোগ্রাম ইন্সটল করার পরে প্রোগ্রাম থেকে পিসি রিস্টার্ট করতে বল্লেও তা করার প্রয়োজন নেই। হ্যাঁ, তবে কিছু ব্যাপারে সত্যিই রিস্টার্ট করার প্রয়োজন পড়ে—অনেক সময় সফটওয়্যার ইন্সটল করার পরে নতুন সফটওয়্যারটির কিছু ফাইল মডিফাই করার প্রয়োজন পড়ে যা অন্য প্রোগ্রাম আগে থেকেই ব্যবহার করে লক করে রেখেছে, সেটিতে অ্যাক্সেস পাওয়ার জন্য পিসি রিস্টার্ট করার প্রয়োজন পড়তে পারে। তবে ১০০ তে ৫ বার এই রকম প্রয়োজন পড়বে। তাই নতুন যেকোনো প্রোগ্রাম ইন্সটল করার পরে আরামে পিসি ব্যবহার করতেই থাকুন, রিস্টার্ট করতে বললে এড়িয়ে যান, বিশ্বাস করুন কিছুই হবে না এবং আপনার কম্পিউটার আগের মতোই চলবে।

#উইন্ডোজ অনিরাপদ

আপনি ইন্টারনেটে নিয়মিত হলে, অবশ্যই এই বাক্যটি শুনে থাকবেন, “উইন্ডোজ ব্যবহার করায় নিরাপত্তা নেই”। ইউটিউবে তো হাজারো ইউটিউবার এই নিয়ে বড় বড় ভিডিও বানিয়ে ফেলেছেন। আবার ব্লগার-রাও বহুত লিখেছেন এই ব্যাপারে। তাদের সবার কাছে প্রায় একই লজিক… “উইন্ডোজ সবচাইতে বেশি ব্যবহারকারী ব্যবহার করে, তাই অ্যাটাকার এবং ভাইরাস মেকার রা সর্বদা উইন্ডোজকে টার্গেট করে ভাইরাস তৈরি করে, তাই উইন্ডোজ ব্যবহার করলে খুব দ্রুত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার সুযোগ থাকে, ব্লা… ব্লা… ব্লা…”। হ্যাঁ, এই কথাটি সত্য যে, বেশিরভাগ হ্যাকার উইন্ডোজকে টার্গেট করেই ভাইরাস তৈরি করে, যাতে একসাথে সেটিকে অনেক বিস্তার লাভ করাতে পারে। যাই হোক, যদি আপনি উইন্ডোজকে নিয়মিত আপডেট রাখেন, আপনার ডাটা গুলোর ব্যাকআপ রাখেন, এবং আমার লেখা সকল সিকিউরিটি টিপস গুলো অনুসরন করেন, তবে আপনি সত্যিই অনেক নিরাপদে থাকতে পারবেন। মনে রাখবেন, বেশিরভাগ হ্যাক অ্যাটাক হয়ে থাকে শুধু আপনার অসাবধানতার কারণে, এর জন্য উইন্ডোজ দায়ী নয়।

তাছাড়া হ্যাকার আপনার সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বেড় করে তারপর আপনার সিস্টেমের উপর অ্যাটাক চালায়। হতে পারে আপনার ইন্সটল করা সফটওয়্যারে কোন ত্রুটি রয়েছে, বা আপনি কোন ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন, যেখানে হ্যাকার আগে থেকেই কেয়ামত লুকিয়ে রেখেছে। এগুলো থেকে বাঁচতে অবশ্যই উইন্ডোজ আপডেট অন রাখুন এবং নিয়মিত আপডেট করুন, ইন্সটল থাকা সফটওয়্যার গুলোর আপডেট ভার্সন ব্যবহার করুন। আর যদি পারেন তো ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করা থেকে ১০০ মাইল দূরে থাকুন। আর যারা ব্যান্ডউইথ বাঁচাতে গুগলে গিয়ে লেখে “HOW TO DISABLE AUTOMATIC UPDATE ON WINDOWS 10” তারপরে টিউটোরিয়াল দেখে উইন্ডোজ আপডেট বন্ধ করে দেয়, কিংবা যারা এখনো উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহার করে, “ভাই তোমরা সত্যিই বিপদে আছো!”

#সেফলি ইজেক্ট পেনড্রাইভ

পেনড্রাইভ, পোর্টেবল হার্ডড্রাইভ, ফ্ল্যাশ কার্ড কম্পিউটার থেকে বেড় করার আগে সেফলি ইজেক্ট রিমুভেবল ডিস্ক বা ইজেক্ট স্টোরেজ মিডিয়া না ক্লিক করলে আপনার আপনার পেনড্রাইভ, হার্ডড্রাইভ, ফ্ল্যাশ স্টোরেজ মিডিয়া করাপ্টেড হয়ে যাবে!!!… কে বলে এগুলো? তবে স্টোরেজ মিডিয়াতে কোন ফাইল কপি করতে করতে বা কপি সম্পূর্ণ হয়নি এই অবস্থায় সেটি আনপ্লাগ করলে মিডিয়া স্টোরেজটি বা হতে পারে কপি করা ফাইলটি করাপ্টেড হয়ে যেতে পারে। তবে আপনি জানেন যে এতে কোন ফাইল কপি হচ্ছে না, বা কপি করা শেষ, এই অবস্থায় জাস্ট টেনে খুলে ফেলুন, বিশ্বাস করুন কোন সমস্যাই হবে না। এতো চিন্তা করার কিছু নেই। তবে হ্যাঁ, পেনড্রাইভ দিয়ে যদি কোন পোর্টেবল সফটওয়্যার রান করান এবং যদি আপনি না জানেন, কোন ফাইল সিস্টেম ব্যবহার করছে কিনা তবে সেফলি ইজেক্ট রিমুভেবল ডিস্ক বা ইজেক্ট স্টোরেজ মিডিয়া ক্লিক করা উত্তম হবে। তবে ৯৯ শতাংশ সময়ে জাস্ট টান মাড়ুন আরর খুলে ফেলুন।

#ড্রাইভার ডিস্ক

আমার এক বন্ধুকে দেখেছিলাম, তার রাউটারের ডিস্ক, মনিটরের ডিস্ক, মাদারবোর্ডের ডিস্ক, প্রিন্টারের ডিস্ক (ইন্সটলেশন ডিস্ক) এমন করে যতনে সাজিয়ে রেখেছে, যেন কোন খাজানা। আমি এখনো বুঝি না হার্ডওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি গুলো কেন এখনো ড্রাইভার ডিস্ক তৈরি করে সাথে পাঠিয়ে দেয়। আপনিই বলুন, সিডির জামানা কি এখন আর আছে? যাই হোক, এগুলো ডিস্ক জমা করে রাখার কোনই প্রয়োজন নেই। যদি আপনার ডিভাইজ ১ বছর বা এর বেশি পুরাতন হয়ে থাকে তবে এই ড্রাইভার ডিস্ক গুলো এমনিতেই বেকার হয়ে যাবে, কেনোনা সকল ড্রাইভারের আপডেট চলে আসবে, আর ব্যাকডেট ড্রাইভার ব্যবহার করা সত্যিই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সর্বউত্তম হবে, আপনি আপনার ডিভাইজটির বা গ্যাজেটটির প্রস্তুতকারী কোম্পানির ওয়েবসাইটে যান এবং আপডেট ড্রাইভার ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন। সুতরাং সিন্দুক থেকে সকল ড্রাইভার ডিস্ক বেড় করুন আর ভাঙ্গারির কাছে বিক্রি করে দিন, অন্তত কয়েক পয়সা তো ইনকাম হবে 😛

#এন্টিভাইরাসের প্রয়োজন নেই

“ভাই আমি কম্পিউটারে অনেক দক্ষ, সকল সিকিউরিটি ব্যাপার আমার একদম মুখস্ত, আমার এন্টিভাইরাস লাগবে না”। ভাই আপনি একদমই ভুল ভাবছেন। হ্যাঁ অবশ্যই সিকিউরিটি সচেতন হওয়া ভালো, এবং সম্ভাব্য সকল সিকিউরিটি ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। তবে কিছু কিছু সময় আপনি কিভাবে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যাবেন, নিজেও কল্পনা করতে পারবেন না, যেমন- মনে করুন আপনি এমন কোন একটি ওয়েবসাইট ভিসিট করলেন যা ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত, এমন কিছু ম্যালওয়্যার রয়েছে যা আপনার ব্রাউজারে লোড হওয়া মাত্রই কাজ শুরু করে দেয়, আপনাকে কোন ক্লিক বা কোন কিছু ইন্সটল করারও প্রয়োজন নেই। এই অবস্থায় হ্যাকার আপনার ব্রাউজারে থাকা সকল তথ্য চুরি করে নিতে পারে, যেমন- আপনার ক্রেডিট কার্ড নাম্বার, অনলাইন অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি। এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামে ম্যালিসিয়াস সাইট গুলোর অনেক বড় ডাটাবেজ থাকে, ফলে ভিসিট করার আগেই আপনি ওয়ার্নিং পেয়ে যাবেন। তাই সিকিউরিটি প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি একটি ভালমানের এন্টিভাইরাস ব্যবহার করারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সাথে আপনার অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার, সকল সফটওয়্যার, ড্রাইভার ইত্যাদি আপডেট রাখুন। আপনার পিসিতে জাভা ইন্সটল করা থাকলে তা আনইন্সটল করে দিন, এটার আর প্রয়োজনীয়তা নেই। বেশিরভাগ ত্রুটি জাভাতেই (জাভা স্ক্রিপ্ট আলাদা ব্যাপার) খুঁজে পাওয়া যায়।

#এন্টিভাইরাস আছে না!

অনেকে মনে করেন, “আমার সিস্টেমে কেয়ামত পর্যন্ত ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না, হাহাহা—আমি যে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করি!” একটু দাঁড়ান ভাই, এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার কখনোই বুলেটপ্রুফ নয়, এবং আপনাকে ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না যে আপনার সিস্টেম ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবে না। নতুন ভাইরাস বা মডিফাই করা পুরাতন ভাইরাসকেও আপনার দামী এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ডিটেক্ট করতে পারবেনা—কেনোনা এটি আপনার এন্টিভাইরাসের ভাইরাস ডাটাবেজে সংরক্ষিত নেই। এন্টিভাইরাস শুধু সেগুলকেই ভাইরাস হিসেবে ডিটেক্ট করে, যেগুলো আগে থেকে তাদের ডাটাবেজে থাকে। তবে আজকের এন্টিভাইরাস গুলো কোন প্রোগ্রামের আচরনের উপর নজর রাখতে পারে, সেগুলো ডাটা চুরি করছে কিনা বা সিস্টেমকে অকেজো করার চেষ্টা করছে কিনা। তবে মনে রাখবেন, পুলিশের চেয়ে চোর সবসময় ১০ কদম আগে। এন্টিভাইরাস গুলো যেভাবে উন্নতি প্রাপ্ত হচ্ছে, ভাইরাস গুলো তার দ্বিগুণ গতিতে আরো স্মার্ট হয়ে উঠছে। সুতরাং আপনি কোন এন্টিভাইরাস ব্যবহার করার মানে কিন্তু এই নয় যে আপনি পরিপূর্ণভাবে নিরাপদ। আপনাকে অবশ্যই বেস্ট সিকিউরিটি প্র্যাকটিস করতে হবে। চাইলে সিকিউরিটি ক্যাটাগরি থেকে সকল আর্টিকেল গুলো পড়ে নিতে পারেন, আশা করি অনেক কিছু জানতে পারবেন।

#ফাস্ট ইন্টারনেট = ফাস্ট ওয়েবসাইট

অনেকেই মনে করেন ফাস্ট ইন্টারনেট স্পীড কিনলেই যেকোনো ওয়েবসাইট অনেক ফাস্ট লোড হবে এবং যেকোনো ফাইল অনেক দ্রুত ডাউনলোড হবে। জী না, আপনার ধারণা ঠিক নয়। তবে আপনার যদি ১০-২০ এম্বিপিএস কানেকশন থাকে তবে সত্যিই আপনার কানেকশনে অন্যদের চাইতে দ্রুত পেজ লোড হবে এবং আপনি ভালো ডাউনলোড স্পীড পাবেন, কিন্তু আপনার যদি ৫০ এম্বিপিএস লাইন থাকে তবে আপনি কোন পার্থক্য বুঝতে পারবেন না। বেশিরভাগ সময়ে ওয়েবসাইট গুলো খুব ভালো সার্ভার ব্যবহার করে না, এগুলো লাখো ইউজারদের সাপোর্ট দেওয়ার জন্য হয়ে থাকে না। তবে আপনি যদি গুগল ড্রাইভ, ইউটিউব, অ্যামাজন ক্লাউড ইত্যাদি থেকে কিছু ডাউনলোড করেন তবে নিশ্চয় অনেক ফাস্ট স্পীড পাবেন, হতে পারে আপনার কাঙ্ক্ষিত স্পীড। অন্যান্য ওয়েবসাইট গুলোর সার্ভার ব্যান্ডউইথ স্পীড লিমিট করে রাখে, যাতে একসাথে অনেক ইউজারদের সার্ভিস দিতে পারে। সবাইকে হাই-স্পীড দেওয়ার জন্য অনেক শক্তিশালী সার্ভারের প্রয়োজন যা অনেক ব্যয়বহুল। তাই অনেক সময় ১০ এম্বিপিএস কানেকশন থেকে কিছু ডাউনলোড লাগানোর পরেও ৫০০কিলোবাইট প্রতি সেকেন্ড ডাউনলোড হতে দেখা যায়, এটা আপনার কানেকশনের সমস্যা নয়, সার্ভার আপনাকে স্পীড সাপোর্ট দিতে পারছেনা। আর তাছাড়া এতো ফাস্ট ইন্টারনেটের প্রয়োজনও নেই আপনার, যদি আপনারা এক কানেকশন ভাগ করে অনেক মানুষ একত্রে ব্যবহার করেন তবে প্রয়োজনীয় হতে পারে।

#কম্পিউটারের জাদুকর

“ভাই, আমি এক বড় ভাইকে জানি, উনি কম্পিউটারের যেকোনো সমস্যা সমাধান করার এক্সপার্ট, কম্পিউটার মনে হয় সকাল সন্ধায় নাস্তার সাথে খায়”। হাহাহা- আপনিও এমন হতে পারেন!!! বিশ্বাস করছেন না? কারন আমি আপনাকে কিছু টপ সিক্রেট বলতে চলেছি… কাওকে বলবেন না কিন্তু! সত্যি বলতে ৯৯ শতাংশ সময়ে আমাদের কাছে কোন আইডিয়াই থাকে না, আমাদের কম্পিউটারের ঠিক কি সমস্যা হয়েছে। স্ক্রীনে আসা এরর ম্যাসেজ লিখে আমরা গুগল করি এবং অনুসন্ধান করি এই সমস্যা আগে কারো হয়েছিলো কিনা, যদি হয়ে থাকে তবে কোন ওয়েবসাইট বা ফোরামে সহজেই তার সমাধান পেয়ে যাই। তো কম্পিউটার ঠিক করার জাদুকর হওয়া মানে সার্চ ইঞ্জিনে পারদর্শী হওয়া এবং কোন ফোরামে সঠিক প্রশ্ন করার দক্ষতা থাকা। কিছু সময়ে কিছু সমস্যা ঠিক করার জন্য নিজের কম্পিউটার দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হয়, কিন্তু বেশিরভাগ সময় সার্চ ইঞ্জিনই সব সমস্যার সমাধান করে থাকে। তো কম্পিউটারের জাদুকর বলে কিছু নেই। নেক্সট টাইম আপনার কম্পিউটারে সমস্যা হলে জাস্ট এরর ম্যাসেজ লিখে গুগল করুন, আশা করি সমাধান পেয়ে যাবেন এবং আপনি নিজেও হয়ে যাবেন এক্সপার্ট।

#বেশি র‍্যাম = বেশি ফাস্ট পিসি

যতোবেশি র‍্যাম হবে ততোই ভালো হবে! হ্যাঁ, এই কথাটি সত্য। তবে সবসময়ই বেশি থাকা মানেই কিন্তু বেশি উপকারী হয়না। আপনি যদি একজন মধ্যম কম্পিউটিং করা মানুষ হয়ে থাকেন তবে ৮ জিবি র‍্যাম আপনার সকল কাজের জন্য যথেষ্ট হবে। এখন আপনি যদি র‍্যাম হাংরি অ্যাপ্লিকেশন যেমন- অ্যাডোব ফটোশপ, অ্যাডোব প্রিমিয়ার বা ভার্চুয়াল মেশিন ইত্যাদি ব্যবহার করেন তবে অবশ্যই বেশি র‍্যাম থাকা আপনার জন্য আদর্শ। কিন্তু আপনার সিস্টেমে এবং আপনার কাজ অনুসারে যদি বেশি র‍্যামের প্রয়োজনীয়তা না থাকে, এবং আপনি ভেবে রেখেছেন “বেশি র‍্যাম মানেই বেশি ফাস্ট পিসি” তবে এটি আপনার কোন কাজেই আসবে না। আরেকটি কথা মাথায় রাখা প্রয়োজনীয় যে, র‍্যাম স্পীড বা ফ্রিকোয়েন্সির সাথে ততোটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে র‍্যাম লেটেন্সি। র‍্যাম লেটেন্সি নিয়ে খুব দ্রুত একটি পোস্ট পাবলিশ করতে চলেছি। সেখানে বিষয়টিকে আরো পরিষ্কার করে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

#রিফ্রেস, রিফ্রেস, রিফ্রেস

কম্পিউটার অন হওয়ার সাথে সাথে ৫০ বার রিফ্রেস, কাজ করতে করতে ২০০ বার রিফ্রেস, কম্পিউটার অফ করতেও রিফ্রেস। ড্রাগ নেওয়ার মতো আমাদের উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের রিফ্রেস করার আসক্তি রয়েছে। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন এই রিফ্রেস করে কি হয়? “কি বলেন ভাই, পিসি ফাস্ট হয়, এইটা জানেন না, আর্টিকেল লিখতে আসছেন?” ঘণ্টা পিসি ফাস্ট হয়, উল্টা আপনার পিসি স্লো হয়ে যেতে পারে। আপনি জানেন কি, প্রত্যেকবার রিফ্রেস করার সময় আপনার উইন্ডোতে থাকা সকল আইকন এবং ফাইল গুলো রিলোড হয়? এতে কম্পিউটিং পাওয়ার ক্ষয় হয়। মনেকরুন আপনার পিসির একটি ফোল্ডারে ৫০০টি ভিডিও ফাইল রয়েছে, এখন আপনি যখন ফোল্ডারটি ওপেন করবেন তখন ভিডিও ফাইল গুলোর থ্যাম্বনেইল লোড হতে ফোল্ডারটি রেডি হতে একটু সময় লাগবে, এখন আপনি যদি সেখানে রিফ্রেস করে দেন, তো ফাইল গুলোর থ্যাম্বনেইল আবার রিলোড হবে, ফলে উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার স্লো হয়ে পড়বে। ভাই বিশ্বাস করুন, এটা করে কোনই উপকারিতা পাবেন না, তাই রিফ্রেস, রিফ্রেস, রিফ্রেস করা থেকে নিজের হাতকে এবং মাউসকে রক্ষা দিন, আশা করি এই রোগ থেকে বেরিয়ে আসবেন।


তো আজকের পোস্টটি এই পর্যন্তই, আরো কিছু ভুল ধারণা ছিল, যেগুলো এই পোস্টটে উল্লেখ্য করলাম না, আরেকটি পোস্টটে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তবে এই ১০টি ভুল ধারণা গুলোর মধ্যে আপনি কার কার শিকার ছিলেন এতোদিন তা কমেন্টে লিখতে ভুলবেন না। পোস্টটি অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

Images: Shutterstock.com

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories