কেন আমি লিনাক্সে মুভ করেছি? আর হয়তো কখনোই উইন্ডোজে ফেরত যাবো না!

ওহ ইয়া, লিনাক্স বেবি! সুপার কম্পিউটার থেকে শুরু করে হাতের ঘড়ি সব জায়গাতেই লিনাক্স খুঁজে পাওয়া যায়। আর হলফ করে বলতে পারি আপনার হাতের ফোনটিও লিনাক্স দ্বারা পরিচালিত, লিনাক্স সর্বত্র! এখন অনেকে প্রশ্ন করবেন, তাহলে কম্পিউটারে বেশিরভাগ মানুষ উইন্ডোজ কেন ব্যবহার করে? ওয়েল, এই টপিক আলাদা আর্টিকেলের জন্য তুলে রাখলাম আর এখন কথা বলি কেন আমি পার্মানেন্ট ভাবে লিনাক্সে মুভ করেছি, কেন এটা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম থেকে জাস্ট বেটার!

শুরু করার পূর্বে, লিনাক্স সম্পর্কে কিছু বেসিক জ্ঞান থাকা জরুরী, আর এই বেসিক জিনিস গুলো নিয়ে পূর্বেই নানান আর্টিকেলে কভার করেছি জাস্ট চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন যদি আগে থেকে না জানা থাকে। আমি নিচে লিঙ্ক গুলো ধরিয়ে দিলাম;

  • লিনাক্স কি?
  • লিনাক্স ব্যবহার শুরুর পূর্বে এই বিষয় গুলো জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়!
  • লিনাক্স কার্নেল কি এবং এর কাজ কি?

লিনাক্স ফ্রি

লিনাক্সে মুভ করার আমার প্রধান কারণটি হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ ফ্রি! জাস্ট পছন্দের ডিস্ট্রটি ডাউনলোড করে নিন আর ইন্সটল করে নিলেই আপনি ব্যবহার করার জন্য রেডি। আপনাকে কিছুই পারচেজ করতে হবে না বা কোন লাইসেন্স কী প্রবেশ করাতে হবে না। এখন অনেকেই বলবেন, “আমি তো উইন্ডোজ ব্যবহার করি, কিন্তু কই আমি তো কিছুই কিনে ব্যবহার করছিনা!” ওয়েল, ব্রাদার তাহলে আপনি কম্পিউটারের দুনিয়ায় এখনো অনেক কিছুই জানেন না, তবে না জেনেই পাইরেসি করছেন ঠিক মতোই!

অনেক ডিস্ট্রতে তো কাজের সফটওয়্যার গুলোকেও আলাদা ভাবে ইন্সটল করতে হয় না, ওএস ইন্সটল করার সময় কাজের সব সফটওয়্যার যেমন অফিস, ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার, ব্রাউজার, মিডিয়া প্লেয়ার ইত্যাদি সবকিছুই প্রি-ইন্সটলড থাকতে দেখা যায়। আপনার প্রয়োজনীয় সকল ড্রাইভার লিনাক্স নিজে থেকে খুঁজে ডাউনলোড করে নেবে। এখন তো অনেক গ্রাফিক্স কার্ড গুলো লিনাক্স সহজেই সাপোর্ট করতে পারে। মানে কম্পিউটারে লিনাক্স ইন্সটল করলেন আর ব্যবহার করা শুরু দিন, নো ঝামেলা!

লিনাক্স ফ্রি, আর সব চাইতে সিকিউর জিনিস ও বটে। লিনাক্স ওপেন সোর্স সিস্টেমে কাজ করে, দুনিয়ার সকল প্রোগ্রামার আর ডেভেলপাররা একসাথে মিলে লিনাক্সে নতুন ফিচার যুক্ত করেন কোন ত্রুটি থাকলে সেটা ঠিক করেন। লিনাক্সের এমন নেচার হওয়াতে এটা ফ্রিতেই প্রদান করা সম্ভব হয়। তাছাড়া বড় বড় কোম্পানি যেমন- মাইক্রোসফট, গুগল, আইবিএম, ইন্টেল ইত্যাদি লিনাক্স ফাউন্ডেশনের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে।

লিনাক্স মানেই স্বাধীনতা

লিনাক্স শুধুই ফ্রি নয় বরং এটা ফ্রিও! মানে শুধুই যে বিনামূল্যে ব্যবহার করার সুবিধা পাচ্ছেন সেটা নয় সাথে রয়েছে যা ইচ্ছা তা করার ক্ষমতা। আপনি যেকোনো কিছু ইন্সটল করতে পারবেন, ওএস থেকে যেকোনো কিছু বাদ দিতে পারবেন। তার জাস্ট সাধারণ কম্যান্ড লাইন প্রবেশ করিয়ে। আর কম্যান্ড লাইন গুলো মনে রাখতেও হবে না, জাস্ট গুগল করলেই এনিটাইম খুঁজে পেতে পারবেন।

৬ মাস রেগুলার লিনাক্স ব্যবহার করার পরেও আমাকে এক লাইনেরও কম্যান্ড মনে রাখতে হয় নি। অথচ এই কম্যান্ড লাইন নিয়ে ভয় করে অনেকেই লিনাক্স ব্যবহার করতে সাহস করতে পারেন না। আর হ্যাঁ, লিনাক্সে সফটওয়্যার ইন্সটল? আহ… পুরাই মাখন… !!!

উইন্ডোজ ইউজাররা যেখানে সঠিক পিসির মডেলের জন্য সঠিক সফটওয়্যার ডাউনলোড লিঙ্ক খুঁজে বেরাতে ব্যাস্ত, সেখানে আমি জাস্ট টার্মিনাল থেকে apt-get কম্যান্ড ব্যবহার করে এক লাইনেই যেকোনো সফটওয়্যার ইন্সটল করে ফেলতে পারি। আমাকে কোন লিঙ্ক খুঁজতে হয়না, কোন ওয়েবসাইট যেতে হয় না, কোন সফটওয়্যার প্যাকেজ ডাউনলোড করতে হয় না, কোন সেটআপ উইজার্ড এ নেক্সট নেক্সট চাপতে হয় না। লিনাক্সে সফটওয়্যার ম্যানেজার যেকোনো সফটওয়্যার আপনার হয়ে ডাউনলোড করে সিস্টেমে ইন্সটল করিয়ে দেবে।

তবে হ্যাঁ, আপনি যদি পিসিতে ইন্টারনেট ব্যবহার না করেন (তবে এমন কে আছে যিনি ২০২০ তে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না?) সেক্ষেত্রে লিনাক্সে সফটওয়্যার ইন্সটল করা আরেক প্যারার নাম হতে পারে।

লিনাক্সের বেশির ভাগ ডিস্ট্রতে গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেসের সফটওয়্যার ম্যানেজার রয়েছে যেটা আপনার ফোনের প্লে স্টোর বা আইফোনের অ্যাপ স্টোরের মতো। হ্যাঁ, লিনাক্সে অ্যান্ড্রয়েড প্লে স্টোর বা অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের চাইতে কয়েক যুগ আগে থেকেই অ্যাপ স্টোর রয়েছে, যেটা অনেকেই জানেন না! সেখানে সফটওয়্যার ইন্সটল করা বা আনইন্সটল করা পানির মতো সহজ, জাস্ট আপানর ফোনের মতোই কাজ করে।

তবে আমি কম্যান্ড লাইন ব্যবহার করে লিনাক্সে সফটওয়্যার ইন্সটল করতে বেশি অভ্যস্ত, এটা বেশি সহজ আর দেখতেও কুল মনে হয় আমার কাছে। আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে জাস্ট ১ ক্লিক করে লিনাক্সের সকল ইন্সটল থাকা সফটওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করে ফেলতে পারবেন। আপনি যখন ইচ্ছা সেগুলোকে আপডেট করতে পারবেন বা চাইলে কোন আপডেট ছাড়ায় ব্যবহার করতে পারবেন!

উইন্ডোজের মতো আপনাকে আপডেট করতেই হবে বা কাজের মধ্যে পিসি রিস্টার্ট করতে বলবে এমন ঝামেলা নেই লিনাক্সে। তাছাড়া এতে লাইভ কার্নেল ফিচার রয়েছে মানে পিসি রান থাকা অবস্থায় এটি আপডেটেড হয়ে পারবে। তবে সবসময় এমনটা হয় না, অনেক সময় পিসি রিস্টার্ট করারও প্রয়োজন পরে।

পারফর্মেন্স

লিনাক্সের এতক্ষণ যতো গুণগান গাইলাম সবই ঠিক আছে, কিন্তু লিনাক্সে মুভ হওয়ার আসল কারণটি হচ্ছে এর পারফর্মেন্স। আমি ব্লগিং এত জন্য একটি পুরাতন ল্যাপটপ ব্যবহার করি, যেহেতু ল্যাপটপটি একবারও সমস্যা করেনি আর আমার দৈনন্দিন কাজ এতে ভালভাবেই করা যায় সেহেতু আমি ল্যাপটপটি আপগ্রেড করেনি বেশ কয়েক বছর থেকে!

আমি এর পূর্বে উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করে আসছিলাম প্রায় ২০১৫ সাল থেকে, প্রথমে ভালোভাবেই উইন্ডোজ ১০ হ্যান্ডেল হলেও ২০১৭ থেকে পিসি ল্যাগ করে শুরু করে। তখন একবার উবুন্টু ট্রায় করেছিলাম, কিন্তু আমার কাছে তেমন একটা মজা লাগেনি, হতে পারে আমার জানার বেশ কমতি ছিল, বা আমি আসল মজা কোনদিন এক্সপেরিয়েন্সই করতে পারিনি।

যাইহোক, ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরের দিকে লেটেস্ট উবুন্টু ইন্সটল করি ল্যাপটপে, আর আমার মনেই হয় না আমি কোন পুরাতন ডিভাইজ ব্যবহার করছি। লিনাক্সের র‍্যাম ম্যানেজমেন্ট এতোটা ভালো যে কি বলবো! হ্যাঁ পুরাতন ল্যাপটপ থেকে খুব বেশি মাল্টি টাস্কিং আশা করা যায় না, কিন্তু হঠাৎ করেই যেন আমার পুরাতন মেশিন আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

তো এতো গেলো আমার নিজস্ব গল্প, যখন কথা আসবে লিনাক্স আর পারফর্মেন্স নিয়ে, এখানে অনেক গল্প করার মতো গল্প রয়েছে। যেমন আপানর মারাত্মক পুরাতন মানে মিশরের পিরামিডের আমলের ল্যাপটপ থাকলে সেটার জন্যও লিনাক্স ডিস্ট্র রয়েছে। এমনকি ১৬ মেগাবাইট র‍্যামের সিস্টেমের জন্যও গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস সহকারে লিনাক্স ওএস খুঁজে পাবেন। ব্যাপারটা কুল নয় কি?

লিনাক্সকে সুপার কম্পিউটারে রান করাতে পারবেন সকল সুপার কম্পিউটিং টাস্ক করানোর জন্য, আবার লিনাক্সকে ছোট করে ক্যালকুলেটরের মধ্যেও ভরে দিতে পারবেন জাস্ট স্পেসিফিক যোগ বিয়োগের মতো কাল্কুলেশন করানোর জন্য। শুধু এতেই শেষ নয়, লিনাক্স আপনাকে সম্পূর্ণ ডেক্সটপ এক্সপেরিয়েন্স দিতে সম্ভব তাও আবার কয়েক হাজার টাকার ডিভাইজ রাসবেরি পাইয়ের মাধ্যমে!

লিনাক্স আসলেই একটা স্ট্যাবল জিনিস

উইন্ডোজ ইউজাররা যেখানে ব্লু স্ক্রীন অফ ডেথ নিয়ে চুল ছিঁড়ে ফেলা অবস্থায় থাকেন, সেখানে লিনাক্স ইউজাররা সামান্য অ্যাপ ক্র্যাশ প্রবলেম ও ফেস করেন না। যদিও আমার ব্লু স্ক্রীন অফ ডেথ সমস্যা তেমন একটা হতো না, কিন্তু আমি জানি অনেকেরই এই সমস্যা হয়। তারা কাজ করতে করতে হঠাৎ করে ড্রাইভার ফেইল হয়ে যাওয়া, সফটওয়্যার ক্র্যাশ করা বিশেষ করে উইন্ডোজ ফাইল ম্যানেজার তো একটু হলেই হঠাৎ করে ডেক্সটপ কালো করে উধাও হয়ে যায়। এমন সমস্যা লিনাক্সে একেবারেই নেই বললেই চলে!

লিনাক্স এমন একটি জিনিস যেটার উপরে ভরসা রাখতে পারবেন। দুনিয়ার বেশিরভাগ সার্ভার লিনাক্সে চলে, সার্ভার গুলো দিনে ২৪ ঘণ্টা, মাসে ৩০ দিন, বছরে ৩৬৫ দিন চালু থাকে। সেক্ষেত্রে সফটওয়্যার ক্র্যাশ করলে তো বিজনেস নাই হয়ে যাবে তাই না? এই জন্য লিনাক্সকে মোস্ট পসিবল স্ট্যাবল রূপে তৈরি করা হয়েছে।

অনেক হার্ডওয়্যার ড্রাইভারে বাগ খুঁজে পাওয়া যায় যেটার জন্য সিস্টেম আন-স্ট্যাবল হতে পারে। কিন্তু উইন্ডোজ ইউজাদের মতো লিনাক্স ইউজাদের কোম্পানির বাগ ফিক্সের আশায় বসে থাকতে হয়না। যেহেতু ড্রাইভার গুলো ওপেন সোর্স হয়ে থাকে তাই বেশি চান্স থাকে কমিউনিটি থেকে কেউ সফটওয়্যারটি খুঁড়ে বাগ বের করেন আর ফিক্স করে দেন। তবে প্রপ্রাইটরি ড্রাইভারের ক্ষেত্রে গল্পটা একটু আলাদা।

লিনাক্স ওপেন সোর্স

হ্যাঁ লিনাক্স ওপেন সোর্স আর এতে সব চাইতে বড় সুবিধাটি হচ্ছে সিকিউরিটি, প্রাইভেসি, এবং ট্রান্সপারেন্সি অনেক বেড়ে যায়। আপনি যদি যথেষ্ট টেক নার্ড হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে লিনাক্সের কোড থেকে সম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেমটিকেই পড়ে ফেলতে পারবেন। কোন সফটওয়্যার কি কি পারমিশন নিয়ে রেখেছে আপনার কোন কোন ডাটার সাথে খেলছে আপনি সবকিছুই খুঁজে পেয়ে যাবেন।

উইন্ডোজ এর মতো এতে ক্লোজ জিনিস খুবই কম, তাই প্রাইভেসি অনেক বেশি আর ভাইরাসের সংখ্যা নেই বললেই চলে। ওয়েল, আপনি হয়তো বিশাল কোন গীক নয় কিন্তু অবশ্যই কেউ না কেউ তো গীক, রাইট? আপনি সিম্পল গুগল করেই অনেক কিছু জানতে পেরে যাবেন যে সফটওয়্যারটি কতোটা নিরাপদ বা আপনার কোন কোন ডাটা এক্সেস করছে। মজাটা কিন্তু এখানেই, আপনার সফটওয়্যারের উপরে লাখো মানুষের চোখ থাকে। তো সহজেই কেউ ম্যালিসিয়াস কোড লুকিয়ে আপনাকে ধোঁকা দিতে পারবে না।

কাস্টমাইজেশন

লিনাক্সে আমার সবচাইতে পছন্দের পার্টটি হচ্ছে কাস্টমাইজেশন! ওহ… আই লাভ দিস… !!! অ্যান্ড্রয়েড এই ঠিক একটা কারণেই এতো ভালো লাগে, আমার যেমন ইচ্ছা তেমন লুক দিতে পারবো, আর লিনাক্স ডিস্ট্র গুলোও এর একেবারেই ব্যাতিক্রম নয়। এর সবকিছুই মডিউলার, আপনি যেখানে ইচ্ছা যেমন করে ইচ্ছা সবকিছু কাস্টমাইজেশন করে ফেলতে পারবেন। আপনার লিনাক্স মেশিনকে ম্যাকবুকের লুক দিতে পারবেন আবার উইন্ডোজ ১০ এর লুকও দিতে পারবেন, ভার্চুয়ালি যেকোনো রূপ দেওয়া সম্ভব লিনাক্সের সাথে!

শুধু থিম বা আইকন প্যাক নয়, লিনাক্সে আপনি সম্পূর্ণ ডেক্সটপ এনভায়ারন্মেন্টই পরিবর্তন করতে পারবেন। একেক ডেক্সটপ সফটওয়্যারের লুক অ্যান্ড ফিল একেক রকমের হয়ে থাকে। তো উইন্ডোজ এর মতো এক ইন্টারফেস নিয়ে সারাজীবন বসে থাকার কোনই মানে হয় না।

লিনাক্সের আরেকটি মজা হচ্ছে ভার্চুয়াল ডেক্সটপ ফিচার, হ্যাঁ ম্যাক এবং উইন্ডোজ এও এই সুবিধা রয়েছে। কিন্তু লিনাক্সের জন্মের পর থেকেই প্রায় ভার্চুয়াল ডেক্সটপ সুবিধা রয়েছে যেটা ম্যাক আর উইন্ডোজ এ এইতো কাল অ্যাড করা হয়েছে।

এদিকে নোম এবং কেডিই ব্যবহার করে ডেক্সটপের নানান ইলিমেন্ট পরিবর্তন সহ ক্যাস্টম ইউআই তৈরি করতে পারবেন! উইন্ডোজ এর সাথে ভাবতে পারেন এগুলো?

আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, আপনি গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস সম্পূর্ণ বাদ দিয়েই লিনাক্স ব্যবহার করতে পারবেন। লিনাক্স কে মূলত সার্ভারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় যেখানে গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস থাকে না। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম গুলোকে শুধু টার্মিনাল থেকেই সম্পূর্ণ রূপে ব্রাউজ করা যায়। টার্মিনাল থেকেই প্রত্যেকটা সিস্টেম সেটিংস এর কানায় কানায় পৌঁছানো সম্ভব হয়ে থাকে।

শুধু ভিজুয়াল কাস্টমাইজেশন নয় রে পাগলা, আপনি এক ডিস্ট্রর ফিচার আরেক ডিস্ট্রতে অ্যাড করতে পারবেন। উইন্ডোজ ইউজাররা যেটা কল্পনা ও করতে পারেন না। আহ… যদি উইন্ডোজ এর মিসিং ফিচার গুলো উইন্ডোজ ১০ এ যুক্ত করা যেতো!!! বাট লিনাক্সে সবই সম্ভব।

আরে লিনাক্স তো পকেটে করেও নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়

লিনাক্সের যেকোনো ডিস্ট্রর লাইভ ভার্সন ইউএসবি ড্রাইভে করে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়। মানে যেকোনো পিসির হার্ডওয়্যার টেস্ট করার জন্য আপনাকে সেখানে ফুল্লি কোন ওএস ইন্সটলও করতে হবে না। এটা পোর্টেবল! জাস্ট লাইভ ইউএসবি মেক করে নিলেই হলো।

লাইভ ইউএসবি থেকে আপনি ইন্সটল না করেই সম্পূর্ণ লিনাক্স ওএসটি ব্রাউজ করতে পারবেন যেটা ফুল ফাংশনাল ওএস এর মতো কাজ করবে। ইন্টারনেট প্রাইভেসির জন্য এটা কিন্তু এক মারাত্মক সুবিধা। যেখানে নানান ওয়েবসাইট আপনাকে সহজেই ট্রাক করতে পারে সেখানে লাইভ অপারেটিং সিস্টেম রান করলেন, ইন্টারনেট কানেক্ট করলেন, ব্যবহার শেষে ইউএসবি খুলে ফেললেন, ব্যাস সব কাহিনী খতম। কোন ফাইল জমা থাকবে না, তাই কম্পিউটার ট্র্যাকিং ও সম্ভব হবে না!

কমিউনিটি

লিনাক্সের আরেকটি অসাধারণ ব্যাপার হচ্ছে এর সুপার সাইজের বিগ কমিউনিটি! আমার এই পর্যন্ত লিনাক্স জনিত যতো সমস্যা হয়েছে আমি জাস্ট সিমপ্লি গুগল করেছি আর সেই সমস্যা আগে থেকেই কারো না কারো হয়েছিল যেটা কমিউনিটি থেকে আগেই ফিক্স করে দেওয়া হয়েছে! বিশেষ করে আপনি যদি উবুন্টু নির্ভর ডিস্ট্র ব্যবহার করে থাকেন তো কোন কথায় হবে না, সমস্যা হতে দেরি কিন্তু সমাধান পেতে নয়!


তো এই ছিল লিনাক্সের প্রেমে পরার কিছু প্রেম কাহিনী, আর এখন ভালোবাসায় এতোটায় মাখামাখি যে আমাকে আর কেউই আলাদা করতে পারবে না, খোদ ম্যাকও না! ছয় মাস টানা লিনাক্স ব্যবহার করে এক মহান ব্যাক্তি একটি উক্তি লিখেছিলেন;

লিনাক্সের দুইটাই লিমিটেশন, এক আপনার কল্পনা শক্তি, আর আরেকটি হচ্ছে আপনার টেকনিক্যাল নলেজ!

আর হ্যাঁ, সেই মহান ব্যাক্তিটি নিশ্চয় আমি

Feature Image: Shutterstock.com

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories