বন্ধুরা কেমন হতো যদি আপনার যেকোনো স্মার্টফোনে ফোর্স টাচ করা যেতো তো? আপনারা সকলে হয়তো অ্যাপেল ৩ডি টাচ সম্পর্কে শুনেছেন—তাছাড়া এ প্রযুক্তি নিয়ে আমার বর্ণিত একটি পোস্টও রয়েছে। দেখুন অ্যাপেল থ্রীডি টাচ প্রযুক্তি কাজ করার জন্য আপনার ফোনে প্রয়োজন পড়ে কিছু নির্দিষ্ট হার্ডওয়্যার থাকার। কিন্তু আমি যদি আপনাকে বলি যে, আপনার ফোনে বর্তমান মজুদ থাকা হার্ডওয়্যার থেকেই “ফোর্স টাচ” প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন, তো কেমন হবে? হ্যাঁ বন্ধুরা, আমি আপনাদের সাথে আজ এমন এক প্রযুক্তির পরিচয় করিয়ে দিতে চলেছি যার মাধ্যমে যেকোনো স্মার্টফোনে ব্যবহার করা যাবে “ফোর্স টাচ”। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করে।
ফোর্স টাচ করুন ফোনের মাইক আর স্পীকার ব্যবহার করে
আপনারা হয়তো প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যাপস দেখেছেন যারা এটা দাবি করে যে, আপনার ফোনে ফোর্স টাচ প্রযুক্তি অ্যানাবল করে দেবে। কিন্তু আসলে সেগুলো ব্যাস লং প্রেস ব্যবহার করেই কাজ করে, আর শুধু বলার কথা বলে কিন্তু কাজের বেলায় ঘণ্টা। কিন্তু এখন আমি যে প্রযুক্তি সম্পর্কে কথা বলবো তা একদম আসল এবং এর সাহায্যে সত্যিই ফোনে “ফোর্স টাচ” প্রযুক্তি অ্যানাবল করা সম্ভব হবে। কেনোনা এই নতুন প্রযুক্তির কাজ করার জন্য প্রয়োজন পড়বে শুধু আপনার ফোনের মাইক এবং স্পীকার (যা প্রত্যেকটি স্মার্টফোনেই থাকে)।
বন্ধুরা এই গবেষণাটি করেছেন মিশিগান ইউনিভার্সিটির পিএইচডির এক ছাত্র যার নাম “ইও-চি তং“। এবং তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে কীভাবে আপনার ফোনের মাইক আর স্পীকারের সাহায্যে ফোর্স টাচের ব্যবহার করা যায়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু স্ক্রীনে টাচ করেই নয়—বরং ফোনের বডিতে চাপ প্রয়োগ করেও কম্যান্ড দেওয়া সম্ভব। মজার প্রযুক্তি না? নিঃসন্দেহে!! তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক যে, এই প্রযুক্তি কাজ করে কীভাবে?
এই প্রযুক্তি কাজ করার জন্য আপনার ফোনের স্পীকার সর্বদা ১৮ কিলোহার্জের একটি শব্দ তরঙ্গ সৃষ্টি করে এবং আপনার ফোনের অবস্থিত মাইক্রোফোন সেই শব্দ গ্রহন করতে থাকে। এই শব্দ এতো উচ্চ তরঙ্গের হয়ে থাকে যে, মানুষ কখনোয় তা শুনতে পারবেনা কিন্তু আপনার ফোনের মাইক সেই শব্দটিকে লাগাতার শুনতে থাকে। এখন যদি আপনার ফোনের স্ক্রীনে একটু চেপে টাচ করেন বা ফোনের বডিতে যদি চেপে ধরেন একটু শক্তি প্রয়োগ করে তবে সেই শব্দ তরঙ্গে কিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে। কেনোনা আপনার হার্ড প্রেস করার ফলে সেখান থেকেও কিছু শব্দ উৎপন্ন হবে এবং সেই শব্দ মিক্স হয়ে মাইকে প্রবেশ করবে এবং এই পরিবর্তিত শব্দের ফলে এক বিশেষ সফটওয়্যার বুঝে ফেলবে যে আপনি কত জোরে ফোনের স্ক্রীন বা বডিতে চাপ প্রয়োগ করলেন।
আপনার এই প্রক্রিয়া শুনে মনে হতে পারে যে, “আরে এতো অনেক ঝামেলার প্রযুক্তি, ঠিক মতো কাজ করবে তো?”। তবে চিন্তার কোন কারন নেই, কেনোনা ভিডিওতে দেখুন কীভাবে বিভিন্ন প্রকারের ফোনে ফোর্স টাচ করে দেখানো হচ্ছে। এই প্রযুক্তি একদম ঠিকঠাক কাজ করছে—এমনকি অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাধিক টাচ লেভেল ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাপেল ৩ডি টাচে শুধু তিনটি টাচ লেভেল কাজ করে। অর্থাৎ নরমাল টাচে এক কম্যান্ড দেওয়া যায়, আরেকটু জোরে টাচ করে আরেক কম্যান্ড দেওয়া যায় এবং বেশি জোরে টাচ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন আরেক কম্যান্ড দেওয়া যায়। কিন্তু এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরো অনেক টাচ লেভেলে কম্যান্ড দেওয়া সম্ভব হতে পারে। কেনোনা যেহেতু এই প্রযুক্তি শব্দ তরঙ্গের উপর কাজ করে, তাই আপনি যতো আলাদা ভাবে টাচ করবেন ততো আলাদা শব্দ পার্থক্য দেখতে পাওয়া যাবে।
আপনার ফোনে কীভাবে ফোর্স টাচ প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন?
এই সম্পূর্ণ প্রযুক্তিটি কাজ করে আপনার ফোনের মাইক এবং স্পীকার ব্যবহার করে এবং একটি স্পেশাল অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে। ভিডিও তে তারা একটি অ্যাপ দেখিয়েছেন কিন্তু বর্তমানে কোন অ্যাপ মার্কেটে এই অ্যাপটি প্রাপ্য নয়। বন্ধুরা হতে পারে এদের টার্গেট অনেক বড় এবং হতে পারে এরা কোন নির্দিষ্ট কোম্পানির কাছে এই প্রযুক্তি বিক্রি করবেন। আবার এটাও হতে পারে যে এই প্রযুক্তি একদম নিখুঁত করার পরে তারা একে বাজারে নিয়ে আসবেন।
কিন্তু বন্ধুরা এই অ্যাপ বাজারে আসলে সত্যিই অনেক কিছু পরিবর্তন হতে চলেছে। হতে পারে আপনি আপনার ফোনের স্ক্রীনে বিভিন্ন প্রেসারে টাচ করে আলাদা আলাদা কাজ করতে পারবেন অথবা ফোনের বডিতে চাপ দিয়ে কোন অপশন রান করাতে পারবেন ইত্যাদি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কি কি করা যেতে পারে এর সম্ভবনার কিন্তু শেষ নেই। হতে পারে এই প্রযুক্তি বাজারে আসার পরে তৃতীয়পক্ষ অ্যাপ ডেভেলপার রাও তাদের অ্যাপে বিভিন্ন টাচ লেভেল ব্যবহার করার সুবিধা প্রদান করবেন। অ্যাপেল ৩ডি টাচ সম্পর্কে তো জানেনই কিন্তু সবচাইতে মজার বিষয় হবে আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও কোন আলাদা ডিভাইজ না লাগিয়েই শুধু একটি অ্যাপ ইন্সটল করার মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন ফোর্স টাচ প্রযুক্তি।
আরো কিছু পোস্ট
- পিপিআই কি? | PPI | পিক্সেলস পার ইঞ্চি | বিস্তারিত
- টাচস্ক্রীন প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ডিসপ্লে প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন – আইপিএস, এমোলেড, রেটিনা
শেষ কথা
আমার কাছে কিন্তু প্রযুক্তিটি বেশ চমৎকার লেগেছে। কিন্তু পাশাপাশি মনে হয়েছে এই অ্যাপ ব্যাবহারের ফলে ফোনের ব্যাটারি একটু বেশি ক্ষয় হতে পারে। কেনোনা ফোনের স্পীকার লাগাতার শব্দ তৈরি করতে থাকবে এবং ফোনের মাইক তা গ্রহন করতে থাকবে। তবে অল্প একটু ব্যাটারি লাইফের বদলে আনলক হয়ে যাবে বিশেষ এক ফিচার!! এই প্রযুক্তি সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে নিচে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আর শেয়ার করে সকলকে জানিয়ে দিন এই প্রযুক্তি সম্পর্কে।
WiREBD এখন ইউটিউবে, নিয়মিত টেক/বিজ্ঞান/লাইফ স্টাইল বিষয়ক ভিডিও গুলো পেতে WiREBD ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুণ! জাস্ট, youtube.com/wirebd — এই লিংকে চলে যান এবং সাবস্ক্রাইব বাটনটি হিট করুণ!
Image Credit— University of Michigan
ভাই আমার এই অ্যাপসটা লাগবে… মাস্ট লাগবে… রিলিজ হওয়ার সাথেসাতে আমারে জানাবেন। বাই ডা অয়ে… নাইস পোস্ট “)
University of Michigan সাইট চেক করতে পারেন, ধন্যবাদ 🙂
সেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
😀
9ic share
ধন্যবাদ 🙂
হমম।। বুঝলাম।। ভাই রোবট নিয়ে একটি বিস্তারিত পোস্ট চেয়েছিলাম প্লিজ করেন ভাই
একটু সময় দিন, পোস্ট পেয়ে যাবেন, ধন্যবাদ 😀
Bah! khub bhalo hobe bhai! Post er jonno fresh golap………………………
😀
চমৎকার
তাহলে ত অ্যাপেল কেনার আর দরকার নাই 😛
😛
Engeneer ta sottie Brilliant!!!
মজার ব্যাপার ত?/
NICE
very good news. tnks 4 share..
khubv valo
Khub vlo post .apne khub vlo post koran . Ai rokom gorotto porno post khoboy projon amadar jonno. Aunak o jana bisoy janta pare .
THANK YOU.
স্বাগতম 🙂
খুব ভাল পোস্ট